Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাজা দিলে দিয়ে দেন, আমি আর আসব না

শুনানিতে খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

নাইকো মামলার শুনানিতে হাজির হয়ে বিএনপির চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়ার বলেছেন, আদালতে এত পুলিশ কেন? এখানে আমাদের কোনো আইনজীবী বসতে পারেন না। এখানে আইনজীবীদের গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এর আগেও আমি বলেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ রকম জায়গায় কোনো মামলা চলতে পারে না। সাজা দিলে দিয়ে দেন। এখানে আমি আর আসব না।
গতকাল বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে হাজির হয়ে এসব কথা বলেন খালেদা জিয়া। গতকাল অভিযোগ গঠনের শুনানি ছিল। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে আদালতে হুইল চেয়ারে করে হাজির করা হয়। তাঁর পরনে ছিল গোলাপি রঙের শাড়ি। খালেদা জিয়া আসার তিন মিনিট পর ১২ টা ১৫ মিনিট বিচারক এজলাসে আসেন। এরপর শুরু হয় নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম।
শুনানিতে যা হল: এজলাস কক্ষে পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতি বেশি দেখে ক্ষুব্ধ হন খালেদা জিয়া। আদালতকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আদালতে এত পুলিশ কেন?। খালেদা জিয়া বলেন, লইয়ারদেরতো বসতে দিতে হবে। তখন দুদকের পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আদালত কক্ষে চেয়ার আছে তখন খালেদা জিয়া কাজলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কোথায় আছে চেয়ার।
ডায়াসে দাঁড়ানো মামলার আসামি মওদুদ আদালতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এভাবে কী ফেয়ার ট্রায়াল হতে পারে? তখন খালেদা জিয়া আদালতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এ রকম জায়গায় কোনো মামলা চলতে পারে না। আমি আর আসব না। এরপর ক্ষুব্ধকণ্ঠে খালেদা জিয়া আবারও বলেন, আমি আর এই কোর্টে আসতে পারব না। আমাদের লোকদের আসতে দেয়া হয় না। কাজল তখন খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, এটা উন্মুক্ত আদালত। এখানে সবাই আসতে পারেন। কাউকে বাধা দেয়া হয় না। খালেদা জিয়া তখন ফের বলেন, সাজা দেয়ার জন্যই আনছেন। সাজা দিয়েছেন। সাজা দেবেন। এখানে আমি আর আসব না।
খালেদা জিয়ার কথা শেষে মওদুদ তখন আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, ইজ ইট এ্যা পাবলিক ট্রায়াল? আইনজীবীদের নাম রেজিস্ট্রি করে এখানে আসতে হয়। এরপর ব্যারিস্টার মওদুদ ফের বলেন, এটা কী উন্মুক্ত আদালত?
মওদুদ তখন বিচারককে জানান, আগের বিচারককে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তখন তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। তখন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান মওদুদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমিও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানির পরবর্তী তারিখ ১৩ জানুয়ারি ধার্য করে এজলাস ছেড়ে যান বিচারক।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি আইনজীবীরা: খালেদা জিয়ার সঙ্গে একান্তে কথা বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন। প্রথমে খালেদা জিয়া কথা বলতে শুরু করেন মওদুদ আহমদের সঙ্গে। এসময় এজলাসে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। তখন অপর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেখছেন না উনি কথা বলছেন।
একপর্যায়ে পুলিশ বাহিনীর এক সদস্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য হুইল চেয়ার টান দেন। তখন খালেদা জিয়া রাগান্বিত হন। নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে পুলিশ সদস্যের উদ্দেশ্যে খালেদা বলেন, আমার পায়ের যদি কিছু হয়। কথা বলার একপর্যায়ে খালেদা জিয়া বলেন, খোকন কোথায়। এরপর খোকন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এরপর খালেদা জিয়ার তাঁর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা বলেন। আদালত থেকে বের হওয়ার সময় নির্বাচন নিয়ে কিছু বলবেন কি না-সাংবাদিকরা জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে বলার কিছু নেই।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এ চলছে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ। মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। অভিযোগ গঠন বিষয়ে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মোশাররফ হোসেন কাজল। খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তিনি পড়ে শোনান। আসামি মওদুদ আহমেদ তিনি শুনানি শুরু করেন। নাইকো দুর্নীতির সঙ্গে মওদুদ আহমেদ জড়িত নন সে ব্যাপারে যুক্তি তুলে ধরেন।

 



 

Show all comments
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    মামলার বিস্তারিত ভাল করে পড়লে সহজেই বুজা যায় তিনি এতিমের অর্থ অাত্বসাৎ করেননি।। এটি রাজনৈতিকভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Zulfiqar Ahmed ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    This Khaleda Zia one day before 21 August 2004 incident while delivering a speech said that the AL even could not be the opposite party. Now I think that BNP even cannot be the opposite party. That's karma.
    Total Reply(0) Reply
  • Mr Rayman ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 0
    So Sad
    Total Reply(0) Reply
  • Shah Alam Khan ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 0
    দয়া করে আর আমাদের মাকে কষ্ট দিয়েন না তাকে জামিন দেন তাকে মুক্ত করে দেন আমাদের জেলে নেন তাও আমার মাকে মুক্তি দেন।
    Total Reply(0) Reply
  • আন্দালিব ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 1
    জোড়াতালি জ্ঞান নিয়ে আর কিইবা বলবেন? আপনিতো আবার স্ক্রিপ্ট না দেখে সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারেন না কিন্তু বিনা প্রশ্নে জনসভার নামে যা তা বলায় ওস্তাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 1
    খালেদা জিয়ার দাম্ভিকতার জন্যই বিএনপি আজ খাদের কিনারে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Jamal ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
    কষ্ট করে ৫ বছর অপেক্ষা করেন । তিন রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সবার ই একই অবস্থা হবে।অলরেডি এরশাদ বিদায় নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। নতুন যুগ শুরু হবে ৫ বছর পর, সেই যুগের রাজনীতিতে আপনার দলই এগিয়ে থাকবে, লিখে দিতে পারি ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ৬:১২ এএম says : 0
    আপনি চিন্তা করিবেন না। জালিম ধংস হইবে। ইনশাআল্লাহ। ********* আপনি যদি দুনিয়া হইতে বিদায় ও হইয়া যান আপনার নাম লিখা থাকিবে জনগণের অন্তরে আর বেঈমান যখন মরিবে জনগণ বেঈমানিকে থু থু দিবেন জানিবেন। দুধ কলা দিয়ে শাপ লালন পালন করিতে নাই। জানিবেন। ইনশাআল্লাহ। ********
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ