Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকরে প্রস্তুত কারা কর্তৃপক্ষ

প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৩ পিএম, ৯ মে, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : ফাঁসি কার্যকরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও যুদ্ধাপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকরের সব প্রস্তুতি কারা কর্তৃপক্ষ সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। জামায়াত আমিরের রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর এখন বিধি অনুযায়ীই দন্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। কারাকর্তৃপক্ষ বলেছে মঞ্চ প্রস্তুত। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এখন প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগই কেবল রয়েছে নিজামীর। তিনি তা না চাইলে দন্ড কার্যকরের পদক্ষেপ নেবে কারা কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজের পর গত রোববার গভীর রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে নিজামীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। এই কারাগারেই অন্য যুদ্ধাপরাধীদের দ-াদেশ হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে দ- কার্যকর করা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, কাশিমপুর থেকে ঢাকা কারাগারে আনার মানে এই নয় যে এখনই ফাঁসির দ- কার্যকর হবে। যে ফরমালিটিজ আছেÑতার (নিজামীর) দ-াদেশ কার্যকরে অনেক নিয়ম-কানুন আছে। সেগুলো পালন করেই রায় কার্যকর করা হবে। তিনি দ-াদেশ কার্যকরের সব প্রস্তুতির কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বক্তব্য দেয়ার আগেই রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতিরা সই করেন। তার অনুষ্ঠানের পর সন্ধ্যায় সেই রায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। কারা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, তাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ রায় এসে পৌঁছেছে। জামায়াত আমিরের মৃত্যুদ- কার্যকর না করতে বহির্বিশ্ব থেকে কোনো ধরনের চাপ বা হুমকি রয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, কোনো ধরনের হুমকি বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশে হাল ধরেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাজেই কোনো ধরনের থ্রেট-ট্রেট নেই আমাদের বাংলাদেশে। আমরা সঠিকভাবে চলছি। এর আগে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল তার কার্যালয়ে বলেন, এর মধ্য দিয়ে নিজামীর বিচারের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলো। তিনি জানান, জেল কর্তৃপক্ষ তাকে জানাবেন তিনি যদি প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চান, তাহলে তিনি তা করতে পারেন। যদি তিনি প্রাণভিক্ষা না চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এক্ষেত্রে পরবর্তী কার্যক্রম চলবে। অর্থাৎ এই মৃত্যুদ- কার্যকরে কারা কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেবে। প্রাণ ভিক্ষা চাওয়ার সময়সীমার প্রশ্নে মাহবুবে আলম বলেন, তাকে জানানো হবে এবং জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে একটি যুক্তিসঙ্গত সময় হয়ত তাকে দেওয়া হবে। এক দিনের সময় দেওয়া হতে পারে, পিটিশান (মার্সি পিটিশান) লেখার জন্য বা এটাকে প্রস্তুত করার জন্য যতটুকু সময় দরকার। তবে এর আগে নিজামীর সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করে আসার পর জামায়াতের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মতিউর রহমানা নিজামী প্রাণভিক্ষা চাইবেন না। প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি দলীয় ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রাণভিক্ষা না চাইলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটানো হবে না। ইতোমধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রায় কারাগারে পৌঁছেছে। এখন কারা কর্তৃপক্ষ দ-প্রাপ্ত আসামি মতিউর রহমান নিজামীকে এই রায় পড়ে শুনিয়ে জানতে চাইবেন, তিনি কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না। সব বিচারিক প্রক্রিয়া নিষ্পত্তির পর মাওলানা নিজামীর সামনে এখন কেবল ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগই বাকি। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রিভিউ খারিজের রায়ে বিচারকদের স্বাক্ষরের পর তা প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্ট। ২২ পৃষ্ঠার ওই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী এরপর তা পৌঁছে দেন এ মামলার বিচারিক আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এ প্রসঙ্গে অরুণাভ চক্রবর্তী বলেন, রায়ের তিনটি অনুলিপি দেওয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। সেগুলো ট্রাইব্যুনাল, কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুই পক্ষের আইনজীবীকেও অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার শহীদুল আলম ঝিনুক সাংবাদিকদের জানান, রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। এতে সই হওয়ার পর ওই আদেশ ও রায়ের কপি কারা কতৃপক্ষ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ নিজামীর আবেদন খারিজ করে দেন। আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ গত ৬ জানুয়ারি নিজামীর আপিলের রায় ঘোষণা করেন। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া প্রাণদ-ের সাজাই তাতে বহাল থাকে।
সুত্র জানায়, রিভিউ রায় লিখেছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। এর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আপিলের রায়ে ২, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে হত্যা, ধর্ষণ ও বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল থাকে। রিভিউ খারিজ হওয়ায় সেই দ-ই এখন তার প্রাপ্য। ১, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগ থেকে নিজামীকে খালাস দেন আপিল বিভাগ। আর যাবজ্জীবন কারাদ-ের সাজা বহাল রাখা হয় ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে। রিভিউ আবেদনে এই দুটি অভিযোগের বিষয়ে কোনো যুক্তি দেননি নিজামীর আইনজীবীরা। রায়ের শেষ অংশে বলা হয়েছে, ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে নিজামী দোষী সাব্যস্ত হলেও তার আইনজীবীরা এর বিরুদ্ধে কোনো যুক্তি না দিয়ে কার্যত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় তার সম্পৃক্ততা মেনে নিয়েছেন। অথচ আসামিপক্ষ দ- কমানোর কথা বলেছে, যদিও আবেদনকারী সেসব অপরাধে সম্পৃক্ততার দায় এড়াতে পারেন না। আমরা এই আবেদনের কোনো সারবত্তা খুঁজে পাইনি। আবেদনটি খারিজ করা হল।
দ-প্রাপ্ত জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী একাত্তরে ছিলেন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আলবদর বাহিনীর প্রধান। তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বেই যে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল, এই মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়। সুপ্রিম কোর্ট ১৫ মার্চ আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করলে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে। পরদিন তা পড়ে শোনানো হয় দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা নিজামীকে। এরপর তিনি রিভিউ আবেদন করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিজামীর মৃত্যুদন্ড কার্যকরে প্রস্তুত কারা কর্তৃপক্ষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->