পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃক্ষের নাম ফলেই পরিচয়। ঠিক তেমনটি রঙ, ঘ্রাণ ও স্বাদে গুণগত ভালো মানের চায়ের কদর এবং দাম দুইই বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিম্নমানের চা হারাচ্ছে বাজার। সর্বশেষ গত ১৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক চা নিলাম বাজারের বিকিকিনিতে চায়ের গুণগত মানের চাহিদার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। চলতি মওসুমের ৩৭তম এই নিলামে ৪৫ হাজার ৯২ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৫৫ কেজি করে) পাতা চা এবং ৬ হাজার ৫০৮ ব্যাগ গুঁড়ো চা বিক্রির জন্য বাজারে আনা হয়। এরমধ্যে তুলনামূলক নিম্নমানের ৩৫ শতাংশ চা অবিক্রিত থেকে গেছে। আর ৩৫ ভাগ অবিক্রিত থেকে যায় নিম্নমানের গুঁড়ো চা।
চা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিবেশী ভারতসহ চা উৎপাদক বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চায়ের সার্বিক গুণগত মান সন্তোষজনক নয়। চায়ের গুণেমানে উৎকর্ষতায় কার্যকর উদ্যোগের অভাব রয়েছে। এরজন্য চা বাগান মালিক, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানী, সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আরও প্রয়োজন উন্নতমানের চা আবাদ এবং উন্নততর কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তিতে উৎপাদন ব্যবস্থা। অথচ এক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব প্রকট। তাছাড়া চায়ের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও আবাদ ও উৎপাদনে পিছিয়ে আছে দেশ।
এদিকে গত আন্তর্জাতিক নিলাম বাজারে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিটিউটের (বিটিআরআই) উন্নততর ও বিশেষায়িত চা বাগানে আবাদ ও উৎপাদিত সীমিত পরিমাণের খুব ভালো মানের চা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ৫৬০ টাকায়। এছাড়া আরও উচ্চমূল্যে ছিল ক্লিবডন জিবিওপি ক্লোন প্রতিকেজি ৩৪৬ টাকা, ফেনিংস ক্লোন ৩৫৩ টাকা দরে। অন্যদিকে নিম্নমানের চা কেজি ১৩০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। আরও নিম্নমানের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ চা অবিক্রিত অর্থাৎ বাজারছাড়া হয়েছে!
গত বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি ২০১৯ সালের শুরু থেকেই দেশে চায়ের বাজারদর বেশ চড়া রয়েছে। চলতি মওসুমের ৩৬তম আন্তর্জাতিক চা নিলাম বাজার পর্যন্ত চা পাতা বিক্রি হয়েছে মোট ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৬ কেজি। কেজিপ্রতি গড়মূল্য পড়েছে ২৭০টাকা ৯০ পয়সা। পূর্ববর্তী বছরের একই সময় পর্যন্ত চা বিক্রি হয় ৬ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৭৫৪ কেজি। তখন কেজিপ্রতি গড়মূল্য ছিল ২১৭ টাকা ৪১ পয়সা। অর্থাৎ গতবছরের তুলনায় এবারের চা নিলাম মওসুমে এ যাবৎ প্রায় ৩৭ লাখ কেজি চা চা পাতা বেশি বিক্রি হয়েছে। আর গড়মূল্য কেজিপ্রতি ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা বেশি পড়েছে।
তবে বিক্রিত চায়ের মধ্যে ৯৯ দশমিক ৯৭ শতাংশই অভ্যন্তরীণ বাজারে চলে গেছে, যেহেতু উৎপাদনের বিপরীতে দেশে ভোক্তাদের মাঝে চায়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মাত্র শূণ্য দশমিক ০৩ শতাংশ চা পাতা বিদেশে রফতানির জন্য নিলাম বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ‘রফতানি’ কাগজে-কলমে বলা হলেও তা মূলত কিনে নিচ্ছে অভ্যন্তরীণ চা প্যাকেটিয়াররা। দেশে চা বাগানগুলোর আমূল সংস্কারের মাধ্যমে আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং একই সঙ্গে চায়ের গুণগত উৎকর্ষতা বাড়ানোর বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে হারিয়ে যাওয়া রফতানি বাজার পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
বর্তমানে চায়ের উৎপাদন একটি সীমিত জায়গাতেই প্রতিবছর ঘুরপাক খাচ্ছে। চলতি চা বাজারজাত মওসুমের গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশে চা উৎপাদনের পরিমাণ ৬ কোটি ৬৭ লাখ কেজি। আগের বছরের একই সময় পর্যন্ত চা উৎপাদিত হয় ৬ কোটি ৭৭ লাখ কেজি। এবার ১০ লাখ কেজি চা কম উৎপাদিত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।