পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাইদুল বিশ্বাস, সাঁথিয়া (পাবনা) থেকে : জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হবার পর বুধবার রাত দেড়টার দিকে তার লাশবাহী গাড়ি বহর কড়া পুলিশ পাহারায় সাঁথিয়ার মনমথপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে নিজামীর নিজ বাড়ি মনমথপুরে লাশ পৌঁছালে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জেলা প্রশাসনের পক্ষে লাশ গ্রহণ করেন। পরে পরিবারের সদস্যদের একনজর দেখার সুযোগ দেয়া হয়।
এ সময় লাশ দেখে আত্মীয়-স্বজনেরা শোকে কাতর হয়ে পড়েন। সকাল ৭টার সময় মনমথপুর কবরস্থানের পূর্ব পাশের মাঠে নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুল্লাহ মোমিন জানাজায় ইমামতি করেন। জানাজা নামাজে দলীয় নেতাকর্মী ও স্বজনদের ঢল নামে। জানাজা নামাজে শরিক হবার জন্য সকাল থেকে মনমথপুর গ্রামে নিকটতম আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা অবস্থান গ্রহণ করেন। জানাজার পূর্ব মুহূর্তে দলীয় নেতাকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ সময় নিজামীর মেঝ ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুল্লাহ মোমিন তার পিতার আদর্শ মেনে চলতে আগত দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
জানাজা শেষে সকাল সাড়ে ৭টায় তার নিজ গ্রাম মনমথপুর কবরস্থানে বাবা লুৎফর রহমান খান ও মা মমেনা খাতুন ময়নার কবরের পাশে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর লাশ দাফন করা হয়। এর আগে রাত ১০টার দিকে মনমথপুর সামাজিক কবর স্থানে নিজামীর কবর খনন শুরু করেন শেরআলী খান, ফরিদ খান, হারুন খান ও খোকন আলী প্রামানিক।
নিজামীর দাফনকে কেন্দ্র করে তার নিজ গ্রাম ও আশপাশের এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়। এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি মোতায়ন রাখা হয়েছে কয়েক প্লাটুন র্যাব ও বিজিবি। দাফন শেষে মাইকে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবার কথা প্রচার করা হয়। গায়েবানা জানাজায় অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ মনমথপুরের দিকে আসতে থাকে। সকাল ১০ ও ১১টায় দু’দফা তার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নিজামীর ভাতিজা আ: রহিম খান জানান, জানা মতে তার চাচা কোন অপরাধের সাথে জড়িত ছিল না। সাঁথিয়া পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী কামরুজ্জামান বকুল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম সোহেল জানান, নিজামী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকরের খবর শুনে তার নিজ গ্রাম ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে ।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল লতিফ তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, দীর্ঘ ৪৫ বছর পর হলেও নিজামীর ফাঁসির মধ্য দিয়ে জাতি কলংকমুক্ত হলো।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও নিজামীর মামলার অন্যতম সাক্ষী জহুরুল হক মাস্টার বলেন, ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে নিজামীর নির্দেশে সাঁথিয়ার ডেমরা, বাউশ গাড়ি, ধুলাউড়িসহ বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও লুটপাট চালানো হয়। তার ফাঁসি রায় কার্যকর হওয়ায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পাবে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যে কোন নাশকতা মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।