পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিন দশক আগে ঢাকার পত্রিকাগুলো যখন স্বৈরশাসক এরশাদের কবিতা ছাপাতে বাধ্য হয়; তখন কবি মুহম্মদ রফিক লিখলেন ‘সব শালা কবি হতে চায়’ শিরোনামে কবিতা। কবিতা লেখার জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক কবিকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কেউ কবি হতে চাইলে আমজনতার তেমন লাভ-লোকসান নেই; জনগণের ট্রাক্সের টাকা কবির পিছনে ব্যয় করতে হয় না। ওই আশির দশকে ‘কবি হতে চাওয়ার’ মতো এখন ‘সবাই এমপি হতে’ চায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র ক্রয়ে সে দৃশ্য দেখা গেছে। জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হবে ১৭ ফেব্রুয়ারী। কিন্তু সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যারা মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছেন; তাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক নায়িকা-খলনায়িকা-পার্শ্বচরিত্র অভিনেত্রী রয়েছেন। শো-বিজের এই অভিনেত্রীরা এমপি হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ করছেন। একবার এমপি হলেই কোটিপতি! বর্তমানে একজন এমপি বেতন-ভাতা-অন্যান্য খচর বাবদ প্রতিমাসে পান প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা। এর বাইরে রয়েছে হাজারো সুবিধা। ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতাদের উঠোনে নায়িকাদের দৌঁড়ঝাপ দেখে হতাশ হয়ে পড়েছেন দলটির অনেক নিবেদিতপ্রাণ পরীক্ষিত নেত্রী। তারা চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করছেন। যারা যুগের পর যুগ ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন, সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়ে দলের নেতাকর্মী ও এলাকার মানুষের সেবা করতে চান, তারা হয়ে পড়েছেন আশাহত।
‘রাজনীতি এখন গরীবের বউ; গরীবের বউ সবার ভাবী’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছিলেন মহামান্য প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। দশম সংসদে এমপিদের প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ ছিলেন ব্যবসায়ী। একাদশ সংসদে এই সংখ্যা আরো বেশি। ‘সংসদের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়ী’ আর ‘রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ আমলাদের’ হাতে চলে যাওয়ায় দুঃখ করে তিনি এই মন্তব্য করেন। তৃর্ণমূল থেকে উঠে আসা রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য ধরা দিয়েছে সিনেমা-টিভি নাটকের নায়িকা, খলনায়িকাদের দৌঁড়ঝাপে। ছোটপর্দা-বড়পর্দায় অভিনয়ের বদলে এখন তারা সংসদে যেতে চান। নাটক-সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের মনোরঞ্জন করা নায়িকারা এখন দেশপ্রেমের অভিনয়ে নামতে চাচ্ছেন। এমপি হওয়ার স্বপ্নে এরা আদর্শ-দর্শন ও নীতি নৈতিকতার বালাইয়ের মধ্যে নেই। ক্ষমতাসীন দলের এক নীতি নির্ধারক প্রায়ই যে ‘কাউয়া, হাইব্রীড, অনুপ্রবেশকারী শব্দগুলো ব্যবহার করেন; জার্সি বদলকরা নায়িকা-খলনায়িকাদের এমপি হওয়ার দৌঁড় যেন তারই সমার্থক। বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা সারাহ বেগম কবরী ২০০৮ সালে নারায়ণগঞ্জের একটি আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ওই সময় সংরক্ষিত আসনে এমপি হন গায়িকা মমতাজ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘নয়নমনি’ সিনেমার অভিনেত্রী তারানা হালিম। কণ্ঠশিল্পী চয়ন ইসলামসহ সাংস্কৃতির অঙ্গনের আরো দু’তিনজন ওই সংসদে ছিলেন এমপি। এবার মমতাজ ও নায়ক ফারুক এমপি হয়েছেন। এর আগে প্রার্থী-ভোটারবিহীন দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়ে তারানা হালিম প্রতিমন্ত্রী হন। গায়িকা-নায়িকাদের এই এমপি-প্রতিমন্ত্রী হওয়া দেখে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের রথীমহারথীরা এমপি হতে ভৌঁ-দৌঁড় দিয়েছেন।
এবার সংস্কৃতি জগতের একঝাঁক তারকা আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হতে চাচ্ছেন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নির্মাতা, নায়িকা, খলনায়িকা, নৃত্যশিল্পী, মাতা-ভগ্নি চরিত্রে অভিনেত্রীরাও রয়েছেন এই দৌঁড়ে। তদবির করছেন সমানতালে। জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হওয়ার মনোনয়ন দৌঁড়ে রয়েছেন নায়িকা আরিফা পারভীন জামান মৌসুমী, সারাহ বেগম কবরী, শমী কায়সার, অরুণা বিশ্বাস, তারিন, রোকেয়া প্রাচী, আনোয়ারা, ফাল্গুনী হামিদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, তারানা হালিম, নূতন, সুজাতা, দিলারা, তানভীন সুইটি, জোতিকা জ্যোতি, অঞ্জনা, নিপুণ, শাহনূর, রওনক বিশাখা শ্যামলীসহ এক ঝাক নায়িকা-খলনায়িকা। এদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অনেকেই বিএনপির লোক হিসেবে পরিচয় দিতেন। বিএনপির শাসনামলে বিদেশ ভ্রমনসহ নানাবিধ সুবিধা, পুরস্কারও নিয়েছেন। আবার অনেকেই রাজনীতির ধারের কাছেও জীবনে যাননি। কেউ কেউ আবার ক্ষমতায় যে দল সব সময় সে দলের জার্সি গায়ে দেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেখা যায় এই নায়িকা, খলনায়িকারা নায়ক ফেরদৌস-রিয়াজ-মাহফুজের সঙ্গে দল বেঁধে বিভিন্ন জেলায় নৌকা ও লাঙ্গলের প্রার্থীর পক্ষ্যে প্রচারণা চালিয়েছেন। বিএনপির শাসমানলে দেখা গেছে এদের অনেকেই বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস ও জিসাসের ব্যানারে দেয়া ‘জিয়া স্বর্ণ পদক’ গ্রহণ করেছেন। শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার নামে গানবাজনা করেছেন। বাড়তি কিছু সবিধা পেতে ‘আমি বিএনপির লোক’ প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে যে নায়িকা-শিল্পীরা মহিলা এমপি হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ করছেন ফেসবুকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় মৌসুমীসহ তাদের অনেকেই বিএনপির শাসনামলে জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতির সংগঠনের ব্যানারে নিজেদের তুলে ধরার চেস্টা করেছেন। পরিচালক মরহুম আমজাদ হোসেন, চাষী নজরুলের সঙ্গে বিএনপির নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে সুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুর রহমান বিশ্বাস, সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহমদ, বেগম খালেদা জিয়া, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিষ্টার জমিরউদ্দিন সরকার, বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী, ড. মঈন খান এমনকি বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সহাস্যে ছবিতে পোজ দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছে। বিএনপির শাসনামলে এই নায়িকা-গায়িকারা নিজেদের বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দবোধ করতেন, সাংস্কৃতি দলের সদস্য হয়ে বিদেশ ভ্রমন করতেন। এখন এরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের হিসেবে নিজেদের প্রচার করে এমপি হওয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু বিএনপি নয়, চলচ্চিত্র নির্মাতা আজমল হুদা মিঠু জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। সে সময় দেখা গেছে অনেক নায়িকা এরশাদের বৈঠকখানায় ভীড় করছেন। এমনকি কয়েক বছর আগেও খল অভিনেতা আহমদ শরীফ, নায়ক সোহেল রানা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বাদল খন্দকারের সঙ্গে এরা এরশাদের আশপাশে ঘুরঘুর করতেন। এখন জার্সি বদল করে এরা রাতারাতি আওয়ামী লীগার হয়ে গেছেন। অবশ্য শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, কবরী, তারানা, ফাল্গুনী হামিদসহ কয়েকজন বঙ্গবন্ধু সংস্কৃতি জোটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার জন্য নায়িকা-খলনায়িকাদের জার্সিবদল ও দৌঁড়ঝাপ দেখে মনে হচ্ছে রাজনীতি যেন তাদের কাছে নাটক সিনেমার চরিত্রের মতো! গল্পের চরিত্র অনুযায়ী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় করতে হয়। রাজনীতি হলো নীতি-আদর্শের বিষয়। এখানে যেমন খুশি তেমন সাজো সুযোগ নেই। গতকাল একটি অনলাইন সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে চান এমন নায়িকা-খলনায়িকাদের নিয়ে একটি বৈঠকির আয়োজন করে। সেখানে অভিনেত্রী তানভিন সুইটি বলেন, আমার পরিচয় অভিনয়শিল্পী হিসেবে; অনেকের অনেক রকম পরিচিতি থাকে সমাজে। কেউ ব্যবসায়ী, ব্যারিস্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। আমরা অভিনয়শিল্পী যারা আছি তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের আন্দোলন, সব জায়গায় শিল্পীদের একটা ভূমিকা ছিল। আমরা পথনাটক করছি, আমরা স্টেজে নাটক করেছি। সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি। অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, আমি অভিনয়শিল্পী সেটা পেশা। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী। আমি একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বেড়ে উঠেছি। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। দীর্ঘ পথচলার পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু আজকের রাজনৈতিক কর্মী হয়ে ওঠা। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যাওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধি হওয়া দরকার। মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়ে সুজাতা বলেছেন, এমপি হয়ে নায়ক ও স্বামী আজিমের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। শমী কায়সার বলেছেন, ছোটবেলা থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির ভেতর দিয়ে বড় হয়েছি। বড় হয়ে ২০-২২ বছর আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করছি। এখন সরাসরি রাজনীতি করার ইচ্ছে এবং সংসদ সদস্য হওয়ার ইচ্ছেটা মূলত সমাজ ও দেশের জন্য কিছু করার জন্য। এ কাজে একটি প্ল্যাটফর্মে থাকলে ভালো কিছু করা যায়। অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস বলেছেন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকেরাও একভাবে রাজনীতি করে। মাঠে বেশি সময় দিতে না পারলেও সমাজ বদলে আমাদের ভূমিকা কোনোভাবেই কম নয়। শিল্পীরা আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থাকতে চায়।
নায়ক-নায়িকা-শিল্পী-খেলোয়াড়দের এমপি করার প্রবণতা রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা বললে তারা নিজেদের চরম অসন্তোষের কথা প্রকাশ করেন। তাদের বক্তব্য হলো নেতানেত্রীরা বছরের পর বছর ধরে দলের সঙ্গে রয়েছেন। হামলা-মামলা ও বিভিন্ন চড়াই-উৎরাইয়ে দলের সঙ্গে থাকেন। তারা প্রত্যাশা করেন এমপি ও জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকার মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু খেলোয়াড়, নায়ক-নায়িকারা হঠাৎ করে এমপি মন্ত্রী হওয়ায় তারা পিছনে পড়ে যাচ্ছি।
সংসদ সদস্যদের সুবিধা:- মাসিক বেতন ৫৫ হাজার টাকা, প্রতিমাসে নির্বাচনী এলাকার ভাতা ১২ হাজার ৫শ টাকা, প্রতিমাসে সম্মানী ভাতা ৫ হাজার টাকা, প্রতিমাসে পরিবহন ভাতা ৭০ হাজার টাকা, নির্বাচনী এলাকায় অফিস খরচের জন্য প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা, প্রতিমাসে লন্ড্রি ভাতা ১ হাজার ৫শ টাকা, মাসিক ক্রোকারিজ-টয়েলেট্রিজ কেনার জন্য ভাতা ৬ হাজার টাকা, দেশের অভ্যন্তরে বার্ষিক ভ্রমণ খরচ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, স্বেচ্ছাধীন তহবিল বার্ষিক ৫ লাখ টাকা, বাসার টেলিফোন ভাতা বাবদ প্রতিমাসে ৭ হাজার ৮শ টাকা, শুল্কমুক্তভাবে গাড়ি আমদানির সুবিধা, সংসদ সদস্যদের জন্য সংসদ ভবন এলাকায় এমপি হোস্টেলে অফিস, ন্যাম ভবনে থাকার ব্যবস্থা। এছাড়া প্রতিবছর কয়েক কোটি করে টাকা করে থোক বরাদ্দ পাবেন। এলাকার উন্নয়ন, বিদেশ ভ্রমন, বিমানভাড়াসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও গাড়ির তেল খরচ, অফিস স্টাফ, ড্রাইভার সব মিলে প্রতি মাসে প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আয় করেন। এ ছাড়াও থোক বরাদ্দ পেয়ে থাকেব বিপুল পরিমান অর্থ। শুল্কমুক্ত গাড়িতে দুই থেকে তিন কোটি টাকা ছাড় পান। তাদের জন্য ঢাকায় প্লট বরাদ্দ কার্যত বাধ্যতামূলক। এলাকার উন্নয়ন, নিয়োগ বাণিজ্যের সীমা পরিসীমা নেই।
সংরক্ষিত নারী আসনের একজন মহিলা এমপি প্রতিমাসে এই বিপুল অর্থ পেলেও তারা নারী সমাজের কোনো উপকারে আসছেন? দেশের সাড়ে ১০ কোটি ভোটারের অর্ধেকই নারী। বঞ্ছিত, অবহেলিত নারীদের ভাগ্য পরির্বতনে গত ৩০ বছরে সংরক্ষিত আসনের এমপিরা কোনো কার্যকর ভুমিকা রেখেছেন? যৌতুকপ্রথা সমাজে ভয়াবহ ব্যাধি হয়ে গেছে। মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজশাহী জেলার পদ্মার চরাঞ্চল, বগুড়া, সিরাজগঞ্জের যমুনার চরাঞ্চল, কুড়িগামের ব্রক্ষপুত্র নদের চরাঞ্চল এবং রংপুর-নিলফামারী-লালমনিরহাটের তিস্তার চরাঞ্চলে প্রায় অর্থশত গ্রামে মাইলের পর মাইল হেঁটে দেখেছি ঘরে ঘরে বিবাহযোগ্যা মেয়ে। এই হাজার হাজার বিবাহযোগ্যা মেয়েকে যৌতুকের টাকার অভাবে বাবা-মা বিয়ে দিতে পারেন না। গ্রামের এই ভয়াবহ চিত্র যৌতুকের বিরুদ্ধে গত ৩০ বছরে সংসদে কী কোনো মহিলা এমপি কথা বলেছেন? সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়ে তারা নারীর অধিকার, নারী তথাকথিত স্বাধীনতার কথা বলেন। উলঙ্গপনা, বেলেল্লাপনা আর রাজপথে নির্বিঘ্নে চলতে পারাই কী নারী নারীর অধিকার? ‘সবাই কবি হলে’ ক্ষতি নেই। কিন্তু এমপি হলে তো প্রতিমাসে জনগণের ট্রাক্সের ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা দিতে হয়। কেউ কবি হতে চাইলে প্রতিষ্ঠিত কবিরা গালি দিয়ে কবিতা লেখেন; আর রাজনীতির বাইরের নায়িকারা এমপি হতে চাইলে সমাজপতিরা নীরব থাকেন কেন? শীর্ষস্থানীয় নেতানেত্রীরাই বা কেন দলের পোঁড় খাওয়া পরীক্ষিত নেত্রীদের বঞ্ছিত করে নায়িকা-খলনায়িকাদের দিকে ঝুকে পড়েন? রাজনীতি কী এতোই সোজা পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রাতারাতি রাজনীতির জননেতা জননেত্রীর চেয়ারে বসেন? হাজার মিলিয়ন ডলারের এই প্রশ্নের জবাব কোথায়? ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।