পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়লাভের পর চারদিকে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার। নির্বাচনের দিন রাত থেকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন দলের নির্বাচিত এমপিরা। এরপর ৭ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ গঠনের পর থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করতে করতে হিমশিম খাচ্ছেন মন্ত্রিপরিষদের নতুন সদস্যরা। বাড়ি থেকে অফিস, সকাল থেকে রাত শুভেচ্ছা গ্রহণ করেই সময় পার করছেন তারা।
একদিকে যেমন আনন্দ উল্লাসে মাতোয়ারা আওয়ামী লীগ ঠিক অপরদিকে এমপি মনোনয়ন বঞ্চিত ও মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া নেতাদের চারদিক নিকষ কালো মেঘে অন্ধাকারাচ্ছন্ন; চারদিকের এতো আনন্দ উল্লাসের মাঝে এক ধরণের বিষন্নতা। নৌকার বিশাল জয়েও আনন্দ নেই মনে।
এবার যারা মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন তাদের বেশির ভাগ ছিলেন জাতীয় রাজনীতিতে অপরিচিত। মন্ত্রী বা নতুন মনোনয়নে যারা এমপি হয়েছেন অনেকের বাসায় ছিল না ভীড়। এখন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ভীড়ে ব্যতিব্যস্ত পরিবারের সদস্যরা, এমনকি পাড়া প্রতিবেশীও হচ্ছেন বেশ বিরক্ত। বিভিন্ন উপহার ও ফুল রাখার জায়গা পাচ্ছেন না তারা। পাশের ময়লার ডাস্টবিন থেকেও ছড়াচ্ছে ফুলের সুবাস।
অপর দিকে মন্ত্রিত্ব হারানো ও মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের বাড়ি বা অফিস যেখানে রাতদিন সারাক্ষণ ভীড় লেগেই থাকতো এমন পুরো ফাকা, শুনসান নিরবতা। সকালে দেড়-দু’শ মানুষ দেখে যেসব নেতাদের ঘুম ভাংতো, অফিসে গেলেই নানা বিচার শালিশ আর তদবিরের কারণে খাবার খাওয়ার সময় থাকতো না এখন যেন দিন কাটে না তাদের। সুবিধাভোগীদের ভীড়ে যাদের কাছে যাওয়া ছিল দুষ্কর; এখন এসব নেতাদের বাড়ি বা অফিস দেখলে দেখে মনে হয় এখানে কোন সময় মানুষের আনাগনাই ছিল না। কাছের মানুষগুলো অপরিচিত হয়ে গেছে এসব নেতাদের কাছে। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় কিংবা দলের মনোনয়ন নিশ্চিতের আগে কোথাও গেলে বিমান বা গাড়ি থেকে নামার পর থেকেই স্লোগানে স্লোগানে হাজার হাজার মানুষ যাদের বরণ করতো, সরকারি কর্মকর্তারা লাইন ধরে দাড়িয়ে থাকতো, মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তাকে নিয়ে আসা হতো বা পৌঁছে দেয়া হতো, এখন আর নেই সেই ভীড়। কারণ নেই মন্ত্রিত্ব অথবা পাননি দলের মনোনয়ন।
গতকাল শুক্রবার এমনই এক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
কয়েক দিন আগেও তাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের জটলা লেগেই থাকতো। ঢাকা থেকে সিলেট ফিরলে ভিড় লেগে থাকতো ওসমানী বিমানবন্দরে। ভিআইপি লাউঞ্জে পড়ে যেত হুড়োহুড়ি-ধাক্কাধাক্কি। গলা ফাটানো স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠতো বিমানবন্দর এলাকা। মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তাকে নিয়ে আসা হতো বাসায়।
সেই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যখন সিলেটে ফিরলেন তখন তার হুইল চেয়ার ধরার মতোও ছিল না কেউ। সাবেক এপিএস জনিকে নিয়ে একা একাই ওসমানী বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
শুক্রবার বেলা একটা ৫০ মিনিটের সময় নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সিলেট যান তিনি। বিমান থেকে নেমে হুইল চেয়ারে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভিআইপি লাউঞ্জে। জনশূন্য ভিআইপি লাউঞ্জ তখন অনেকটা অপরিচিতই মনে হচ্ছিল মুহিতের কাছে। চিরচেনা পরিচিতমুখগুলো দেখতে না পেয়ে অনেকটা হতাশই মনে হচ্ছিল সাবেক এই অর্থমন্ত্রীকে। এতদিন যাদেরকে ‘কাছের মানুষ’ হিসেবে জানতেন তাদের মুখোশের অন্তরালের চেহারাটা হয়তো তখন ভাসছিল তার মনোচোখে!
মনোনয়ন না পাওয়া বা মন্ত্রিত্ব থেকে ছিটকে পড়া অনেক প্রভাবশালী নেতাই এক রকমের হতাশ, নিরলস সময় কাটাচ্ছেন। বেশি একটা কাজ না থাকলে বাড়ির বাইরে যান না এবং কারো ফোনও ধরেন না। সময় পেলে আড্ডায় পেতে উঠেন যদি মনোনয়ন বঞ্চিত উপর কাউকে সঙ্গী হিসেবে পান। আবার কেউ কেউ মনোনয়ন না পাবার কারণ খুঁজে বের করে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার সময় গুণছেন।
আবার অনেকেই দলের কাজে বেশি সময় দিচ্ছেন। বছরের শেষে দলের সম্মেলনে ভাল পদে যাওয়ার জন্য বা কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার জন্য চেষ্টা শুরু করেছেন। ভুল ভ্রান্তি দূর করে নতুন করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন আগামীর পথচলার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।