পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি খাতের চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক ফারমার্স ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর। পাবলিক অ্যাকাউন্টস (পিএ) কমিটির সাবেক এই চেয়ারম্যান চাইলে ব্যাংকটিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে, শুরু থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ নিয়ে নিজে লাভবান হয়েছেন। ব্যাংককে ফেলেছেন বিপাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে ঋণ দিয়ে ঘুষ নেয়ারও প্রমাণ মিলেছে। ঋণ গ্রাহকের হিসাব থেকে মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নামে পে-অর্ডার করার প্রমাণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন মতে, ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই তনুজ করপোরেশনের টাইম লোনের হিসাব থেকে এক কোটি ২২ লাখ টাকা গ্রাহকের চলতি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। একই তারিখে ওই হিসাব থেকে ১৮ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। যার নম্বর-১২০৫৪১। ১৮ লাখ টাকার পে-অর্ডারে মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নাম উল্লেখ রয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গ্রাহকের হিসাব থেকে উত্তোলিত অর্থের মাধ্যমে নিজস্ব প্রয়োজনে পে-অর্ডার ইস্যুর মাধ্যমে মহিউদ্দিন খান আলমগীর জাল-জালিয়াতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন।
জানা গেছে, পরিদর্শক দল নমুনা ভিত্তিতে মাত্র কয়েকটি ঋণ হিসাব খতিয়ে দেখে। আর যে ধরনের অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি উৎথাপিত হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সাবেক চেয়ারম্যান ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের বেপরোয়া ঋণ বিতরণ করেছিলেন। তিনি ব্যাংকটিকে ব্যক্তিগত স্বার্থের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ব্যাংকিং নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিয়েছেন, নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে ঋণ দিয়ে নিজেরা লাভবান হয়েছেন। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।
সূত্র জানায়, ঋণ দান, আমানত সংগ্রহ, জনবল নিয়োগসহ ব্যাংকের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর অনিয়ম করেছেন। এমনকি জাতীয় সংসদের পাবলিক হিসাব কমিটির চেয়ারম্যানের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আমানত সংগ্রহ করে কমিশন নিয়েছেন। পাশাপাশি এসব আমানত নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে ঋণ দিয়ে ভাগ-বাটোয়ারা করেছেন। এতে তিনি কয়েক শ’ কোটি টাকার লাভবান হলেও হাজার কোটি টাকার ক্ষতিতে পড়ে নতুন প্রজন্মের এই ব্যাংকটি।
যদিও বর্তমানে অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছে ফারমার্স ব্যাংক। নতুন পরিষদের সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে ফারমার্স ব্যাংকের পাশে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত চার প্রতিষ্ঠান। সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবি ফারমার্স ব্যাংকের মালিকানায় এসেছে। এ প্রক্রিয়ায় পাঁচটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রি ও বন্ডের মাধ্যমে মূলধন এসেছে এক হাজার ২১৫ কোটি টাকা। এ সময়ে আমানত সংগ্রহ করেছে ৫০০ কোটি টাকা। পাশাপাশি কয়েক শ’ কোটি টাকার ঋণ আদায় করতে পেরেছে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদ। সবমিলে ব্যাংটিতে মূলধন, বন্ড, আমানত ও আদায়ের মাধ্যমে যোগান এসেছে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। সেই সাথে গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে গত মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত আমানতকারীদের ফেরত দেয়া হয়েছে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকারও বেশি।
সূত্র জানায়, গত এক বছরে নতুন ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকটি আমানত সংগ্রহ, লোন রিকভারি, করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যাংকের ইমেজ পুনরুদ্ধারে বেশ সফল হয়েছে। বর্তমান পরিচালনা পরিষদ ব্যাংকটির নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন ব্র্যান্ডিংয়ের সিদ্ধান্তও নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বিষয়টি। কিন্তু সেখানেও বিরোধিতা করছেন মহিউদ্দিন খান আলমগীর। তিনি নতুন নামের কেবল বিরোধিতাই করছেন না; পুরাতন নাম রাখার পক্ষে জোর লবিং করছেন। ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ফারমার্স ব্যাংকে কোনো সঙ্কট নেই। তারল্য সঙ্কট, ইমেজ সঙ্কট আর অনিয়ম থেকে রেরিয়ে এসেছে ব্যাংকটি।
ফারমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এহসান খসরু ইনকিলাবকে বলেন, খুব শিগগিরই আমরা নতুন নামে যাচ্ছি। একই সঙ্গে সকলের সহযোগিতায় ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা সফলও হয়েছি। সাবেক চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন ব্যবস্থাপনা পরিষদের কাছে এখনো আসেনি।
অনিয়মের বিষয়ে মহিউদ্দিন খান আলমগীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার গানম্যান নজরুল কল রিসিভ করে জানান, তিনি কচুয়ায় অনুষ্ঠানে আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।