Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নত দেশের স্বপ্নপূরণ অসম্ভব

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের স্বপ্নপূরণ অসম্ভব। তাই শিক্ষার গুণগত মানের পরিবর্তন দরকার। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ধনী দেশের কাতারে যাবো। তার জন্য বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো দিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে প্রত্যাশা করি তা সম্ভব নয়। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা টেকনোলজি বেইজড নয়। এই শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে, বর্তমান ও আগামীর চাহিদা পূরণ অসম্ভব। এ জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন।
গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কনফারেন্স কক্ষে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিতকে বিদায়ী শুভেচ্ছা ও নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালকে বরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে এনবিআর। এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এনবিআরের সদস্য, সিনিয়র কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্বের ধনী ২০ দেশের সংগঠন ‘জি-২০’ এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অথচ আমরা সেখানে আমন্ত্রণ পাইনি। আমরা সবাই চেষ্টা করলে আগামী ২০৪১ সালে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরকে পেছনে ফেলে ‘জি-২০’ অন্তর্ভুক্ত হতে পারব। সে জন্য কাজ করতে হবে।
সাবেক অর্থমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, মুহিত ভাই, এনবিআরকে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে গত ১০ বছরে ৫৪ হাজার কোটি টাকা থেকে রাজস্ব আদায় ৩ লাখ কোটি টাকায় উন্নীত করেছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে রাজস্ব ব্যবস্থার অনেক সংস্কার হয়েছে। আরও সংস্কার প্রয়োজন। সবক্ষেত্রে দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আমাদের চাহিদা অনেক। সবাই মিলে চেষ্টা করলে এ চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হব না। আমাদের স্বপ্ন এখন ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত করা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৫৩৮ ডলার থেকে ১৭শ’ ৫১ ডলারে উন্নীত হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এ সব কারণে গত ১০ বছরে ১৭ টি দেশকে পেছনে ফেলে ৫৮ থেকে ৪১ তম দেশে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, মুহিত ভাই যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আমরা সেই প্যত্যাশা পূরণ করবো।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিষয়ে তিনি বলেন, মুহিত ভাই খুব স্পষ্টবাদী ও সজ্জন ব্যক্তি। গত দশ বছরে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুহিত ভাইয়ের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বলেন, মুহিত ভাই অবসরে যাওয়ার আগেই বলেছিলেন, তার উত্তরসূরীদের দিক নির্দেশনা দিয়ে যাবেন। আশা করি, তার দিক নির্দেশনা পাব এবং সেই দিক নির্দেশনা মোতাবেক আগামীতে পথ চলব।
মুহিতের অতীত স্মৃতি তুলে ধরে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মুহিত ভাই আমার প্রিয় মানুষ। তিনি সকলের প্রিয় মানুষ। সবার মন জয় করে নিয়েছেন। তিনি তার কাজ যেভাবে করার সেভাবে করেছেন। তিনি মাঝে মধ্যেও অপ্রিয় সত্য কথা বলে প্রচন্ড আলোচনায়ও এসেছেন। সততা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে কাজ করবো।
অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত করের আওতা বাড়াতে পরামর্শ হিসেবে বলেছেন, ঢাকার মানুষের লাইফ স্টাইল দেখে সার্ভে করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যেমে ঢাকা ও তার আশপাশ এলাকার লোকদের আয়-ব্যয়ের একটি সার্ভে করতে পারেন। এরপর সম্পদ অনুসারে কর দিচ্ছে কিনা তা দেখে সবাইকে করের আওতায় আনতে চিঠি দিতে পারেন। তাতে রাজস্ব আয়ে বড় সফলতা আসবে।
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মুহিত বলেন, বাজেট যোষণার এখনো ৬ মাস সময় আছে। তার আগে এ কাজটি করতে পারেন, ভাল ফল পাবেন। শিক্ষার্থীদের বলবেন, তোমরা যাও, লোকজনদের বাড়ি, গাড়ি ও লাইফ স্টাইল দেখো। আর সেই হিসাব একটি প্রতিবেদন তৈরি করো। তিনি বলেন, আমাদের চরিত্রে পরিবর্তন আনার জন্য এই পদক্ষেপ নেন। এরপর রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা নেন।
মুহিত বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি কর বিভাগটি ভয়ঙ্করভাবে জনবিচ্ছিন্ন ছিলো। এখন মানুষ আর মনে করে না যে, কর দিতে এলে জালে জাড়িয়ে পড়বে। অথবা কর দিতে এলেই জবাই করবে। ফলে গত ১০ বছরের কর দাতার সংখ্যা ৭ লাখ থেকে এখন ৩০ লাখের বেশি দঁড়িয়েছে। এখন যদি টার্গেট কোটির বেশি করেন তাও করতে পারবেন।
বাজেট প্রণয়নে কোনো সহযোগিতা দরকার হয় পাশে থাকবেন বলে অর্থমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছনে মুহিত। তিনি বলেন, আগামী এপ্রিলের পরে দেশের বাহিরে যেতে পারি। তার আগে কোথাও যাচ্ছি না। আপনার প্রয়োজন মনে হলেই আমাকে ডাকলেই পাবেন। অবসর মানেই চলে যাওয়া নয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এনবিআরে ৮০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী সৎ লোক। আমরা তার স্পিরিট টা ধরে রাখবো। স্যারের কোনো বদনাম যেনো না হয় সব কর্মকর্তাদের সেই নির্দেশ নেন তিনি। এদিকে অনুষ্ঠান শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এনবিআর’র বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা ঘুরে দেখেন।



 

Show all comments
  • Minu Mamun ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
    ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসলেও কথাটা কিন্তু ঠিক বলেছেন। আল্লাহ আপনাকে সত্য কথা বলার তৌফিক দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • সোহেল রানা ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
    যাইহোক মন্ত্রী মশাই ফ্রুটিকা খেয়ে সত্য বলেছেন। মূল কথা হলো এই সরকারের আমলে দেশকে উন্নত দেশে উত্তরণ সম্ভব নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Zulfiqar Ahmed ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫১ এএম says : 0
    আর যাই করেন মহিত সাবের বুদ্ধি দিয়ে মন্ত্রণালয় চালায়েন দেশের বাকি সর্বনাশটাও সংঘটিত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • আমিন মুন্সি ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫২ এএম says : 0
    শিক্ষা ব্যবস্তার পরিবর্তন করতে হবে মানলাম, সমর্থন করলাম। কিন্তু আপনি যে আবার কোন ধরনের পরিবর্তনের কথা বলছেন সেটা তো আগে ভেবে দেখতে হবে, তাতে কি দেশ আরও পিছিয়ে যাবে কিনা তাও তো দেখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তানভীর আহমাদ ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৩ এএম says : 0
    সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পারে একটি জাতিকে উন্নত জাতিতে পরিণত করতে। যথাযথ শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নয়ন মূল্যহীন. তা ফল বয়ে আনবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • সত্য সন্ধানী ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৩ এএম says : 0
    মন্ত্রীকে আল্লাহ তায়ালা সত্য বোঝার ও খোজার সুযোগ করে দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • ash ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ৬:১৯ এএম says : 0
    DESHER SHIKHA BEBOSTHA NIE ATO GOBESHONA KORAR DORKAR NAI ! PAST SHIKHA MONTRI ONEK GOBESHONA KORECHEN SHIKHA BEBOSTA NIE ( DESHER SATRO-SATRIDER BAROTA BAJIESE, KISU DIN POR POR SHIKHA BEBOSTA CHANGE KORE) DOYA KORE SRILANKAR SHIKHA-BEBOSTHA TA ONUSHORON KORUN !! SRILANKAN SHIKHA BEBOSTHA ONE OF THE BEST !! MATH, SCIENCE, ENGLISH, COMPUTER & ONE TECHNICAL SUBJECT SHOULD HAVE FROM YEAR 5 !!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ