পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরে গত মঙ্গলবার রাতে দুর্বত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে আহত হয় ছাত্রলীগ কর্মী নাদিম মাহমুদ অন্তর। তাকে দেখতে সিএনজি অটোরিকসা নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রওয়ানা হয় পরিবারের ৬ সদস্য। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছার আগে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কের পশ্চিম মান্দারী এলাকায় ট্রাক-অটোরিকসার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায় অটোরিকসাটি। এতে ঘটনাস্থলেই পরিবারের ৬ সদস্যসহ ৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস...! হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়া ছেলেকে দেখতে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন পুরো পারিবার।
একইভাবে গত শনিবার কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুরপাল্লার একটি যাত্রীবাহী বাস দুই পথচারীকে চাপা দিয়ে রাস্তার পাশে একটি খাদে পড়ে যায়। এতে ওই দুই পথচারীসহ ঘটনাস্থলে নিহত হয় তিনজন। সড়কে অকালে প্রাণ ঝরার এগুলো কোন খণ্ডচিত্র নয়। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীসহ সাড়াদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় এমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটে চলছে।
সড়ক সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, মহাসড়কে অবৈধ থ্রি হুইলার, ব্যাটারিচালিত রিকসা, যত্রতত্র রাস্তা পারাপার, পথচারীদের অসচেতনতা, নিয়ন্ত্রণহীন ও উল্টোপথে গাড়ি চালানো এবং হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটে চলছে। এ সব দুর্ঘটনায় প্রতিবছর হাজার হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটলেও চালক-পথচারী বা সরকারের কারোই টনক নড়ছে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কার্যত তাতে কোন সাফল্য আসেনি। বারবারই এসব উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাসড়কে অবৈধ ও উল্টোপথে যানবাহন চলাচল, পথচারীদের হাঁটা-চলা ও যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কখনোই বন্ধ করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশের বিভিন্ন দৈনিকের পরিসংখ্যানের তথ্যমতে, গত চার বছরে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। কোন সংস্থা এখন পর্যন্ত গত ১২ মাসের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। ওই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৮ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৮ হাজার ৭৩২টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটে ২০১৫ সালে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে একটি দৈনিকের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বুধবার পর্যন্ত বিগত ৬৯৮ দিনে রাজধানীসহ সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৯৩ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
এদিকে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত ২৪ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় রাজধানীসহ সারাদেশে অন্তত ২২৫ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহে শনিবার থেকে গত ৬ দিনে প্রাণহাণি ঘটে অন্তত ৬৭ জনের। সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, গতকাল দেশের ৬ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড এলাকায় লরী ও যাত্রীবাহী হিউম্যান হলারের সংঘর্ষে শিশুসহ আহত হয় ১০ জন। এদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া বুধবার লক্ষ্মীপুরে একই পরিবারের ৬ জনসহ ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর বাইরে মঙ্গলবার ১৪, সোমবার ১০, রোববার ১১ ও শনিবার ১৩ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার ওপরে ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সড়কে প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৩৪৯ থেকে ২৫ হাজার ২৮৩ এর মধ্যে। অথচ সরকারী হিসেবে ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ হাজার ২৯৬টি। তবে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় পরবর্তী বছরগুলোতে ক্রমন্বয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
নিরাপদ সড়ক চাই’র এক তথ্যমতে, ২০১৮ সালে সারাদেশে ৪ হাজার ৪শ’র বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৪ হাজার ৩৩২ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সকল তথ্য গণমাধ্যমে না আসায় এ সংখ্যা কিছুটা কমবেশি হতে পারে বলে সংস্থাটি জানায়।
পুলিশের পুরনো তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৪০০ মানুষ রাজধানীতে গাড়িচাপায় নিহত হয়। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার এসব দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। বিভিন্ন গবেষণায় সড়ক দুঘর্টনার কারণগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে রাজধানীর ৫৪টি প্রাণঘাতী মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৮৯ জন মারা গেছে। যাদের ৫৪ শতাংশই ছিল পথচারী। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে- পথচারীদের অসচেতনতা, চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও সড়কের ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, ফামের্গট, কারওয়ানবাজার মোড়, বিজয় সরণি, তোপখানা থেকে পুরানা পল্টন মোড়, জনপথ মোড় সবচেয়ে দুঘর্টনাপ্রবণ পয়েন্ট বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। আহত হয় ১৬ হাজার ১৯৩ জন। এর আগে ’১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৬ হাজার ৫৫ জন। আর ওই সময়ে আহতের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৯১৪ জন। ওই পরিসংখ্যান মতে, ’১৬ সালের তুলনায় ’১৭ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৫.৫ শতাংশ। যেখানে নিহতের সংখ্যা বেড়েছে ২২.২ শতাংশ। আর আহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১.৮ শতাংশ। যদিও সংস্থাটি গতকাল পর্যন্ত ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।
সড়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ আদালত কিংবা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সব ধরণের নির্দেশনাকে পাত্তা না দিয়ে মহাসড়কে ইজিবাইক, নছিমন, করিমনের মতো অবৈধ যানবাহন চালানো হচ্ছে। এতে শত চেষ্টা করেও সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলেন, অভিযোগ আছে-থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে মহাসড়কে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে।
বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারাদেশে ১৮ লাখের বেশি নসিমন, করিমন, ভটভটি বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। যার একটিও সরকারিভাবে অনুমোদিত নয়। এর বাইরে তিন লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলছে মহাসড়কে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের দেশে প্রতি ১০ হাজার যানবাহনের মধ্যে ৮৬ দশমিক ৬টি যানবাহন প্রতি বছর মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়ছে।
সারা দেশের মহাসড়কে অবৈধ (অনিবন্ধিত) নসিমন, করিমন ও ভটভটি চলাচল বন্ধে ২০১৭ সালের ২৫ জুন সার্কুলার জারি করতে সরকারের প্রতি নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। অবৈধ এসব যান বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।
এদিকে মহাসড়কে গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি গাড়িতে ‘গভর্নর সিল’ লাগানোর নিয়ম থাকলেও অনেকে সেটি মানছে না। আগে প্রতিটি গাড়ির গতিসীমা ছিল ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার। যা এখন ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। জানা গেছে, বেশিরভাগ পরিবহনের গাড়ি ৮০ কিলোমিটারের গতিসীমা মানছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান আমলে প্রতিটি গাড়িতে ‘গভর্নর সিল’ লাগানো হতো। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্রমন্বায়ে তা লাগানো বন্ধ করে দেয় পরিবহন ব্যবসায়ীরা। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশেও গাড়ির গতিসীমা নির্ধারণে ‘গভর্নর সিল’ সংযোজন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। গুটি কয়েক গাড়িতে ‘গভর্নর সিল’ লাগানো হলেও অনেকে এটিকে এড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি খায়রুল হক ২০০৮ সালে প্রতিটি গাড়িতে ‘গভর্নর সিল’ লাগানোর জন্য রায় দেন। অথচ হাইকোর্টের ওই রায়কে অদ্যবধি কেউ পাত্তা দেয়নি। এদিকে, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদ ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর এক সভায় মহাসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দেয়।
গভর্নর সিল বিষয়ে জানতে চাইলে সোহাগ পরিবহনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, আগে গতিসীমা ১২০ কিলোমিটার থাকলেও বর্তমানে তা ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ পরিবহন এ নিয়ম মানছে না। তিনি বলেন, সোহাগ পরিবহনের গাড়িগুলোয় গতি নিয়ন্ত্রণে গভর্নর সিল সংযোজন করা হয়েছে।
যাত্রী নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, মহসড়কে গাড়ির গতিসীমা পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘স্পিড ডিটেক্টর’ ব্যবহার চালু করা হলেও দায়সারাভাবে এটির ব্যবহার করা হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে হাইওয়ে পুলিশের কাছে থাকা স্পিড ডিটেক্টরগুলো সব সচল নয়। এর অনেকগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। বাকিগুলোও কোনোমতে চলছে। এছাড়া এসব স্পিড ডিটেক্টর ব্যবহারের পুলিশ ততোটা আগ্রহী নয়। এর ব্যাখ্যায় কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, চালকরা ‘স্পিড ডিটেক্টর’ ব্যবহার করতে দেখলে গাড়ির গতি কমিয়ে দেয়। তাই পুলিশকে লুকিয়ে লুকিয়ে এ যন্ত্রটি ব্যবহার করতে হয় বলে পুলিশেরও কিছুটা অনীহা দেখা গেছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শত চেষ্টা ব্যার্থ হওয়ার পরেও হাল ছাড়েনি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি থেকে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ’ কার্যক্রম হাতে নেয় তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাফিক শুধু মামলা-জরিমানা দিয়ে ক্ষান্ত থাকছে, যা প্রকৃতপক্ষে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে যথেষ্ট নয়। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশেল এবারের ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ’র পরিকল্পনায় নগরীর ট্রাফিক-সংক্রান্ত ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, বেদখল হওয়া রাস্তা ও ফুটপাথ উদ্ধার, রাইড শেয়ারিং অ্যাপে চালিত যানবাহনের নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ফার্মগেট থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত রাস্তাটি গাড়ি চলাচলের জন্য পুরোপুরি খুলে দেওয়া ছাড়াও মডেল করিডর হিসেবে ঘোষিত বিমানবন্দর থেকে শহীদ জাহাঙ্গীর গেট, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, শাহবাগ, মৎস্যভবন, কদম ফোয়ারা, পুরাতন হাইকোর্ট হয়ে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ভিআইপি সড়কের সংযোগগুলোয় রিমোট নিয়ন্ত্রিত ও স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতি কার্যকর করার কথা বলা হয়। এর বাইরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ২৯টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো, ৩০টি পদচারী সেতু ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধকরণে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া স্টপেজ ছাড়া অন্য সময় চলন্ত বাসের দরজা বন্ধ রাখা, স্টপেজ ছাড়া যত্রতত্র বাস থামলে ব্যবস্থা নেওয়া ও বাঁ পাশের লেন ঘেঁষে নির্ধারিত স্টপেজেই যাত্রী ওঠানামা করানোর মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এর আগে গত বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর ‘নিরাপদ সড়ক’ এর দাবিতে পুরো দেশ সোচ্চার হলে তখনও পুলিশ কিছু উদ্যোগ গ্রহন করে। এর মধ্যে ৫ আগস্ট থেকে রাজধানী ঢাকায় ট্রাক সপ্তাহ শুরু চলে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। পরে ৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী ট্রাফিক সচেতনতা কর্মসূচি পালন করে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এতেও অবস্থার আশানুরূপ পরিবর্তন না হলে তৃতীয়বারের মতো ২৪ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সাত দিনের জন্য ‘বিশেষ ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহ’ পালন করা হয়।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পরিবহন সাথে জড়িত মালিকপক্ষ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর পরিকল্পনায় গলদ রয়েছে। যার কারণে ট্রাফিক আইন কার্যকর করা যাচ্ছে না। মহাসড়ক থেকে অবৈধ যানবাহন উঠিয়ে দেওয়াসহ হাইকোর্টের অন্যান্য রায় থাকলেও বেশিরভাগ মালিক সেগুলো মানছেন না। আইনের কঠোর প্রয়োগ ও দায়িত্বশীলরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে কখনো সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।