Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানী ছিল আইন-শৃংখলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে

প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রতিবাদে দলটির ডাকা হরতালের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসব সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সকাল ৯টা থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পরে সকাল ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রায় কার্যকরের পর পাকিস্তানের যে প্রতিক্রিয়া তার মাধ্যমেই নিজামীর ফাঁসি এবং বিচারের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীকে নিজামী সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, জামায়াত একটি সন্ত্রাসী দল, যুদ্ধাপরাধী দল। আর তাই যথাসময়েই আমরা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করব। আর এটি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই করা হবে।
এ দিকে হরতালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ। মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে সহস-ভাপতি এনামুল হক আরমানের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: হারুনুর রশীদ, যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদ মহি, কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুল ইসলাম হাওলাদার, দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার ইকবাল সান্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন, জামায়াতের ডাকা হরতাল বাংলার মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ দেশের মানুষ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন দেখতে চায়, কোনো নৈরাজ্য এবং দেশবিরোধী কর্মকাÐ দেখতে চায় না।
এদিকে জামায়াতের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ থানা, পাড়া ও মহল্লায় অবস্থান গ্রহণ করে। মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি বায়েজিদ আহমেদ খান এসব অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন এবং বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও হরতালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। গতকাল ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টিএসসিতে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহাজাদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
রাজধানী ছিল আইন শৃংখলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে
হরতালে রাজধানী ছিল র‌্যাব-পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হরতালে নাশকতা রোধে সতর্ক অবস্থানে তারা দায়িত্ব পালন করেছেন। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় বা এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করে এ নিরাপত্তা দেয়া হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সাঁজোয়াযান ও পানিকামান প্রস্তুত ছিল। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করে পুলিশ।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মতিঝিল, গুলিস্তান, নয়াবাজার, খিলগাঁও, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল, মগবাজার, প্রেসক্লাব, মালিবাগ, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, পল্টন, দৈনিক বাংলাসহ অধিকাংশ মোড়ে প্রচুর পুলিশ সদস্য অবস্থান করেন। পল্টন ও এর আশপাশে বেশি সংখ্যক পুলিশ দেখা গেছে। এর সঙ্গে সারিবদ্ধভাবে র‌্যাবের সদস্যরাও রয়েছে।
পল্টন মোড়ে দায়িত্বরত এএসআই খোরশেদ আলম জানান, এলাকাভিত্তিক থানা পুলিশ সকাল থেকেই অলিগলিতে টহল দিচ্ছে। তিনি বলেন, যে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে তা ভেদ করে কিছুই করা সম্ভব নয়। এসব এলাকার রাস্তায় অন্যদিনের মতোই যানবাহন চলাচল করছে।
সোনারগাঁও লেভেল ক্রসিংয়ে কনস্টেবল হেকমত আলী বলেন, খুব ভোরে এসেছি। রাত ১০টা পর্যন্ত হরতালের ডিউটি করতে হবে। এই এলাকায় হরতালের সমর্থনে কোনো ধরনের মিছিল বা পিকেটিং হয়নি।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় যাদুঘর, সচিবালয়, আদালত, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ কূটনীতিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজধানী ছিল আইন-শৃংখলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ