পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় তার সরকারের বিদেশনীতির হাতকে আরও শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বিষয়গুলো পরিচালনায় শেখ হাসিনার অবস্থান আরও দৃঢ় হচ্ছে। জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ এমনটাই মনে করছে।
সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ঠিক এ কারণেই আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয়বার ও নিজের চতুর্থদফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরপরই শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। শ্রীরাম চাউলিয়া নামে নিবন্ধকার লিখেছেন, বিশ্বের প্রভাবশালী এই দুই নেতা, শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে এতটুকু বিলম্ব করেননি।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের ক্ষেত্রে চীন ও ভারত রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থানে। সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ এমন এক মধ্যমপন্থা নিয়ে এগুচ্ছে, যা ইন্দো-চীন ঠান্ডাযুদ্ধে স্থিরতা এনে দিতে পারে। তিনি লিখেছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ আরও অনিশ্চয়তার মুখ দেখলেও শেখ হাসিনার এই বিপুল নির্বাচনী বিজয় নয়াদিল্লিও বেইজিংকে হ্যান্ডল করার সক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে।
ভারতের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে সোনালি সুসম্পর্ক তার। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ, সহযোগিতার সম্পর্ক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক চেতনার কারণে ভারতেও শেখ হাসিনা অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব।
ইসলামি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে অনিবার্য হিসেবে দেখে নয়াদিল্লি। বিশেষ করে, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করার পর ভারতকেও কিছু সন্ত্রাসী হামলার মুখে পড়তে হয়। যা পরিচালনায় ছিল বাংলাদেশভিত্তিক ও পাকিস্তান-সমর্থিত হরকাতুল-জিহাদ আল-ইসলামি (হুজি)’র মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের গোটা ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটারজুড়েই সন্ত্রাস শুরু করেছিল এই হুজি।এদের কঠোর হাতে দমন করেছেন শেখ হাসিনা।
নিবন্ধকার লিখেছেন, বিরোধী পক্ষের ওপর শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নিষ্পেষণে ভারত বিচলিত হলেও বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চার ব্যাপারে সবসময়ই আগ্রহী। সে কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনটি যেন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়, সে ব্যাপারে নয়াদিল্লি পর্দার আড়ালে থেকে চেষ্টা চালিয়েছে।
একনায়কতন্ত্রের চীন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে অনেকাংশেই সন্তুষ্ট। বৈদেশিক অর্থসহায়তা অর্জনের ক্ষেত্রে দেশটি শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী কঠোর নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেয়। এই মূহূর্তে বাংলাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনায় রয়েছে চীন। তা সম্পন্ন হলে চীনের কাছ থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগের অঙ্কটি পাবে বাংলাদেশ। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর আওতায় পাকিস্তানকে ৬২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি রয়েছে চীনের।
অন্যদিকে, বাংলাদেশকে বর্তমানে ৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। তার প্রায় চারগুণ বেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসছে চীন। আর বিআরআই বাস্তবায়নে চীনেরও এখন বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। ভারত সাগরে পৌঁছাতে বঙ্গোপসাগরের মধ্যাঞ্চলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকেই ব্যবহার করতে হবে তাদের। এছাড়া চীনের অর্থায়নে মিয়ানমারে তৈরি কায়ুকপু বন্দর এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন চীন-নির্মিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক উভয়ই চীনাসামগ্রী পরিবহন-বিপণনে ভূমিকা রাখছে।
এদিকে ভারত যেন নাখোশ না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনে চীনা প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। বরং অনতিদূরে মাতারবাড়ী বন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তার কাজ তুলে দিয়েছেন জাপানের হাতে। নির্মাণ শেষ হলে এই মাতারবাড়ী পোর্ট হয়ে উঠবে জাপান-ভারত এশিয়া আফ্রিকা গ্রোথ করিডোর (এএজিসি) এর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
চীনের সঙ্গে শেখ হাসিনার এই যে ভারসাম্যের অর্থনৈতিক কূটনীতি, তা ভারতকে কিছুটা শান্ত রেখেছে। অন্য দুই প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের চীনাপ্রীতির তুলনায় তা অনেকাংশেই মন্দের ভালো। বাংলাদেশ এখন চীন থেকে যা প্রয়োজন তা নিচ্ছে বটে, তবে তার জন্য দেশের চাবিকাঠী হাতে তুলে দিচ্ছে না। আর এবারের নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর শেখ হাসিনার দরকষাকষির হাত আরও দৃঢ় হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।