Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভালো ফলের পরও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের পর মতিঝিল আইডিয়াল কলেজের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে শিক্ষার্থীদের মা-বাবা। শিক্ষার্থীরা সহপাঠীর সাথে ফলাফলের আনন্দ মেতে উঠেছে। এই সময় কলেজের মধ্যে কথা হয় এক শিক্ষার্থীর মায়ের সাথে। আপনার সন্তানের ফলাফল কেমন হয়েছে? এ প্লাস পেয়েছে জানিয়েই তিনি বলেন, এতদিন ফলাফলের চিন্তায় ছিলাম এখন আবার নতুন চিন্তা শুরু হলো। পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেই তো হতো। কেন মনে হচ্ছে পছন্দের কলেজ পাবে না? গতবারের ভর্তি প্রক্রিয়ায় যে অবস্থা হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে।
শুধু একজন সন্তানের মা-বাবা এমন চিন্তত নয়। অন্তুত দশজন শিক্ষার্থীরা মা-বাবা সাথে কথা হলে তারা এমন কথা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, শিক্ষা জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সীমানা পেরিয়ে নতুন আঙিনায় পদার্পণ করেছে তারা। তবে কলেজ পছন্দ বিষয় নিয়ে তাদের সেই আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উল্লাস স্থায়ী হচ্ছে না খুব বেশি সময় এমনটাই জানিয়েছেন তারা।
ভিকারুননিসা কলেজের নাবিলা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, পছন্দের কলেজ পেলে তো ভালোই হতো কিন্তু সবাই তো পাবে না। তাই পছন্দের কলেজ না পেলেও আগ্রহ না থকলেও পড়তে হবে। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই ইচ্ছা ভালো একটি কলেজে পড়বো, কিন্তু ভর্তি প্রক্রিয়ার যে অবস্থা তাতে কি হয় বলা কঠিন।  
তবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় এ বছর আবেদন করার সময় একজন ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী পছন্দক্রমে ১০টি কলেজের নাম দিতে পারবে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল পাঁচটি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়।
দশটি কলেরজর পছন্দক্রম দিলে ভালো মানের কলেজে আসন না বাড়ায় জিপিএ-৫ পেয়েও ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন না অনেক শিক্ষার্থীই। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আসন সঙ্কট না থাকলেও সঙ্কট রয়েছে ভালো মানের কলেজের। এই নিয়েই বিপাকে পড়তে হবে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে। তীব্র প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য। পরীক্ষায় সবচেয়ে সেরা সাফল্য পেয়েও অনেককেই ভর্তি হতে হবে পছন্দ নয় এমন একটি কলেজে। ভর্তি হতে গিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা। আর জিপিএ-৫ এর নিচে থাকা শিক্ষার্থীদের অবস্থা অনুমেয়।
এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীও চাইবে দেশের নামীদামী কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নিতে। কিন্তু রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোসহ সারাদেশে জেলা পর্যায়ে ভালো কলেজের সংখ্যা হাতে গোনা। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না। প্রতিবছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার, জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে কলেজেরও সংখ্যা। কিন্তু প্রকট অভাব রয়েছে ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। তাই ভালো ফল করা শিক্ষার্থীরা সবাই চায় নামীদামী বা ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে। আর এতেই দেখা দেয় সঙ্কট।
বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) দেয়া তথ্য অনুসারে, রাজধানীতে ভালো মানের কলেজ রয়েছে ১২-১৫টি। আর সারাদেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে আর রয়েছে ১০-১২ টি প্রতিষ্ঠান। সব মিলিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা হবে ২২-২৫ হাজার। অথচ এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। ফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভালো মানের কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবে না। এছাড়া জিপিএ-৫ এর কম যারা পেয়েছে তাদের অবস্থা হবে আরও কঠিন।





 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভালো ফলের পরও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ