পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুলনার বাজারে হু-হু করে বাড়ছে চালের দাম। অথচ এখন চালের মৌসুম চলছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। চালের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা। সেই সাথে কেজিতে চার টাকা বেড়েছে আটার দাম। যার ফলে হিমশিম খেতে হচ্ছে খেটে খাওয়া নিম্নশ্রেণির মানুষদের।
আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অটোমিল মালিকরা এ অঞ্চল থেকে আমন ধান কিনে উত্তর অঞ্চলে পাঠানোর কারণে চালের সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই পাইকারি ও খুচরা বাজারে সমানভাবে হু-হু করে বাড়ছে চালের দাম। অথচ প্রশাসন নীরব-নির্বিকার। সাধারণ মানুষের দাবি, হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম অথচ কর্তৃপক্ষ একবোরেই নির্বিকার। সরকারের সঠিক মনিটরিং না থাকার কারণে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য চালের দাম বিক্রেতা তাদের ইচ্ছা মতো বাড়িয়ে চলেছেন।
খুচরা বিক্রেতারা মনে করেন, সরকারের সঠিক মনিটরিং না থাকার কারণে আমন মৌসুমে চালের দাম যে যেভাবে পারছে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে পাইকারি বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির খুচরা বাজারে প্রভাব পড়ছে।
তবে আড়ৎদাররা জানান, সরকারি খাদ্য গুদামে আমন মৌসুমের চাল ক্রয় করা শুরু হয়েছে। এর কারণে বাজারে চালের দাম বেড়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এ বছর কৃষকরা ধান বিক্রি না করায় চালের দাম বেড়ে গেছে।
নিউমার্কেট কাঁচা বাজার, জোড়াকল বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার ও বৈকালী কাঁচা বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী জানান, নির্বাচনের পর পর পরিবহন বন্ধ থাকায় চালের মূল্য বেড়ে যায়। পরবর্তীতে সরকারি আমন ধান ক্রয় মূল্য ৩৬ টাকা নির্ধারণ করায় এবং উত্তর অঞ্চলের অটো রাইস মিল মালিকরা এ অঞ্চল থেকে আমন ধান কিনে নিয়ে গেছে।
নিউমার্কেট কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী লাল মিয়া ও বাস্তহারা এলাকার ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী মামুন জানান, মোটা চাল কেজি প্রতি ৩০ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা, মিনিকেট ৪৬ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা, ইরি আতপ ২৮ টাকার পরিবর্তে ৩২ টাকা, ভারতীয় নোভা গোল্ড ৫২ টাকায় স্থিতিশীল এবং আটা ২৬ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাস্তহারা এলাকার বাসিন্দা মজনু মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাড়ি ভাড়ার আয় দিয়ে কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়। এ অবস্থায় পাগলা ঘোড়ার মতো চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।
নগরীর মুড়িপট্টি বস্তির আছিয়া বেগম বলেন, সারাদিন আয় দিয়ে কোনমতে সংসার চলে। গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে চাল-আটার দাম বাড়ছে তাতে করে ভাত খাওয়া দায় হয়ে পড়েছে।
অঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক ইকরামুল কবীর জানান, চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে ভোমরা ও বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বেসরকারি পর্যায় ৩৬ হাজার ১৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়। গত ৩ মাসে সরকারি পর্যায় কোন চাল আমদানি হচ্ছে না। খুলনা বিভাগের ২ হাজার ৪৮১টা রাইস মিলকে মূল্য স্থিতিশীল রাখয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সংসদ নির্বাচন পরবর্তী চালের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে ৪ কারণ উল্লেখ করে দক্ষিণাঞ্চলের দুই জেলা প্রশাসক খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের হাট বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। অটো রাইস মিল গুলোতে ধানের অবৈধ মজুত নেই। এ অঞ্চলের ২ হাজার ৪শ’ রাইস মিলের মালিকদের সাথে বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে জেলা প্রশাসকরা দফায় দফায় বৈঠক করেছে। চিকন চালের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
নগরীর বড় বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে মোটা চাল কেজিপ্রতি ২৫-২৬ থেকে বেড়ে ৩০-৩২ টাকায় এসে হয়েছে। আঠাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৪-৩৬ থেকে বেড়ে ৪০-৪২ টাকায়। মিনিকেট গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৪২-৪৪ টাকায়। এ সপ্তাহের বাজারদর হচ্ছে ৪৬-৪৮ টাকা।
চালের দাম কেন বৃদ্ধি পেয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, আড়ত থেকে বেশী দামে কিনতে হচ্ছে বলে চালের খুচরা মূল্য বেশী। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন খুচরা ব্যাবসায়ী জানান, খুলনাঞ্চলে চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে সিন্ডিকেটের অবদান রয়েছে। যারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চালের দাম বাড়িয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।