Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দালাল ধরতে মন্ত্রীর ঝটিকা অভিযান

প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বিভিন্ন অফিসে দালালের দৌরাত্ম কমাতে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছেন স্বয়ং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল (বুধবার) সকাল থেকেই উত্তরা ও কেরানীগঞ্জের বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালান তিনি। এসময় হাতেনাতে এক দালালকে আটক করা হয়। হটাৎ করেই বিভিন্ন কর্মকর্তার রুমে হাজির হয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেন মন্ত্রী।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে মন্ত্রী যখন হঠাৎ হাজির বিআরটিএর উত্তরা অফিসে তখন দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায় দালালদের। কিন্তু দৌড় দেয়ার আগেই লিটন নামের একজন ধরা পড়েন। ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আসা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তিনি টাকা আদায় করতেন। নিজের পরিচয় দিতেন বিআরটিএর ‘ডিডি’ হিসেবে।
দীর্ঘদিন থেকে তাকে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। অবশেষে মন্ত্রীর সামনে তাকে ধরিয়ে  দেয় জনতা। তার পকেট থেকে এক হাজার ও পাঁচ শ’ টাকার দুই বান্ডিল নোট জব্দ করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিআরটিএর আরো দালাল চক্রের সন্ধান পান ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের সময় মন্ত্রী বিআরটিএর প্রতিটি তলার কক্ষে কক্ষে ঢুকে তল্লাশি চালান। এমনকি অফিসের বাথরুমেও মন্ত্রী খুঁজে দেখেন কেউ লুকিয়ে আছে কি না। মন্ত্রী এ সময় বিআরটিএর বিভিন্ন কর্মকর্তার  টেবিলের সামনে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে আসছিলেন মন্ত্রী। নাম ধরে এসব অভিযুক্ত বিআরটিএ কর্মকর্তাদের খুঁজতে প্রতিটি তলায় যান মন্ত্রী। তাদের অনেককে চূড়ান্তভাবে হুঁশিয়ার করে দেন তিনি।
মন্ত্রীর এমন অভিযানে লাইসেন্স করতে আসা ভুক্তভোগীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর মন্ত্রী চলে যান কেরানীগঞ্জে বিআরটিএর আরেকটি অফিসে। সেখানে অফিসের গেট বন্ধ রেখে তল্লাশি চালান মন্ত্রী। আগতদের কাছ থেকে দালালদের সম্পর্কে তথ্য চান তিনি। তবে ওবায়দুল কাদের বুঝতে পারেন টের পেয়ে পালিয়েছে দালাল চক্র। জনমানুষের ভোগান্তি ঠেকাতে এরকম আচমকা অভিযান অব্যাহত রাখতে চান তিনি।
শুধু বিআরটিএ নয়, বিআরটিসিসহ তার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সরকারি অফিস, যানবাহনে অভিযান করছেন নিয়মিত। প্রকৃত চিত্র খুঁজে বের করে কাউকে না জানিয়েই অভিযানে যাচ্ছেন সেতুমন্ত্রী।
উত্তরা বিআরটিএর অফিস থেকে মন্ত্রী যখন খিলক্ষেত হয়ে মতিঝিলের দিকে যাচ্ছিলেন তখন একটি বিআরটিসি বাস দেখে থেমে গেলেন। নিজের গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে তিনি উঠে গেলেন যাত্রীবাহী বিআরটিসির ওই বাসে। বাসের আসন, পাখা, সিট ঠিক আছে কি না তা দেখলেন। যাত্রীদের  কোনো অভিযোগ আছে কি না তাও জানতে চাইলেন।
হঠাৎ যাত্রীবেশে গাড়িতে মন্ত্রীর এমন আগমন দেখে হতচকিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। কেউ কেউ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকেন। আবার সিটে বসে থাকা অনেক যাত্রীর বিশ্বাসই হচ্ছিল না মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গাড়িতে উঠে দাঁড়িয়ে আছেন। মন্ত্রী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বললেন অনেক যাত্রীর সঙ্গে। এ সময় বিস্মিত যাত্রীদের অনেকেই মুঠোফোনের ক্যামেরায় ধরে রাখছিলেন মন্ত্রীর আগমন। আরেকজন তরুণী যাত্রী মন্ত্রীর এমন দৃশ্যকে সেলফিবন্দী করেও রাখছেন এমন দৃশ্য দেখা গেছে। রাস্তায় মন্ত্রীর এমন  ছোটাছুটি ইদানীং প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ-অসন্তোষ নিজ চোখে  দেখতে এবং ত্বরিত সমাধানে চুপিসারে বের হয়ে পড়ছেন মন্ত্রী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দালাল ধরতে মন্ত্রীর ঝটিকা অভিযান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ