পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আসছে ২৬ মার্চের মধ্যে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) পাবেন। আর এ বছরের মধ্যেই সারাদেশে ১৬ হাজার বাড়ি দেওয়া হবে মুক্তিযোদ্ধাদের । প্রত্যেকটি বাড়ির আয়তন হবে ৮’শ স্কয়ারফিট। এছাড়া জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য ১০ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা শিগগিরই ছাড় করবে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান।
সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি মুনসুরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের বক্তব্য রাখেন, লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুল ওয়াদুদদ, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা ফাউণ্ডেশনের উপদেষ্টা মিনহাজউদ্দিন এম কামাল বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়াউদ্দিন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
মোজাম্মেল হক বলেন, পরিচয়পত্র দেখিয়ে সচিবালয় থেকে শুরু করে যে কোনো অফিসে ঢুকতে পারবেন মুক্তিযোদ্ধারা। সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারীরা মুক্তিযোদ্ধা কার্ডধারীদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সম্মানের সঙ্গে বসার ব্যবস্থা করবেন। সরকারি পরিবহনে এই কার্ড দেখিয়ে বিনামুল্যে ভ্রমণ করা যাবে। হাসপাতালে বিনামুল্যে চিকিৎসা নেওয়া যাবে। এই তালিকায় পাঁচশ বীরাঙ্গনাও আইডি কার্ড পাচ্ছেন বলে জানান মন্ত্রী।
দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধার কথা সরকার ঘোষণা করলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা সরকার ঘোষিত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে আইডি কার্ড দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। তাদের সেই দাবি পূরণ হওয়ার পথে থাকলেও গেজেটভুক্ত সবাইকে কার্ড দেবে না সরকার। মন্ত্রী জানান, ২০০৫ সালের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজটভুক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে বিতর্কিতরা আপাতত এই কার্ড পাবেন না। এই কারণে কিছু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাও হয়তো সাময়িক সমস্যায় পড়বেন, তবে তাদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আগামি বাজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্যমান মাসিক ১০ হাজার টাকার ভাতা বাড়ানো হবে। তবে ঠিক কত টাকা বাড়ানো হবে তার নির্দিষ্ট কোনো অঙ্কের কথা বলেননি মন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে ভাতা বাড়াচ্ছে। আগামি বাজেটে যৌক্তিক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাও বাড়ানো হবে। পেনশন দাবির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুর পরও তার পরিবার এই সুবিধা পান। এটাও তো পেন সুবিধার মতোই। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি করা রেশন সুবিধার বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা জানাননি মন্ত্রী। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যে সব দাবি করেছেন তার কোনোটাই অযৌক্তিক নয়। পর্যায়ক্রমে সব দাবিই পূরণ করা হবে।
অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের হজ্জ পালনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, গত নির্বাচনের আগে আমি কিছু দিনের জন্য ধর্মমন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলাম। তখন আমি তাদেরকে বলে এসেছি প্রত্যেক জেলা থেকে অসচ্ছল, শারিরীকভাবে সক্ষম ও আগে হজ করেননি এমন একজনকে সরকারি খরচে হজে পাঠাতে হবে। উপরের তিনটি শর্তপূরণকারী যারা আবেদন করবেন তাদের মধ্য থেকে জেলাওয়ারি একজনকে লটারির মাধ্যমে বাছাই করা হবে।
মন্ত্রী জানান, ১৯৭১ সালের পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের যে সকল জায়গায় যুদ্ধ হয়েছিল সেই সব জায়গায় একই নকশার আদলে স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে তোলা হবে। এছাড়া দেশজুড়ে যেসব বদ্ধভুমি চিহ্নিত হয়েছে সেসব জায়গাতেও স্মৃতি স্তম্ভ বানানো হবে। জীবিত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ১০ মিনিটের বক্তব্য রেকর্ড করে ন্যশনাল আর্কাইভে রাখা হবে। যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন বীরযোদ্ধারেদ কণ্ঠ দেশের মানুষ শুনতে পারবেন।
মন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাছাই-বাছাইয়ে প্রায় পাঁচশ উপজেলার মধ্যে তিনশ উপজেলা থেকেই সঠিকভাবে তথ্য আসেনি। অনেক জায়গাতেই অনিয়ম হয়েছে। এটা খুবই দুঃখের। মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধাদের দাফনের আগেই তার পরিারকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার পর গার্ড অব অনারের ব্যবস্থা করবে, এরপর কবর দেবে। আর যদি অন্য কোনো জেলায় মুক্তিযোদ্ধা মারা যান, তখন তার লাশ বাড়িতে নিতে যে খরচ তার জন্য বাড়তি বরাদ্দও দেবে জেলা প্রশাসন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুল ওয়াদুদদ বলেন, আমি সারা দেশ ঘুরে প্রায় পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছি ৯৬% মুক্তিযোদ্ধা অসচ্ছল জীবন যাপন করেন। ৯৯% মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ। এদের জন্য যে পর্যায়ের সেবা দরকার তা সরকার নিশ্চিত করছে না। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলা হয়, কিন্তু ভাতা দেওয়া হয় নিতান্তই কম। তিনি প্রশ্ন রাখেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ভাতা কেন বিচারপতি ও সচিবদের চেয়ে কম? জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা ফাউণ্ডেশনের উপদেষ্টা মিনহাজউদ্দিন এম কামাল বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রাজাকার ঢুকে গেছে, রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।