পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নতুন মন্ত্রিসভায় ‘চমক’ থাকবে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। বাস্তবেও নতুন মন্ত্রিসভায় চমক থাকছে। টানা তৃতীয়বার এবং চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা আজ নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। বঙ্গভবনে ২৪ জন পূর্ণ মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ জন উপমন্ত্রীকে শপথ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৪ জন নারী। আর ৫ জন রয়েছেন যারা প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করছেন। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে পুরনো মন্ত্রিসভার প্রায় দুই ডজন জাঁদরেল নেতাসহ ৩৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন। বিশেষ করে বামপন্থী হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালীদের কাউকেই নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়াচ্ছে ৪৭ জন। তাদের মধ্যে ২৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৯ জনই নতুন মুখ। বিদায়ী সরকারে না থাকলেও আগে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ৩ জনকে শেখ হাসিনা ফিরিয়ে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দিচ্ছেন। আর গত সরকারের সময় দু’জন প্রতিমন্ত্রীকে মন্ত্রী করা হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন ১৯ জন। তাদের মধ্যে ৩ জন পুরনো। আর বাকি ১৬ জনই নতুন মুখ। এছাড়াও তিন নতুন মুখ এসেছে তিন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্বে। এর মধ্যে ৩ জন টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী হচ্ছেন।
বঙ্গভবনে আজ বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবেন। এরই মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভায় যারা জায়গা পেয়েছেন তাদের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শপথ নেয়ার জন্য গতকাল দুপুরে টেলিফোন করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন। প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদ বেলা সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পর্যায়ক্রমে শপথ পড়াবেন। শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিনেও ব্যস্ত সময় পার করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের বিজয়ী সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। এরপর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এবার মন্ত্রী হয়েছেন ২৪ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ এবং উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ৩ জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই থাকছে ৬ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকছে ৬ মন্ত্রণালয়। সেগুলো হলো- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, এরই মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভায় যারা জায়গা পেতে যাচ্ছেন তাদের শপথ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাম আউট ছাত্রলীগ ইন
নতুন মন্ত্রিসভায় চমক মূলত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্যদের প্রাধান্য। মন্ত্রিপরিষদের দেয়া নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা দেখে মনে হচ্ছে এবার সরকার গঠনে বাম আউট ছাত্রলীগ ইন ঘটতে যাচ্ছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভায় বামদের আধিক্য দেখা গেছে। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর অধিকাংশই সিপিবির অঙ্গসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতাদের দখলে ছিল। বাম চেতনার মন্ত্রীদের মন্ত্রণালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ছিলেন অবহেলিত। এবার মন্ত্রিসভায় নতুন-পুরনো মিলে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বামপন্থী হিসেবে পরিচিত যারা পুরনো মন্ত্রিসভায় জাঁদরেল মন্ত্রী ছিলেন, তাদের প্রায় সকলকেই বাদ দিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভায় যেমন পুরনো ছাত্রলীগের মতো ওবায়দুল কাদের রয়েছেন; তেমনি এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর মতো সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়গা পেয়েছেন। এ ছাড়াও সাইদুজ্জামান চৌধুরী, নুরুজ্জামাল আহমেদ, দীপু মনি, নুরুল ইসলাম সুজন, শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মহিবুল হাসান চৌধুরী, হাবিবুন নাহার কে এম খালিদ, স্বপন ভট্টচার্য যারা নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পাচ্ছেন তাদের অধিকাংশই ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য।
নতুন মন্ত্রিসভায় যারা থাকছেন
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্যমন্ত্রী মো. হাসান মাহমুদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশেসিং, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান (টেকনোক্র্যাট), ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার (টেকনোক্র্যাট)।
এছাড়া ১৯ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন, শিল্প মন্ত্রণালয় বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজমুদার, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহসান রাসেল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী ফরহান হোসেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মো: এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. আবদুল্লাহ (টেকনোক্র্যাট)।
উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ৩ জন। এদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুর নাহার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী কে এম এনামুল হক শামীম ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মুহিবুল হাসান চৌধুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।