পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, মিল মালিকরা কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে মিল মালিকদের একটি পক্ষ দাবি করছেন চালের দাম স্বাভাবিক অবস্থাতেই রয়েছে। তারা সরকারের নির্ধারিত দামেই চাল বিক্রি করছেন। আর ব্যবসায়ীদের একপক্ষ বলছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে স্বাভাবিক হবে। কারণ বর্তমানে চালের কোনো ঘাটতি নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল প্রান্তিকে চালের দাম স্বাভাবিক ছিল। কিন্ত রাজধানীতে এসেই দাম বাড়ছে চালের। এ বিষয়ে নওগাঁর চাল ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন প্রশ্ন করে জানান, শুক্রবার নওগাঁয় মিনিকেট চাল ৪৭ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হলেও রাজধানীতে এ চাল কিভাবে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হয় এটা খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি আরও জানান, নির্বাচনের কারণে সরবরাহ ঘাটতি থাকায় দুই তিন দিন চালের দাম সামান্য বেড়েছিল। এটা সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা। তবে মোটা চালের কোনো দাম বাড়েনি। বর্তমানে মিলে ৩০ টাকা ৬০ পয়সা দামে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
চালকল মালিকদেও কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ অটোমিলার অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী খান বলেন, মিলগুলোতে চালের দাম বাড়েনি। নির্বাচনের সময় কিছু কিছু জায়গায় চিকন চালের দাম বেড়েছিল। তাও সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা। তবে কোনো মিলে মোটা চালের দাম বাড়েনি বলে জানান তিনি।
এদিকে ঢাকার বাবুবাজার-বাদামতলী আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি নিজাম উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের সময় বিভিন্ন কারণে মোটা ও চিকন চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশে বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন খাদ্য মজুদ রয়েছে। কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও কেন চালের দাম বাড়ছে আমরা তা জানি না। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পর্যাপ্ত মজুদও আছে। খাদ্যে কোনো সমস্যা নেই। যদি কোনো অসৎ উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি নিধর সাহা বলেন, মোকামে গত বৃহস্পতিবারের চিকন চালের মূল্য ছিল কেজি প্রতি ৪৭ টাকা ৮০ পয়সা আর মোটা চালের দাম ২৮ থেকে ৩০ টাকা। চিকন চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এর প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন চিকন চালের মৌসুম নয়। এপ্রিল মাসে চিকন ধানের মৌসুম এবং তখন চালও পর্যাপ্ত পাওয়া যাবে। তাই চিকন চালের দাম কিছুটা বাড়া স্বাভাবিক। মোকাম থেকে বা নদীর ওপার থেকে চাল রাজধানীতে আনতে মোকামের মূল্যের সঙ্গে ৫ থেকে ৬ টাকা পার্থক্য হওয়া স্বাভাবিক।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, বর্তমানে খুচরা বাজারে ভালো মানের মিনিকেট চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা, যা নির্বাচনের আগে ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৬ টাকা।
মাঝারি মানের চালের দাম সব থেকে বেশি বেড়েছে। বর্তমানে মাঝারি মানের চাল বিআর-২৮ ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৩৮ থেকে ৪২ টাকা। কেজিতে দাম বেড়েছে ৬ টাকা। কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মোটা চাল। যা নির্বাচনের আগে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
তালতলা মার্কেটের রাইস স্টোরের ব্যবসায়ীরা বলেন, তিন-চারদিন থেকে চালের দাম বেড়েছে। প্রথমে রশিদ, এরপর একে একে সব কোম্পানি চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ২৬০০ থেকে ২৬৫০ টাকা। এখন সেই চাল বিক্রি করছি ২৭৫০ টাকায়। ১৯৫০ টাকা বিক্রি করা বিআর-২৮ চালের বস্তা এখন বিক্রি করছি ২২৫০ টাকায়। তারা আরও বলেন, হঠাৎ কি কারণে চালের দাম এমন বাড়লো কিছুই বুঝতে পারছি না। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর আগে চালের দামের সবচেয়ে অস্বস্তিকর সময় ছিল ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বও অক্টোবর মাস। ওই সময় খুচরা বাজারে মোটা চালের দও কেজিপ্রতি ৫০ টাকায় উঠেছিল। আর সরু চাল উঠেছিল কেজিপ্রতি ৬৫ টাকায়। এরপর বাড়তি আমদানি ও ২০১৮ সালের শুরুতে বোরোর মৌসুমের ভালো ফলনে চালের দাম কমে।
গত বৃহস্পতিবার খাদ্য অধিদপ্তরে খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চাল ব্যবসায়ী সমিতি, আড়তদার ও অটো চাল মিল মালিকদের মতবিনিয়ময় সভায় সদ্য দায়িত্ব নেয়া খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাজারে অযৌক্তিক কারণে অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম বৃদ্ধিও কোনো সুযোগ নেই। দেশ হিসেবে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি অনেক আগে। ইতোমধ্যে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি চাল ও খাদ্য শস্য মজুদ আছে। তারপরও চালের দাম বাড়বে কেন?
চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, এখন চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। বন্যা, খরা, বৃষ্টি কোন কিছুই হয়নি। সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। তাহলে কেন চালের দাম বাড়বে। চালের দাম বাড়ার যদি কোনো কারণ থাকে তাহলো সিন্ডিকেট। মিল মালিকেরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, চালের দাম বাড়ানোর এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা রশিদ (রশিদ এগ্রো ফুট প্রডাক্টস লিমিটেডের মালিক মো. আব্দুর রশিদ)। কোনো কারণ ছাড়াই নির্বাচনের পর রশিদের চালের দাম বস্তায় বাড়ানো হয়েছে ৩০০ টাকা। দেশে কি এমন ঘটল যে হঠাৎ করে চালের দাম এমন বাড়িয়ে দিতে হবে। চালের দাম স্বাভাবিক করতে হলে মিল মালিকদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সেই সঙ্গে বাজারে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে।
চালের দাম বাড়ার জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আজিজ। তবে সার্বিকভাবে দেশে চালের কোনো সংকট নেই। আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে চালের দাম কমে যাবে। ইতোমধ্যে আমরা হাসকি চালের দাম বস্তায় প্রায় ২০০ টাকা কমিয়ে দিয়েছি। ঢাকার বাজারে দাম কমতে হয় তো দুই-একদিন সময় লাগবে বলেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।