Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাষা শহীদ ভাষা সৈনিক লও সালাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

‘আমি জন্মেছি বাংলায়/আমি বাংলায় কথা বলি/আমি বাংলার আলপথ দিয়ে হাজার বছর চলি’ কবি সৈয়দ শামসুল হক তাঁর কবিতায় লিখেছিলেন এই পঙ্ক্তিমালা। কবির এই বাংলা প্রীতি ও বাংলা বর্ণমালা এসেছে বায়ান্নর একুশের পথ থরে। ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে ধর্মের ভিত্তিতে নতুন দেশ গঠিত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অঞ্চল নিয়ে ভারত। আর মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের দুটি অংশ একটি ভারতের পশ্চিমে পশ্চিম পাকিস্তান। আর অন্যটি পূর্ব বাংলা অঞ্চলকে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান। বাস্তবে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে এক মাত্র ধর্ম ছাড়া আর কোন ক্ষেত্রেই মিল ছিলো না পূর্ব বাংলার মানুষের। দুটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি ছিলো সর্ম্পূণ পৃথক। অতীত ইতিহাস বলে ইতিহাস আর সংস্কৃতির পার্থক্যে কখনও জাতিগোষ্ঠী একত্রিত থাকতে পারে না। হয়েছেও তাই। যুগল পথ চলার শুরুতেই বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুই অঞ্চলের সংস্কৃতি। পাকিস্তানী শাসক শ্রেণি এই সংস্কৃতিতে প্রথম আঘাত হানে। রাষ্ট্রের ভাষা হিসেবে বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে প্রতিষ্ঠার দূরভিসন্ধি নিয়ে এগোতে থাকে। কিন্তু মায়ের ভাষা বাংলা ভুলে নতুন ভাষা শেখার কথা চিন্তাও করতে পারেনি বাঙালি জাতি। তাদের উপলব্ধি হয়, শুধু ভাষার প্রতি নয় এ আঘাত বাঙালি সংস্কৃতির ওপর। প্রতিবাদে তাই ফেটে পড়ে তারা। বিশেষ করে ছাত্ররা বাংলার মর্যাদা রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য প্রস্তুত হয়। এর পরও দারুণ স্পর্ধা দেখিয়ে চলে গোঁয়ার পাকিস্তানীরা। ১৯৫২ সালের আজকের দিনে আবারও উর্দু নিয়ে খায়েশের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন। ১০ দিন ধরে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থান সফর করে ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গভর্নমেন্ট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও অখন্ডতার স্বার্থে একটিমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। শুধু তাই নয়, এদিন তিনি বেশ কঠোর ছিলেন। তার বক্তব্যটি ছিল আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হতে চলেছে, অন্য কোন ভাষা নয়। তবে এটা যথাসময়ে হবে। তিনি বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নাকচ করেন দেন।
অথচ নয়া রাষ্ট্র পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা। ১৯৫১ সালের আদমশুমারিতে দেখা যায় পাকিস্তানের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে বাঙালি ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ, পাঞ্জাবী ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ, উর্দুভাষী ৭ দশমিক দুই শতাংশ। তবুও বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দেয়ার বিরুদ্ধে অনঢ় অবস্থান ছিল পাকিস্তানী শাসক শ্রেণির। পাকিস্তানীদের এমন নীতি বিবর্জিত সিদ্ধান্ত কোনভাবে মেনে নিতে পারেনি বাঙালিরা। তাই প্রতিবাদে, প্রতিরোধে গর্জে ওঠেন। নির্যাতন নিপীড়ন ডিঙ্গিয়ে বুকের তাজা রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করে মাকে মা বলে ডাকার অধিকার। যে সকল মহান বীরের দুঃসাহসিক সংগ্রাম ও রক্তের বিনিমিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার জাতি পেয়েছে তাদের বিভিন্ন সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এই মাসে স্মরণ করে জাতি।



 

Show all comments
  • jack ali ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:১৬ পিএম says : 0
    Each and every Bangladeshi must make dua for the Martyrs those who died by safe guard our beloved mother tongue--after 5 prayers-
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাষা শহীদ

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ