Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রেমিট্যান্স সোয়া লাখ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

২০১৮ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এক হাজার ৫৫৪ কোটি ডলার (১৫.৫৪ বিলিয়ন) পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠানো এই রেমিটেন্সের পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ৫৪১ কোটি টাকারও বেশি। ২০১৭ সালে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এই হিসাবে ২০১৭ সালের চেয়ে ২০১৮ সালে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ রেমিটেন্স বেশি এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে প্রবাসীরা ১২০ কোটি দুই লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। এটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে তিন দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীরা পাঠান ১১৬ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্নমুখী উদ্যোগে রেমিটেন্সের পরিমাণ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। তিনি মনে করেন, আগামী দিনেও রেমিটেন্স ইতিবাচক ধারায় থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আগের বছরের (২০১৫-১৬) চেয়ে প্রায় ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ কম রেমিটেন্স আসে। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি এই রেমিটেন্স ওই সময় কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ (১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স আসে। এরপর প্রতিবছরই রেমিটেন্স কমে যেতে থাকে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে আড়াই শতাংশ কমে গিয়ে রেমিটেন্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা সাড়ে ১৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় এক হাজার ২৭৭ কোটি ডলারে, যা ছিল আগের ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী আয় বাড়াতে হুন্ডি প্রতিরোধের অংশ হিসাবে অবৈধ মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বর্তমানে ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে। এর প্রভাবেও রেমিটেন্স বেড়েছে। ব্যাংকিং খাতে ডলারের সংকট মেটাতে ব্যাংক তার নিজের স্বার্থেই ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের রেমিটেন্স আনার চেষ্টা করছে। সে কারণেও রেমিটেন্স বাড়ছে। শ্রমশক্তি রফতানি বেড়েছে। এরও একটা প্রভাব পড়েছে ২০১৮ সালে।
রেমিটেন্স বাড়ার পেছনে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে একদিকে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন, অন্যদিকে পণ্য আমদানি বাড়ায় ডলারের সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলো নিজেদের প্রয়োজনে রেমিটেন্স আনতে বেশি উৎসাহী হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও রফতানি আয় বাড়াতে টাকার বিপরীতে ডলারের দর ৮৫ টাকায় স্থির করে দেওয়া উচিৎ।
তিনি জানান, ভারত, চীন, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশ মার্কিন ডলারের বিপরীতে তাদের নিজস্ব মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন করেছে। বাংলাদেশেও হয়েছে; তবে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন আরও হওয়া দরকার।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখছে প্রবাসীদের পাঠানো এই বৈদেশিক মুদ্রা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে প্রবাসীরা ৭৪৮ কোটি ৮৪ লাখ (৭.৪৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে রেমিটেন্স এসেছিল ৮০৪ কোটি ৯৪ লাখ ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেমিট্যান্স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ