পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নেতিবাচক ধারায় রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়। ছয় মাসে ঘাটতির আকার ৬ হাজার ৪শ’ ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গত অর্থ বছরের এ সময়ের তুলনায় মাত্র ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৫৭ হাজার ৪শ’ ৬২ কোটি টাকার বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের বছর হওয়ায় অর্থ বছরের প্রথমার্ধে আমদানি কিছুটা কম হয়েছে। আবার বেশকিছু পণ্যের শুল্ক কমিয়ে দেয়ায় রাজস্ব আদায় কমে গেছে। তবে আমদানি-রফতানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্বিকভাবে আমদানি-রফতানি বাড়লেও রাজস্ব আদায় সে অনুপাতে বাড়ছে না। এজন্য নির্বাচনী বছরে কিছু কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় দেয়া এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার প্রবণতাকে দায়ী করছেন তারা।
চট্টগ্রাম বন্দরভিত্তিক দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। বন্দরের হিসেবে, গেল বছর রেকর্ড পরিমাণ আমদানি-রফতানি হয়েছে। এরপরও রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাস ছয় দিনে গতকাল (রোববার) পর্যন্ত ২১ হাজার ৯শ’ ৫৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার ৩শ’ ৮০ কোটি টাকা। ঘাটতির আকার ৬ হাজার ৪শ’ ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
গত অর্থ বছরের এ সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২০ হাজার ৯শ’ ৪৪ কোটি টাকা। এ হিসেবে গত অর্থ বছরের এ সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় বেড়েছে মাত্র ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি মাত্র চার দশমিক ৮৫ শতাংশ। অথচ গেল অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১১ শতাংশ। গেল ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৪৩ হাজার ৯শ’ ১৮ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আহরণ হয় ৩৮ হাজার ৭শ’ ৮৩ কোটি টাকা। তার আগের অর্থ বছর অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। নেতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে গেল দুই অর্থ বছরের মতো এবারও রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের বছর হওয়ায় নানা শঙ্কা আর অনিশ্চয়তার কারণে আমদানি কিছুটা শ্লথ ছিল। ইতোমধ্যে নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে। নতুন সরকারের যাত্রাও শুরু হয়েছে। আপাতত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও স্থিতিশীল। এ অবস্থায় আমদানি দ্রুত বাড়বে। আর এরফলে অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রাজস্ব আহরণে গতি আসবে বলে আশা করছেন তারা।
রাজস্ব আহরণ বাড়লে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব না হলেও ঘাটতির আকার অনেক কমে আসবে বলে জানান কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, ৫৭ হাজার ৪শ’ ৬২ কোটি টাকার বিশাল লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চবিলাসী বলছেন কেউ কেউ। পরপর দুই অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এরপরও চলতি অর্থ বছরের শুরুতে বিশাল আকারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির পরিমাণ বাড়ছে। কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গেল ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯শ’ ৯৬ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ বেশি। একই সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯ কোটি ৬৩ লাখ ১১ হাজার ২শ’ ২৪ মেট্রিক টন। গেল বছর কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। আর কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি প্রায় নয় শতাংশ। এক বছরে আমদানি-রফতানি পণ্য নিয়ে বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়া করেছে ৩ হাজার ৭শ’ ৪৭টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।