পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : যাদের টার্গেট করা হতে পারে এমন ব্যক্তিত্বের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। ফিরিয়ে আনতে হবে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ও আইনের প্রতি আস্থা। তা করতে ব্যর্থ হলে দ্রুতগতিতে বাংলাদেশ অরাজকতার (খধষিবংংহবংং) দিকে চলে যাবে। এলজিবিটি অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান হত্যাকা-ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তদন্তে যে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের উচিত তাকে স্বাগত জানানো। এসব কথা বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে। ‘বাংলাদেশ’জ ডিসেন্ট ইনটু ললেসনেস’ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, ‘২০১৩ সাল থেকে কমপক্ষে ২০ জনকে হত্যা করেছে ইসলামী উগ্রপন্থীরা। বেশির ভাগকেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে যারা শিকারে পরিণত হয়েছেন তারা হলেন ব্লগার। তারা ইসলামের সমালোচনা করেছিলেন। তারপর দু’জন বিদেশী- একজন ইতালির এনজিওকর্মী ও একজন জাপানিকে গত বছর হত্যা করা হয়েছে। গত মাসে মাত্র নয় দিনের মধ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে।
এর জন্য অনেকাংশে দায়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং তার তিক্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ব্যাপক সহিংসতা ও বিরোধীদের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এ আদালত সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে টার্গেট করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের। এর সঙ্গে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, নির্যাতন ও গুম যোগ হয়েছে। এসব কিছু আইনের শাসনের ওপর যে আস্থা তা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ইতোমধ্যে মত প্রকাশ ও প্রেসের স্বাধীনতাকে দমন করেছে সরকার। গত মাসে নাস্তিক ব্লগারদের নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যদি কেউ আমাদের নবী সা: ও অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখে তাহলে তা মোটেও সহ্য করা হবে না’।
এ সবকিছুই উগ্রবাদকে উসকে দিচ্ছে। সঙ্ঘাত নিরসনে কাজ করা নিরপেক্ষ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ সতর্ক করেছে, কঠোর পদক্ষেপের কারণে সরকারের বৈধতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় সুবিধা পাচ্ছে সহিংস দলগুলোর শাখা ও উগ্রপন্থী গ্রুপগুলো। এ গ্রুপের মধ্যে রয়েছে আলকায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ। তারা গত ১৬ এপ্রিল আইনের ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ৩০ এপ্রিল হত্যা করা হয়েছে হিন্দু দর্জি নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারকে। এর দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট। যদিও সরকার বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের উপস্থিতির কথা অস্বীকার করেছে।
গত ২৫ এপ্রিল হত্যা করা হয়েছে এলজিবিটি অধিকার কর্মী ও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার এক বন্ধুকে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের উদ্দীপনা ও গর্ব, যার জন্য তারা সহনশীলতা, শান্তি ও বহুত্ববাদের রীতি চর্চা করেন, তা বহন করতেন জুলহাজ মান্নান। এসব হত্যাকা-ের তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন প্রস্তাব করেন জন কেরি।
এ সমর্থনকে স্বাগত জানানো উচিত শেখ হাসিনা সরকারের। খুব কম সংখ্যক হামলাকারীকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। সৃষ্টি করা হয়েছে দায়মুক্তির পরিবেশ। যাদের টার্গেট করা হতে পারে এমন ব্যক্তিত্বের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। ফিরিয়ে আনতে হবে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ও আইনের প্রতি আস্থা। তা করতে ব্যর্থ হলে দ্রুত গতিতে অরাজকতার (খধষিবংংহবংং) দিকে চলে যাবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।