Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণধর্ষণের মূল হোতাসহ গ্রেফতার আরো ২

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ওই নারীকে গণধর্ষণের আলামত মিলেছে

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

স্বামী সন্তানদের বেঁধে সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের চরবাগ্যা গ্রামে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনার মূল হুকুমদাতা রুহুল আমিন মেম্বার ও বেচুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর গণধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে গতকাল বিকেলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান। এদিকে, গতকাল দুপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল সংস্থার কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ইয়াদিয়া জামানের নেতৃত্বে হাসপাতালে নির্যাতিতা ওই নারীকে দেখতে যান। সেখানে সংস্থার নেতৃবৃন্দ ওই নারীকে সব প্রকার সহায়তার আশ্বাস দেন। গত ৩১ ডিসেম্বর মামলা দায়েরের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত পাঁচজন আসামিকে গ্রেফতার করা হলো। গ্রেফতারকৃত রুহুল আমিন মেম্বার সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও বেচু ব্যাগা গ্রামের আবু কাশেমের ছেলে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। হাসপাতাল সূত্র জানায়, মেডিক্যাল অফিসার আকেপা জাহানের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল টিম নির্যাতিতা নারীর শারীরিক পরীক্ষা শেষ করেন। পরে দুপুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনটি তত্ত¡াবধায়ক ডা. মো: খলিল উল্যাহর কাছে জমা দিলে তিনি প্রতিবেদনটি নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন।
চরজব্বার থানার ওসি মো: নিজাম উদ্দিন জানান, বুধবার রাতে পুলিশের দুটি দল জেলার সদর উপজেলার উত্তর ওয়াপদার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনার মূল হুকুমদাতা প্রধান আসামি রুহুল আমিন মেম্বার এবং সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারে ৫ নম্বরের আসামি বেচুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি। সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বার যদি অপরাধী হয় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। দ্রæত সাংগঠনিক মিটিংয়ে বসে ও দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ অনুযায়ী তার অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
ওই গৃহবধূ এবং তার স্বজনদের অভিযোগ, গত ৩০ ডিসেম্বর রোববার নির্বাচনের দিন সেই নারী ধানের শীষে ভোট দিয়ে ফেরার পথে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন। এরপর রাতে রুহুল আমিনের নেতৃত্বে ১০ জন মিলে ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে তার স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করেন। এছাড়া ওই দম্পতি এবং তাদের সন্তানদের পিটিয়ে জখম করেন তারা। এরপর সকালে সেই নারীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন হাসপাতালের চিকিৎসকরা সেই নারীকে গণধর্ষণ ও পিটিয়ে জখম করার আলামত পাওয়ার কথা জানান। এ নিয়ে পরের দিন ৩১ ডিসেম্বর সেই নারীর স্বামী চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু গৃহবধূর স্বজনরা অভিযোগ করেন, এই বর্বরোচিত কাÐে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছে, সেই রুহুল আমিনকেই আসামি করা হয়নি। এ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। সরকারের পক্ষে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও জানিয়ে দেন, গণধর্ষণের ঘটনায় কেউ রেহাই পাবে না। এ বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে। তার প্রেক্ষিতেই বুধবার রাতে রুহুল আমিনসহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হলো। এর আগে গ্রেফতার তিন আসামি হলেন সুবর্ণচরের মধ্য বাগ্যা গ্রামের মৃত ইসমাইলের ছেলে সোহেল (৩৫), মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে স্বপন (৩৫) ও একই গ্রামের আহমদ উল্লার ছেলে বাসু (৪০ ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
স্বামী সন্তানদের বেঁধে রেখে নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের বাগ্যা গ্রামে গৃহবধূকে গণধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছে নোয়াখালী সচেতন ছাত্র সমাজ।
গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদী টাউন হল মোড়ে ঘন্টাব্যাপি এই কর্মসূচী পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী সচেতন ছাত্র সমাজের সদস্য নজরুল ইসলাম ফয়সাল, সৈকত হাসান, রবিউল ইসলাম, রাখি, রোকসানা আক্তার ও সজিবসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
নির্যাতিতা নারীর পাশে জাতীয় মহিলা সংস্থা
স্বামী সন্তানদের বেঁধে রেখে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের বাগ্যা গ্রামে নির্যাতিত সেই নারীর পাশে এবার দাঁড়িয়েছে জাতীয় মহিলা সংস্থা। গতকাল দুপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল ধর্ষিতাকে দেখতে হাসপাতালে যান। সংস্থার নেতৃবৃন্দ ভিকটিমকে সকল প্রকার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
জাতীয় মহিলা সংস্থার কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ইয়াদিয়া জামান বলেন, আমরা স্থানীয় জনগন ও তদন্তে যারা আছে তাদের সাথে কথা বলবো। প্রাথমিকভাবে ভিকটিমের সাথে কথা হয়েছে। যারা অপরাধী তাদের অবশ্যই সর্বোচ্চ সাজা পেতে হবে।



 

Show all comments
  • Tarek islam ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:১১ এএম says : 0
    2001 year happened REAP than shek HASENA told I want JUSTICE than B N P said NO now 2019 happened than Jason’s STOP & also BNP STOP . What we can do against ALL of THEM.
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    এত এত ধর্ষণের বিচার ঠিকভাবে হয়না বলেই বাকিরা সাহস পায় এই নৃশংস কাজ করতে।প্রশাসনের কাছে অনুরোধ যে,আপনাদের আমাদের সবার মা বোন আছে তারা যেমন নারী, তেমনি আরেকজন নারীর সঠিক বিচার যাতে হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • রিপন ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যাবেই নিশ্চিত! শুধু ঘৃণাইতো জানাতে পারি! আমাদের আর কীই বা করতে পারি?
    Total Reply(0) Reply
  • MOHIBUL ALAM ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    ভোট নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমরা সাধারন জনগন মান ইজ্জত নিয়ে খেয়ে পরে বাচঁতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন, আওয়ামী লীগ- ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যেনো অন্যায় করতে ভয় পায়। তাঁরাও যেনো আইনের আওতায় থাকে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    এই একটিমাত্র ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে , বাংলাদেশে কেমন ভোট হয়েছে। কারা ভোট দিতে পেরেছে। আমিও তাদের দলে যারা ভোট দিতে পারে নাই। জীবনের প্রথম ভোটটা দিতে পারলাম না।
    Total Reply(0) Reply
  • Zulfiqar Ahmed ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    Shame Shame Shame ...... ! But we are shameless national.
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Shahidul Islam ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    The identity of the rapist should be unveiled in detail without giving any such reason
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Khan ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যু দন্ড হওয়া উচিৎ।অপরাধী অপরাধীই। যেই হোক, আর যে কারনেই হো্‌, ধর্ষণকে অস্ত্র হিসাবে ব্যাবহারকারীকে অবশ্যই ফাঁসিতে ঝুলবে এই আইন চাই । ...
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Ali khan ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    ধর্ষকদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তাদের পরিচয় তারা লম্পট। লম্পটদের রাজনৈতিক প্রশ্রয় না দিয়ে তাদের উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত। তারা বাঁচার জন্যই রাজনৈতিক ছত্রছায়া খুজবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Tarekul Islam ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    একটা সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহীনির কার্যকলাপ কে ঘৃনা করতাম কিন্তু এখন নিজেদেরকে নিজেই ঘৃনা হয় । আমরা কি আজও স্বাধীনতা পেয়েছি ??? নাকি মাটির একটা ভূখন্ড ???
    Total Reply(0) Reply
  • রুবেল ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    So many women activists in our country, where are they now? All you do is for money .... nothing else. I do not see any kind of protests in Dhaka City. Please do not give any lectures in future..
    Total Reply(0) Reply
  • Kabir Sardar ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
    কোথায় এখন মাসুদা ভাট্টির পক্ষের জনগন!!!! তাদের গলার আওয়াজ কোথায় এখন???
    Total Reply(0) Reply
  • M A.kalam ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:২৮ এএম says : 0
    For rape case accused be hanged.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ৫:২৯ এএম says : 0
    যেকটায় চাইচিলো বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করিবে সেইটারে কেন ধরা হইতেছেনা? মূলটাকে ধরা হোক। ইনশাআল্লাহ। ********
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণধর্ষণ

১৯ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ