পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণশক্তি কৃষি এগিয়ে যাচ্ছে। খেয়ালি আবহাওয়া ও জলবায়ুর ধাক্কা মোকাবিলা করে কর্মবীর কৃষকরা কৃষিতে ঘটাচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ধান, সবজি, আলু ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে সাফল্য আসছে। মাঠে মাঠে বিভিন্ন ফসলের সবুজের অপরূপ সৌন্দর্য তৈরী করার ধারক কৃষককুলের ফসল উৎপাদনে বিরাট সফলতা আনার পেছনে রয়েছে ‘অভিযোজন কৌশল’।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর সাথে খাপ খাওয়া যখন যেমন পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষির বিস্ময়কর উন্নয়ন ও অগ্রগতি ঘটাচ্ছে। তবে কৃষিক্ষেত্রে আরো গুনগত পরিবর্তন ও আধুনিকায়নে বাস্তবভিত্তিক স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। মাটি ওলোট-পালট করে সোনার ফসল ফলানোর সাথে জড়িত কৃষকরা সরকারের কোনো কোনো পদক্ষেপে মাঝেমধ্যেই আশান্বিত হয়ে উঠেন।
সৃষ্টি হয় কৃষিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার আস্থা ও বিশ্বাস। কিন্তু নানা কারণে মাঝেমধ্যেই তারা হতাশ হয়ে পড়েন। যখন দেখেন উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন না কৃষিপণ্যের। মনটা বিষিয়ে ওঠে তখন তাদের। কর্মবীর কৃষকরা রাজনীতি ও অর্থনীতির ঘোরপ্যাচ বোঝেন না। কৃষকদের কোন পেনশন নেই, নেই অবসর কিংবা ছুটিছাটা। দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন কৃষাণ ও কিষাণীরা। তবুও কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফসল অনেক সময় ঘরে তুলতে পারেন না বিনা পূজির ব্যবসায়ী মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের কথা, বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার অভাবেই এটি ঘটছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফিল্ড সার্ভিস উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ ডক্টর আব্দুল মুঈত গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, অল্পজমিতে বেশি শস্য উৎপাদনের গবেষণা, কৃষির সমস্যাদি সমাধান, লাগসই ও টেকসই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগানো, সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ, অভিযোজন কৌশল প্রয়োগে জোরদার করা হলে বাংলাদেশ আরো রেকর্ড সৃষ্টি করবে কৃষি উৎপাদনে। যদিও আশার কথা কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যানুযায়ী বিশ্বে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ ৩য়, চাউলে ৪র্থ,আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম, পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম অবস্থানে পৌছানোর কৃতিত্ব অর্জন করেছে। তার মতে, এটি মোটেও কম সাফল্য নয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের অতিরিক্ত পরিচালক চন্ডীদাস কুন্ডু ও কৃষিবিদ ডক্টর মো. আখতারুজ্জামান জানান, এতোকিছুর পরও বলতে হয় বাংলাদেশের কৃষিকে আরো এগিয়ে নেওয়ার গবেষণা ও সর্বাত্মক চেষ্টা দরকার। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। ফলে, বিশ্বে কৃষি উন্নত দেশগুলোর চাষ পদ্ধতি এবং কলাকৌশল প্রয়োগ করলে কল্পনাতীত উন্নয়ন ঘটবে। সেজন্য, সর্বোচ্চ ব্যবহার দরকার কৃষি জমির।
কৃৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ও মৃত্তিকা সম্পদ ইন্সটিটিউটসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট আবদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৫ লাখ ৭৭ হাজার ৫শ’৫৬ হেক্টর। এর অনেক জমিতে এখনো তিন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। সূত্র জানায়, দেশে অনাবাদী জমি রয়েছে প্রায় ৫লাখ হেক্টর জমি। ওই জমি আবাদের আওতায় আনার জোরদার ভুমিকা অনুপস্থিত। দেশের বিভিন্ন এলাকায় পতিত, সাময়িক পতিত, অনাবাদী জমি আবাদের আওতায় আনলে আরো সাফল্য আসবে কৃষিখাতে।
সূত্রমতে, কৃষিতে সম্ভাবনা যেমন আছে তেমনি আছে বহুবিধ সমস্যা। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতের কৃষি এখন অনেক উন্নত। সেখানকার চাষ পদ্ধতি ও ফসল উৎপাদন এবং কৃষিপণ্যের বাজার ব্যবস্থা পুরোটাই একটা ব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে। বাাংলাদেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে আশানুরূপ উন্নতি হলেও ফুড ম্যানেজমেন্ট ও আধুনিক বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেনি। যার জন্য কর্মবীর কৃষকরা উৎপাদিত কৃষিপণ্যের উপযুক্ত বা আশানুরূপ মূল্য পান না।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, কৃষিই হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। কৃষি এগিয়ে যাচ্ছে এটি সত্য। আরো এগিয়ে নেওয়া যাবে যদি আবহাওয়ার খামখেয়ালীর কারনে এলাকাভিত্তিক উপযোগী ‘ক্রপ জোন’ করা যায়। একই জমিতে তিনএর অধিক ফসল উৎপাদনে স্বল্পজীবনকালের জাত উদ্ভাবন এবং মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় ‘লিগুমিনাস’ বা ডালসহ সিম্ব জাতীয় ফসল বছরে অন্তত একবার চাষ করার উপর জোর দিতে হবে। তাতে মাটির ক্ষয়রোধসহ নাইট্রোজেন সংযোজন হয়ে মাটি সমৃদ্ধ হবে।
বর্তমানে যে পর্যায়ে রয়েছে কৃষিখাত এর থেকে আরো উচ্চতায় বিশেষ করে কৃষিপণ্য রফতানীর দিকে জোর দিতে হবে। এক্ষেত্রে ফসল ও ফল উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা সায়েন্টিফিক্যালী হতে হবে। যাতে বিদেশেীদের কাছে ব্যাড রেপুটেশন না হয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের মতে, কৃষিপণ্য রফতানী জোর দিলে গার্মেন্টস শিল্প ও জনশক্তি রফতানির মত কৃষিও হতে পারে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।