Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একাদশ সংসদে ২৪৪ জন এমপি কোটিপতি

সুজনের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ২৪৪ জন কোটিপতি। শতকরা হিসাবে নির্বাচিত এমপিদের মধ্যে শতকরা ৮১.৮৭ শতাংশ। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিতদের তথ্য উপস্থাপন শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা কোনো নিবাচন পর্যবেক্ষণ করি না। তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর কাজ করি। নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনে যেসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, কমিশনের দায়িত্ব হবে সেগুলো তদন্ত করা। অনিয়ম প্রমাণিত হলে নির্বাচন বাতিল করারও ক্ষমতা আছে কমিশনের। আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, আমি যেই কেন্দ্রের ভোটার সেই কেন্দ্রে দেখেছি নৌকা ও হাতপাখার পোস্টার ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টার নেই। নির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল। স্বতঃস্ফূর্ততা না থাকলে এটাকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলা যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার জানান, অনেক প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা হয়েছে- সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা বা ক্ষেত্রমতো থানা ও জেলা কমিটির দলীয় সদস্যরা নির্বাচনের জন্য প্রার্থীর প্যানেল তৈরি করবেন এবং কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টারি বোর্ড ওই প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন চ‚ড়ান্ত করবেন। কিন্তু আরপিওর এ বিধানটি কোনো দলকেই অনুসরণ করতে দেখা যায়নি।
সংসদ সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচিত ২৯৮ জনের মধ্যে ৮০.৮৭ শতাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। মহোজোটের নির্বাচিতদের মধ্যে ৮১.৯৪ (২৩৬ জন) এবং ঐক্যফ্রন্টের ৫৭.১৪ (চারজন) এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিতদের মধ্যে ৩৩.৩৩ শতাংশ (একজন) রয়েছেন। নির্বাচনে ব্যবসায়ীদের প্রবেশ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচিতদের ৬১.৭ (১৮২ জন) শতাংশের পেশা ব্যবসা। এর মধ্যে মহাজোট থেকে নির্বাচিতদের ৬০.৪১ এবং ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিতদের ৭১.৪২ শতাংশ রয়েছে। আইন পেশায় রয়েছেন ১২.৭৫ শতাংশ। সংসদে ব্যবসায়ীদের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে প্রার্থীদের মামলার চিত্র তুলে ধরে সুজন জানায়, নির্বাচিত ২৯৮ জনের মধ্যে ২১ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা আছে। আগে ছিল ১২২ জনের বিরুদ্ধে। ৩০২ ধারায় মামলা রয়েছে এমন প্রার্থী চারজন। আগে ছিল ৩৩ জনের বিরুদ্ধে। নির্বাচিতদের মধ্যে মাত্র ৪০ জন ঋণগ্রহিতা রয়েছেন। বক্তব্যে আরো বলা হয়, নির্বাচনের পুরো পরিবেশ বিবেচনায় নিলে সেই সময়ের পরিস্থিতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন তথা সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার অনুক‚ল মনে করার কোনো অবকাশ নেই। প্রচারের পুরো সময়জুড়েই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ, নির্বাচনী প্রচার বাধা দান, হামলা, গ্রেফতার-হয়রানি ইত্যাদি কারণে অনেক প্রার্থী নির্বিঘ্নে প্রচার কাজ চালাতে না পারার অভিযোগ উঠেছে। বাধার কারণে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও সমর্থকরা প্রচারণা চালাতে না পারা, বাড়িতে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকাসহ অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনে ১৭ জন নিহত, বেশির ভাগ কেন্দ্রে ঐক্যফ্রন্ট ও তার নেতাকর্মী এবং পোলিং এজেন্টদের অনুপস্থিত দেখা গেছে। আবার বাধা না থাকা সত্তে¡ও অনেক প্রার্থীকে প্রচারণায় নামতে দেখা না যাওয়ার অভিযোগ আছে। নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকের বিরুদ্ধে অনিয়মের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারচিত্র দেখে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতটা সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
দিলীপ কুমার সরকার বলেন, নির্বাচনে অনিয়মেরও অনেক অভিযোগ আমাদের গোচর হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়া, ভোটারদের প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করা, দীর্ঘ সময় লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ না করা, কোনো কোনো কেন্দ্রে অস্বাভাবিক বেশি বা কম ভোট পড়া, ইভিএম ও অন্য আসনগুলোর মধ্যে অসামঞ্জস্যতা লক্ষণীয় ছিল। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে মহাজোটের মহাবিজয় হয়েছে এবং মহাবিপর্যয় হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের। এর কারণ অনুসন্ধান করলে দু’টি বিষয় বেরিয়ে আসবে। এগুলো হচ্ছে- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নির্বাচনী অনিয়ম। অনিয়মের অভিযোগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের রয়েছে।



 

Show all comments
  • Ahmed Saleh ৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪১ এএম says : 0
    আসা কাজ করবেন দুর্নীতি করবেন না সভাই পয়সা ওয়ালা দেশ ও জনগন এর জন্য কাজ করবেন মরলে যেন লোক স্বরন করে উনি এক জন ভাল লোক ছিলেন
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam ৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪২ এএম says : 0
    সাবাস এবার ফকিন্নিপতি তারাও কোটিপতি হওয়ার পেরেজ চলছে সিমিত সময়ের জন্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Humayun Patwary ৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪২ এএম says : 0
    যারা কোটিপতি তারা কত কোটি টাকার মালিক, আর বাকিদের নাম জানতে চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Md Suman ৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪২ এএম says : 0
    জনগণের সম্পদ একবার লুটে খাইছে আবার অন্যান্য সবাই মিলে খাইবে। তৈল বিদ্যুৎ গেসের দাম আবার বারাই খায়তে থাকবে
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul islam ৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১০:৪৯ এএম says : 0
    Nibachon comission oparog,onar hat pa badha, Oni kalo sashma dara abaodha.
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul islam ৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১০:৫৩ এএম says : 0
    Sorkar'er usit sobair jonno soman sujug sristi kora, Eajnaitik bibesona na nihe durnitibajder upre phela.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ