পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মন্ত্রিসভায় চমকের পর এবার প্রশাসনে রদবদলেও ‘চমক’ থাকছে। নতুন সরকার এবং মন্ত্রণালয়ের কাজে গতিশীলতা আনতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার পদে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য প্রশাসনে সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং মাঠ প্রশাসনে জনগণের হয়রানি বন্ধ করে সেবা প্রদান। প্রশাসনে সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে আগামী সোমবার প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকের এ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানা গেছে। তবে কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনে যারা ক্ষমতাসীন দলকে জিতিয়ে দেয়ায় অধিক ভূমিকা রেখেছেন, রদবদলে তাদের অধিক মূল্যায়ন করা হবে। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসন বদলি ও রদবদল এবং পদোন্নতি হচ্ছে রুটিন কাজ। নতুন সরকার গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনে সচিব পদে কখন কাকে কোথায় বদলি করা হবে তা বলা যাবে না।
সূত্র জানায়, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এই বদলি মূলত পুরস্কার বদলি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মাঠ প্রশাসনের যে সকল কর্মকর্তা কাজ করেছেন তাদেরকে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে ভালো ভালো জায়গায় বদলি ও পদোন্নতি দেয়া হবে। তবে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হচ্ছে। সেটি না হলে স্থানীয় সরকার বিভাগ মন্ত্রণালয়ে দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ ছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব পদে রদবদল করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে না হলে চলতি মাসের শেষ দিকে মাঠ প্রশাসনে রদবদল শুরু হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইনকিলাবকে বলেন, আগামী সপ্তাহে না হলে এ মাসে অনেক মন্ত্রণালয়েরর সচিব, জেলা প্রশাসক ও উপজেলায় ইউএনও পদেও পরিবর্তন করা হবে।
জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব আলী ইমাম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচনের পর সরকার মাঠ প্রশাসনকে নিজেদের দখলে রাখতে চায়। বর্তমান সরকারও সেটা করবে। মূলত যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন নতুন করে প্রশাসন সাজানো হয়। এবারো তো হবে না, কারণ যারা ক্ষমতায় ছিল তারাই এসেছে ক্ষমতায়। হয়তো কিছু সচিবকে এক মন্ত্রণালয় থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেবেন। এ ছাড়া যারা সংসদ নির্বাচনে বেশি কাজ করেছেন তাদের ভালো জায়গায় বসাতে পারে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাঠ প্রশাসনে বর্তমানে সচিব ৭৫ জন, অতিরিক্ত সচিব ৫৫৫ জন, যুগ্ম-সচিব ৭৪৫ জন এবং উপসচিব রয়েছেন এক হাজার ৮৪৫ জন। এ ছাড়াও সিনিয়র সহকারী সচিব এক হাজার ২৯০ জন, সহকারী সচিব এক হাজার ৪৩৩ জন, বিভাগীয় কমিশনার আটজন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ১৬ জন, ডিসি ৬৪ জন, এডিসি ২২৩ জন এবং ইউএনও রয়েছেন ৪৯৬ জন। ৭ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে সচিবালয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে দাপ্তরিক কাজ শুরু করেছেন এক ঝাঁক নতুন মুখ। নতুন ও পুরনোদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের দেশ পরিচালনার প্রধান লক্ষ্য, সরকারকে দল থেকে আলাদা করে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি প্রশাসনে সুশাসন নিশ্চিত ও দুর্নীতিমুক্ত করে গড়ে তোলা।
নির্বাচনে বড় বিজয়কে সামনে রেখে সারা দেশের মাঠ প্রশাসন ঢেলে সাজানো শুরু করবে সরকার। প্রথমে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বড় বড় মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব, জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার পদে ব্যাপক রদবল। ইতোমধ্যে ৪৬ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে একান্ত সচিব পদে নিয়োগ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের দুর্নীতি বন্ধে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা তাদের পছন্দের কর্মকর্তাদের একান্ত সচিব নিয়োগ দিতেন। সেটি এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বন্ধ করেছে। তবে এপিএস নিয়োগ দিতে পারবে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা। তাদেরকে এবার নজরদারিতে রাখবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গত ৮ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় উপসচিব পদমর্যাদার এ কর্মকর্তাদের মন্ত্রীদের একান্ত সচিব পদে নিয়োগ দিয়েছে।
জনপ্রশসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিগত প্রায় ৯ বছরের উন্নয়ন চিত্র, মেগা প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, নারীর ক্ষমতায়ন, পদ্মসেতু ও মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, শিল্পখাতে সমৃদ্ধি, জাতীয় প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচিসহ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ও ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের চিত্র, সরকার প্রধানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেনি সেই মন্ত্রণালয়ের ওপর নজর রাখছে সরকার।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রশাসনে সচিব পদে কয়েকজনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আবার বেশ কয়েকজন সচিব অবসরে গেছেন। তবে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে না হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব করা হচ্ছে। এ ছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অনেক সচিব পদে রদবদল করা হতে পারে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ডিসি ও জেলা পুলিশ সুপার পদে পরিবর্তন করা হচ্ছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচন শেষ এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখা। সরকারের মূল লক্ষ্য একটি প্রশাসনে সুশাসন ও দুর্নীতি বন্ধ এবং মাঠ প্রশাসনে জনগণের হয়রানি বন্ধ করে সেবা প্রদান করা।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় মধ্যম আয়ের দেশ হতে শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ এক উন্নত দেশ পরিণত করার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা গ্রহণ করেন রূপকল্প ২০৪১। প্রশাসন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সম্প্রতি মাঠ প্রশাসনের বড় ধরনের রদবদলের কারণে ধারণা করছেন, সরকার হয়তো আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যেই মাঠ প্রশাসন গুছিয়ে নিচ্ছে। অতীতে সকল সংসদ নির্বাচনের আগেই মাঠ প্রশাসনকে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের বদলি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটিকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনার অবকাশ নেই।
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। সংসদ সদস্যদের শপথের পর শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার শপথের পর নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী। এদের মধ্যে রয়েছেন চারজন নারী এবারের মন্ত্রিসভায়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবেও নতুন মন্ত্রিসভায় চমক দিয়েছেন। পাঁচজন রয়েছেন যারা প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায়। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে পুরনো মন্ত্রিসভার প্রায় দুই ডজন জাঁদরেল নেতাসহ ৩৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন। মন্ত্রিসভায় চমকের মতোই প্রশাসনে ঊর্ধ্বতন পদে রদবদলেও চমক থাকছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।