পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন তার পরিবার ও দলের নেতাকর্মীরা। পছন্দের চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা না পেয়ে বেগম জিয়ার অসুস্থতা বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত বুধবার গেটকো দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজিরও হতে পারেননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তার আইনজীবীরা জানান, অসুস্থ ও বয়স্ক একজন মহিলা বিনা চিকিৎসায় কারাবন্দি রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নানাবিধ জটিল রোগে ভুগছেন। যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় তিনি প্রায়ই ভীষণ অসুস্থ থাকছেন। বুধবার তার অসুস্থতা বেড়ে গেলে তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। সম্প্রতি তার পরিবারের সদস্যরা কারাগারে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে আসার পর একই রকম তথ্য জানান। তারা জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এখন ভীষণ অসুস্থ পড়েছেন। একা একা চলা ফেরা তো দূরের কথা তিনি বিছানা থেকে উঠে বসতেও পারছেন না। তাকে একজন সহায়কের সাহায্যে উঠে বসতে হচ্ছে এবং শোয়াতে হচ্ছে। আর ঠান্ডার কারণে তার ব্যাথাও অনেক বেশি বেড়ে গেছে। বারবার আবেদন করার পরও তাকে বিশেষজ্ঞ ও পছন্দের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে না।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুনের কাছে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেগম জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগেই অসুস্থ ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালেও লন্ডন থেকে চিকিৎসা করিয়ে এসেছেন। তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিয়মিত চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু এখন দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিকিৎসা বঞ্চিত। কারাগারে তার পছন্দের চিকিৎসক পাচ্ছে না। এমনকি হাসপাতালেও তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। ফলে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। ওই দিনই তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যাক্ত কারাগারে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত তিনি সেখানেই রয়েছেন। স্যাঁতস্যাঁতে আলো-বাতাসহীন ঘরে বসবাসের কারণে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শরীরিক নানা সমস্যার কারণে আগে থেকেই হাটা চলায় সমস্যা হচ্ছিল ৭৩ বছর বয়সী বয়স্কা এই মহিলার। তবে এখন এসব সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
পরিবার, চিকিৎসক ও দলের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়া চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। কর্তৃপক্ষের অবহেলা, হয়রানী, অস্বাস্থ্যকর স্যাঁতসেতে বদ্ধ পরিবেশের মধ্যে তাঁকে দিনযাপন করতে হচ্ছে, যা একটি চরম নির্যাতন। এই নির্যাতন সহ্য করতে যেয়ে তাঁর পূর্বের অসুস্থতা এখন আরও গুরুতর রূপ ধারণ করেছে। কর্তৃপক্ষ তাঁকে সুচিকিৎসা হতে বঞ্চিত করেছে। তাঁকে বিশেষায়িত হাসপাতালের সুবিধা ও ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকেও বঞ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
বেগম জিয়ার চিকিৎসকরা জানান, তাঁর আর্থারাইটিসের ব্যথা, ফ্রোজেন শোল্ডার, হাত নড়াচড়া করতে পারেন না। হৃস্ট জয়েন্ট ফুলে গেছে, সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলোসিস এর জন্য কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা, এই ব্যথা হাত পর্যন্ত রেডিয়েট করে। হিপ-জয়েন্টেও ব্যথার মাত্রা প্রচণ্ড। ফলে শরীর অনেক অসুস্থ, তিনি পা তুলে ঠিক মতো হাঁটতেও পারেন না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক। বিশেষ করে তার মতো একজন অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা না দিয়ে একটি নির্জন কক্ষে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যেভাবে রাখা হয়েছে তাতে আমরা সত্যিই ভীষণ উদ্বিগ্ন। কারণ তিনি কারাবন্দি হওয়ার আগেই নানাবিধ অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তার নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন। যা তাকে কারাগারে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া ঠান্ডার কারণে এখন তার ব্যাথা আরও বেড়ে গেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। নজীরবিহীনভাবে তাঁকে কারাগারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। এর পেছনে প্রতিহিংসা পূরণের সাধ মেটানো হচ্ছে। তাঁর সুচিকিৎসার জন্য পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে কোন আবেদনই কারাকর্তৃপক্ষ রক্ষা করেনি, বরং সরকারের প্ররোচণায় বেগম জিয়ার অসুস্থতাকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেয়ারই চেষ্টা করেছে। অসুস্থতা সত্তে¡ও সেটিকে আমলে না নিয়ে বারবার আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। হয়রানী ও শারীরিকভাবে কষ্ট দেয়ার জন্যই সরকারের সাজানো অসত্য মামলায় বেগম জিয়াকে ঘনঘন আদালতে উপস্থিত করা হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে তাঁর সুচিকিৎসার দাবি করেন।
চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত ৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এক মাসের মতো সেখানে চিকিৎসার পর গত ৮ অক্টোবর তাকে আবার পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রæয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। ওই দিনই থেকেই তিনি কারাবন্দী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।