Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ভারতের ‘নূরজাহানে’ সবাই মাতোয়ারা

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ভারতের ‘নূরজাহান’। না, এটা কোনো সুন্দরী রমনীর নাম নয়; কিংবা নয় মুম্বাইয়ের কোনো সিনেমার নায়িকার নাম। অথচ এই ‘নুরজাহান’ বিক্রী করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে দেশের এক শ্রেণীর অসাধু চাল ব্যবসায়ী ও চাতাল মালিক। প্রতারিত হচ্ছে লাখ লাখ ভোক্তা।
ভারত থেকে আমদানী করা চালের ট্রেডমার্ক নাম হলো নূরজাহার। দেশের বিপুল সংখ্যক চালের আড়তদার এখন নানান জাতের দেশী চাল ভারতের ‘নুরজাহান’ ব্লকসীল মার্কা প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বিক্রী করছেন। জানা গেছে গত বছর বন্যার পর ভারত থেকে আমদানী করা হয় ‘নুরজাহান’ ব্লকসীল মার্কা প্লাস্টিকের বস্তার চাল। মান ভাল হওয়ায় সে চাল ভোক্তাদের নজর কাড়ে। ভারতীয় ওই ‘নুরজাহান’ চাল দ্রুত বিক্রী হওয়ায় অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা দেশে উৎপাদিত চাল ভারতে নূরজাহান ক্লকসীল মার্কা প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বিক্রী করছেন। বিক্রীর তালিকায় দেশী নানান জাতের উন্নত মানের চালকে ‘নুরজাহান’ টপকে গেছে। গত বছর সিণ্ডিকেট করে যে কয়েক হাজার চালকল মালিককে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করা হয়; তাদের অনেকেই এখন ভারতীয় ‘নুরজাহান বাস্তায়’ দেশী চাল বিক্রী করে ভোক্তাদের প্রতারিত করছেন। অথচ দেশের পরিবেশ আইনে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার নিষিদ্ধ।
অনুসন্ধান করে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে চালের বাজারে নিষিদ্ধ প্লাসষ্টিকের চালের বস্তায় সয়লাফ হয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণঞ্চলের হাটবাজারসহ রাজধানী ও বন্দনগরী চট্রগ্রামের চালের বাজারের দোকানগুলোতে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে নুরজাহান নামে ব্লকসীল মার্কা প্লাসষ্টিকের বস্তা। সরকার পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্লাষ্টিকের বস্তা ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পরও প্লাসষ্টিকের বস্তাতে চাল জাতকরণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর দেশে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতিতে খদ্যঘাটতি মেটাতে বেশকিছু ভারতের তৈরী নুরজাহান ব্লকসীল মার্কা প্লাসষ্টিকের বস্তার চাল আমদানী করা হয়। ওই নুরজাহান ব্লকসীল মার্কা বস্তায় আমদানী করা চালের গুনগত মান তুলনামুলক ভালো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ঢাকাও চট্রগ্রামে ব্যাপক বৃদ্ধি পায় এই চালের বিক্রী। একপর্যায়ে দেশে ধান, চাল উৎপাদন বৃদ্ধিতে দীর্ঘদিন যাবত ভারত থেকে চাল আমদানী বন্ধ থাকার পরও দেশের উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁ, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোরও দক্ষিণঞ্চলের কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গসহ বিভিন্ন জেলার চালের মোকামগুলোর আটোমেটিক চালকল ও চাতাল রাইস মিল মালিক অধিক মুনাফা লাভের লোভে নিজেদের মিলের ট্রেডমার্ক নাম ব্যবহার না করে চটের বস্তার বদলে ৫০ কেজির প্লাষ্টিকের বস্তায় সেই ভারতের নুরজাহান মার্কার ব্লকসীল মেরে চাল অবাধে বাজারজাত করছে। ফলে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণঞ্চলের হাটবাজারসহ রাজধানী ও বন্দনগরী চট্রগ্রামের চালের বাজারের দোকানগুলোতে অবাধে বিক্রী করতে দেখা যাচ্ছে নুরজাহান চাল।
একারণে সরকারের পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ম-নীতি মুখথুড়ে পরছে। আবার চাল কিনে প্রতারিত হচ্ছে ভোকতারা। এছারা নিষিদ্ধ প্লাষ্টিকের বস্তা অবাধে ব্যবহার করা হলেও প্রশাসনের তেমন কোন নজদারী না থাকায় দিন দিন এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ব্যবহার কমতে শুরু করেছে পাটের তৈরী চটের বস্তা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতের ‘নূরজাহানে’ সবাই মাতোয়ারা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ