পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভূমিধস বিজয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট। এই বিরাট বিজয় শেখ হাসিনাকে টানা তৃতীয় মেয়াদ ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু বিরোধীরা এ নির্বাচনের ফলকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করে নতুন নির্বাচন দাবি করেছে। নির্বাচনের দিনে সহিংসতা ও নানা রকম অনিয়মের বিষয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা শক্তিগুলো নিন্দা জানিয়েছে। এসব সহিংসতা ও অনিয়মের ফলে নির্বাচনী প্রচারণা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিরোধীদের মধ্যে ক্ষোভের জ্বালা আরো বাড়ছে।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের শিখরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এমন সময়ে রাজনৈতিক মেরুকরণকে প্রশমিত করা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা বিশেষত বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত বাংলাদেশের, যেহেতু এখানে পক্ষপাতমূলক সংঘাত আরো অবনতির দিকে যেতে পারে। ১৯৭২ সালে কার্যকর হওয়া বাংলাদেশের সংবিধানে বহুদলীয় সংসদীয় ব্যবস্থা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে এখানে প্রথম নির্বাচন হয়েছিল ১৯৭৩ সালের মার্চে। তখন থেকেই এ দেশটি উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের মতোই- এখানে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা ও সংঘাতময় অবস্থায় জাতীয় নির্বাচন মাঝে মাঝেই বিতর্কের মধ্যে পড়ে।
পশ্চিমা গণতন্ত্রের মধ্যে এ যাবত যেমনটা দেখা গেছে তার চেয়ে বেশি ফাঁকফোকর দৃশ্যমান হয়েছে সংসদীয় ব্যবস্থায়। জাতীয় স্বার্থের চেয়ে দলগত সুবিধা পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য প্রতিযোগিতা করে রাজনৈতিক দলগুলো। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু যেমন শক্তিশালী সরকার, কার্যকর সুশাসন ও সঙ্গতিপূর্ণ নীতি রয়েছে, সেখানে বহুদলীয় ব্যবস্থা অধিকতর নেতিবাচক প্রভাব রাখে।
যদি সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা না যায়, তাহলে এই ব্যবস্থা সংঘাতের সৃষ্টি করতে পারে, দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বহুদলীয় ব্যবস্থার নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী বোঝাপড়া গড়ে তুলতে হবে এবং তার মাধ্যমে বিভক্তি কমাতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে সংঘাত পরিহার করে, সম্মিলিতভাবে দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে হবে এখন হাসিনাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। টানা তৃতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনার ওপর ভোটাররা তাদের আস্থা রেখেছেন যেসব কারণে এগুলো হলো তার মূল। প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে দ্রুততার সঙ্গে গত বছর শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে শতকরা প্রায় ৭.৯ ভাগ। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে শেখ হাসিনা আগামী ৫ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ১০ ভাগে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বলেছেন, দারিদ্র্যের হার ২১.৮ ভাগ থেকে কমিয়ে ২০২০ সালের মধ্যে নামিয়ে আনবেন শতকরা ৯ ভাগে। সৃষ্টি করবেন অধিক কর্মসংস্থান। এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাধ্যতামূলক।
এটা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখেছে শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ। চীনের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাং নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বে সহযোগিতামূলক কাজ সামনে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায় চীন।
বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ। অবকাঠামো খাতে ১০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন। এতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। মানুষের জীবিকায় সহায়তা করবে এবং স্থানীয় মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প নিয়ে যে রাজনৈতিক ঝুঁকি রয়েছে তা কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে স্থিতিশীল রাজনীতি। পক্ষপাতিত্বমূলক সংঘাত কমানোও এতে সহায়ক হবে। রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকদের সমর্থন জেতার সবচেয়ে কার্যকর দিক রাজনৈতিক লড়াই নয়, জনমানুষের ভাগ্যের উন্নতি করা।
সূত্র: দ্য গ্লোবাল টাইমস (চীন)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।