পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। পরবর্তী সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে গত নভেম্বরে জোটটির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। মঙ্গলবার সেই ব্রেক্সিট পরিকল্পনার খসড়াকে চুক্তি হিসেবে অনুমোদনের বিপক্ষে জোরালো অবস্থান নেয় নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স। চুক্তির পক্ষে ২০২ জন আর বিপক্ষে ৪৩২ জন ভোট দেওয়ায় ২৩০ ভোটের ব্যবধানে তা প্রত্যাখ্যাত হয়। বড় ব্যবধানে এমন পরাজয়ের পর গতকাল বুধবার আবার আস্থা ভোটের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী। খবর বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের ইতিহাসে এর আগে আর কোনো প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলকে এত বড় হার মেনে নিতে হয়নি। ভোটের পরপরই প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব তোলেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে এমন আস্থা ভোটকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।’ আস্থা ভোটে টিকে গেলে ব্রেক্সিট প্রশ্নে আরেকটি প্রস্তাব আগামী সোমবার সামনে আনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। তবে সেই প্রস্তাব কেমন হবে- সে বিষয়ে কোনো ধারণা কেউ দিতে পারেননি। তাতেও যদি এমপিরা মন না বদলান, তাহলে কয়েকটি বিকল্প তার সামনে থাকবে। এর একটি হল ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’। অর্থাৎ, ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবে, তবে কোনো চুক্তি হবে না। সেক্ষেত্রে বিচ্ছেদ হবে হুট করেই, বিচ্ছেদ পরবর্তী সম্পর্ক কেমন হবে, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কর কাঠামো কেমন হবে, ক‚টনৈতিক সম্পর্কের ধরণই বা কী হবে- সেসব বিষয় অনির্ধারিতই থেকে যাবে।
টেরিজা মে আস্থা ভোটে হেরে গেলে দেখা হবে, তার দল বিকল্প একটি সরকার গঠন করার মত অবস্থায় আছে কি না। সম্ভব হলে নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী নতুন সরকার গঠন করে ব্রেক্সিটের পুরনো লড়াইয়ে ফিরবে। আর কনজারভেটিভ পার্টি নতুন কোনো সরকার গঠন করতে না পারলে দেখা হবে বিরোধী দল থেকে কেউ সরকার গঠন করতে পারে কি না। সেক্ষেত্রে নতুন সরকারকে ১৪ দিনের মধ্যে আস্থার প্রমাণ দিতে হবে। কনজারভেটিভ পার্টির বদলে অন্য কোনো দল সরকার গঠন করলেও একই সমস্যা সামলাতে হবে তাদের। অন্য কোনো দল সরকারে না এলে ২৫ কার্যদিবস পর নতুন একটি সাধারণ নির্বাচন করতে হবে। যদিও টেরিজা মের বর্তমান সরকারের মেয়াদ ছিল ২০২২ সাল পর্যন্ত। সরকারে যারাই আসুক, তাদের সামনে আরও একটি বিকল্প আছে, আর সেটি হল আরেকটি গণভোট। ব্রিটেনের নাগরিকদের কাছে আবারও জানতে চাওয়া হবে- তারা সত্যিই ব্রেক্সিট চান কি না। সেজন্য ইইউর কাছে বাড়তি সময় চেয়ে নিতে হবে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যুক্তরাজ্য সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে শিগগিরই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবহিত করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন সংস্থাটির নেতারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক পরোক্ষভাবে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থেকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এক টুইটার বার্তায় টাস্ক লিখেছেন, ‘চুক্তির অনুমোদন পাওয়া অসম্ভব ব্যাপার হয়ে গেছে। চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটকেও কেউ সমর্থন দিতে চাচ্ছে না। তাহলে একমাত্র ইতিবাচক সমাধান কোনটি তা শেষ পর্যন্ত সাহস করে কে বলতে পারে?’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ ক্লদ জাঙ্কারও ভোটাভুটির ফল নিয়ে হতাশা জানিয়েছেন। পাশাপাশি ব্রিটেনকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।’ তিনি বলেন, পরবর্তী সম্পের্কর রুপরেখা সংক্রান্ত কোনও চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার সম্ভাবনা প্রবল হয়েছে। ইইউ’র ব্রেক্সিট সংক্রান্ত প্রধান আলোচক মাইকেল বার্নিয়ের বলেছেন, ব্রেক্সিট প্রশ্নে সংশয়ী ব্রিটিশ এমপি ও ভোটারদের কাছে চুক্তির গ্রহণযোগ্য বাড়াতে মে যদি ইইউ’র কাছ থেকে ছাড় চান, তখন জোটটি ‘ঐক্যবদ্ধ থাকবে’।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে টেরিজা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নতার পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় ২১ মাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।