পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারাবন্দি, অমানবিক আচরণ, জামিন বিলম্বিত করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রেখেও সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে কোনভাবেই টলাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল (শনিবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার সাথে শুক্রবার তাঁর আত্মীয়স্বজনরা দেখা করতে গিয়েছিলেন। কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার বাস করার জায়গাটির কোন পরিবর্তন হয়নি। অস্বাস্থ্যকর, স্যাঁতসেতে ও ধুলাবালিতে আকীর্ণ কক্ষটিতে তাঁকে বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। বারবার এ বিষয়ে কারাকর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তারা ভ্রুক্ষেপহীন থেকেছে। বেগম জিয়ার সাথে যে আচরণ করা হচ্ছে সেটি অমানবিক ও দু:খজনক।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›িদ্বকে পর্যুদস্ত করতে দমনের নীতি অবলম্বনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব শক্তি প্রয়োগ করে লাল দেয়ালের মধ্যে মুক্তিহীন অন্তরীণ করে রেখেছেন। বেগম জিয়ার জামিনকে বিলম্বিত করা হচ্ছে নানা কায়দা-কৌশল করে। সরকারের উদ্দেশ্য- তাঁকে বন্দী করে একের পর এক শূন্য জনপদে ভোটারবিহীন নির্বাচন করা। তবুও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অবিচল বেগম জিয়াকে কোনভাবেই টলাতে পারেনি সরকার।
বিএনপি নেতা বলেন, দেশনেত্রী মুক্ত থাকলে আওয়ামী সরকার কোনভাবেই ভোটের আগের দিন ‘নিশীথ রাতের ভোট’ করতে পারতেন না। তাঁর অসুস্থতার কথা বিবেচনা না করে তাঁকে ঘনঘন আদালতে হাজির হতে বাধ্য করা হচ্ছে। আদালতে অপরিসর এবং বসার অনুপযোগী এমন একটি পরিবেশে তাঁকে নিয়ে আসা হয়। বারবার বেগম জিয়া এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। এটাও ধারাবাহিক জুলুমের একটি অংশ। তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার প্রতি সরকারের এধরণের আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে যারা তাঁকে ভোট দিয়েছেন এবং যারা দেননি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দেশের আসল মালিক জনগণের প্রকৃত ভোট দেয়ার অধিকার ও সাংবিধানিক দাবিকে উপহাস করার নতুন মাত্রা যোগ করলেন ২৯ ডিসেম্বর রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৩ সফলতায় বিজয়ী হয়েছে এবং বিএনপি’র ৭টি ব্যর্থতায় পরাজয় হয়েছে। ভোটের আগের দিন রাতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে এখন তিনি জ্ঞানতাপস সেজে সফলতা-বিফলতার পরিসংখ্যান দিচ্ছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী ভোট ডাকাতিতে জড়িত নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলেননি-আসলে এটিই হচ্ছে তাঁর প্রকৃত ধন্যবাদ।
৩০ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিজয়ী হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আসলে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জনগণের সাথে নিচু মানের সেন্স অব হিউমার। কয়েক মাস ধরে চালানো মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িকের সাথে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে নানাবিধ দমন-পীড়ণ ও নিপীড়ণের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী-এজেন্সি ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে চারিদিকে রক্তপাত ও হত্যার মর্মরিত পদ শব্দে ভোটের যে নজীর স্থাপন করেছেন সে কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর। আইনের তোয়াক্কা না করে সন্ত্রাসী কায়দায় ভোট নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা হয়েছে। নির্বাচনের পূর্বাপর অগুনতি সহিংস সন্ত্রাসের প্রতাপে এখনও জনজীবন নির্ভয়, নিঃশঙ্ক হতে পারেনি। ভয়-কষ্ট-ক্লান্তি ও হতাশার অনুভ‚তি মানুষের মনে জেঁকে বসেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর তামাশার ভাষণে জনগণের সাথে ঠাট্টা করেছেন। জনগণ জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে সম্পূর্ণরুপে প্রত্যাখান করেছে।
আওয়ামী লীগ চুপসে গেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব গত পরশু বলেছেন, বিএনপি ভেঙ্গে যাবে। গতকাল তিনি বলেছেন, বিএনপি’র পরিণতি মুসলিম লীগের দিকে যাচ্ছে কি না সে আশঙ্কা করছেন। প্রকৃতপক্ষে, আওয়ামী লীগ তো ভেতর থেকে ভেঙ্গে চুপসে গেছে। সেখানে নানা পন্থী এবং সিনিয়র-জুনিয়র এর নানা ধারা। যে কারণে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি, পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে রাতের আঁধারে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করতে হয়েছে। পুলিশী ক্ষমতা যখন থাকবে না তখন তো আওয়ামী লীগের বাতি জ্বালানোর লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিএনপি’র মধ্যে কোন বিভেদ নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারেনি বলেই ওবায়দুল সাহেবের বুকে বড় জ্বালা। এজন্য তিনি বিএনপি’র ছিদ্র খুঁজতে আর্তচিৎকার করছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবকে মনে রাখার জন্য বলবো-শকুনির দোয়ায় গরু মরে না। এসময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, বেলাল আহমদ, আমিনুল ইসলাম প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।