Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা উচিত খালেদার- প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৬ পিএম, ৯ মে, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের অ্যাকাউন্টে টাকার তথ্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রমাণ করা উচিত। বেগম জিয়া সম্প্রতি জয়ের অ্যাকাউন্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলার রয়েছে বলে অভিযোগ করে যাচ্ছেন। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রসঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের কাছে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। বিশ্বব্যাংক অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর এফবিআই আমার পরিবারের সকল সদস্যের টাকার অনুসন্ধান করে কোনো তথ্য পায়নি। এ সংক্রান্ত এফবিআইএর রিপোর্ট সম্প্রতি শফিক রেহমানের বাসায় পাওয়া গেছে। বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রিসভার একজন সদস্য এ তথ্য জানান।
এছাড়া মন্ত্রিসভায় সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন অনুমোদন সংক্রান্ত এক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আইসিডিডিআরবিকে সরকারের অর্থায়নে একটি ভবন নির্মাণ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ওই ভবনটি মাত্র এক টাকার বিনিময়ে ব্র্যাককে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে বিস্তারিত জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিষয়টি জানেন বলে জানান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে জানান, আমি বিষয়টি জানি, তবে কাজটি ঠিক হয়নি। আমরা ভবনটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেয়ার জন্য বলেছি।
সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন অনুমোদন
‘সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করালে খসড়া আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।
ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ১৯৭৭ ও ১৯৭৮ সালের দুটি আইন ছিল বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ দুটি আইন একত্রিত করে নতুন আইন করা হয়েছে। সব ধরনের সংক্রামক রোগ এ আইনের আওতায় আনা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি ও জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবেলা করাসহ স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ঝুঁকি কমাতে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য নতুন এ আইনটি করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইনে সংক্রামক রোগের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, জীবানুঘটিত রোগ কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যানথ্রাক্স, ফ্লু, এভিয়ান ফ্লু, নিপাহ, জলাতঙ্ক, শ্বাসনালির সংক্রমণ, এইচআইভি, ভাইরাল হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, মেননিজাইটস; এ ছাড়া নতুনভাবে যেসব সংক্রামক রোগ আবিষ্কৃত হবে সেগুলো।
সংক্রামক রোগে আক্রান্তদের জন্য কোয়ারেনটাইন (সঙ্গরোধ), পৃথকীকরণসহ বিভিন্ন ব্যবস্থার কথাও আইনে রয়েছে বলে জানান তিনি।
আইনের ধারা লঙ্ঘনে শাস্তির বিধান রয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, আইনে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট স্থানে শারীরিক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। এটা কেউ না মানলে বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাকে বছরের কারাদ- বা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী। তবে শাস্তির বিষয়গুলো আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) সময় চূড়ান্ত করা হবে।
আইন অনুযায়ী সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কেউ অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে এয়ারপোর্টেই তাদের চিহ্নিত করা হবে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, চিহ্নিত সংক্রামক রোগে আক্রান্তদের আলাদা করে রাখা হবে। বন্দরগুলোতে এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা খসড়া আইনে রয়েছে।
ক্যাডেট কলেজ আইন
এ ছাড়া বৈঠকে ‘ক্যাডেট কলেজ আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৬৪ সালের অর্ডিন্যান্সের (অধ্যাদেশ) অধীনে ক্যাডেট কলেজগুলো চলছিল। ওই অধ্যাদেশটি পাকিস্তান শাসনামলের, এ ছাড়া আইনগুলো ইংরেজি থেকে বাংলা করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অধ্যাদেশটি মূলত বাংলায় রূপান্তর করে নতুন আইনটি করা হয়েছে।
দেশে ১২টি সরকারি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কলেজগুলো পরিচালনায় দুটি কমিটি কাজ করে। একটি কেন্দ্রীয় পরিষদ, আরেকটি কলেজ পরিচালনা পরিষদ। এসব কিছুই প্রায় পুরোনো আইনের মতো রয়েছে।
দ্বিগুণ হলো ঢাকা মহানগরের আয়তন
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নতুন করে মোট ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত করেছে সরকার, যার মধ্য দিয়ে এই মহানগরীর আয়তন বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন পায়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১৬টি ইউনিয়নকে ঢাকা মহানগরের সঙ্গে একত্র করে দেওয়া হয়েছে। আটটি উত্তরে, আটটি দক্ষিণে। ঢাকা উত্তরে যুক্ত হওয়া আট ইউনিয়নÑবেরাইদ, বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও ডুমনি (খিলক্ষেত)। ঢাকা দক্ষিণে যুক্ত হওয়া আট ইউনিয়নÑশ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মা-া, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ। নতুন করে ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত হওয়ায় ঢাকা মহানগরের আয়তন ১২৯ বর্গ কিলোমিটারের থেকে বেড়ে ২৭০ বর্গকিলোমিটার হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, এই ১৬টি ইউনিয়নে ২০১১ সালের হিসেবে ১০ লাখের মতো জনসংখ্যা থাকার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা আরও বেশি হবে।
নতুন উপজেলা হচ্ছে কর্ণফুলী
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কর্ণফুলী থানাকে উপজেলা করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার)। নিকারের বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব বলেন, কর্ণফুলী উপজেলায় এক লাখ ৭২ হাজার মানুষ বসবাস করেন। এর আগে দেশে ৪৮৯টি উপজেলা ছিল। কর্ণফুলী নতুন উপজেলা হলে দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা দাঁড়াবে ৪৯০টি।
নূরজাহান বেগমের আশু রোগমুক্তি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল গতকাল সোমবার দুপুরে এখানে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ নূরজাহান বেগমকে দেখতে যান। শাকিল দেশের সবচেয়ে প্রবীণ নারী সাংবাদিক ‘বেগম’ পত্রিকার সম্পাদক নূরজাহান বেগমের পাশে কিছু সময় অবস্থান করেন এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। নূরজাহান বেগমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী অবহিত করেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বেগম’ সম্পাদকের অসুস্থতার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। বার্ধক্যজনিত জটিলতায় নূরজাহান বেগম এখন স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জনপ্রিয় পত্রিকা ‘সওগাত’ সম্পাদক বিখ্যাত সাংবাদিক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের কন্যা নূরজাহান ‘বেগম’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন।



 

Show all comments
  • আকবর ১০ মে, ২০১৬, ১:১১ পিএম says : 1
    কর্ণফুলীবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা উচিত খালেদার- প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ