Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খালেদা জিয়াকে প্রতিহত করার ঘোষণা ১৪ দলের

প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশবিরোধী চক্রান্তের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল।
গতকাল রোববার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪ দলের গণসমাবেশে এ ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। দেশে গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এ গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়।
১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়া দেশবিরোধী চক্রান্ত শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলসহ খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে প্রতিহত করবো। দেশে গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আগামী ১৫ মে রাজশাহীতে ও ২৪ মে প্রতিটি জেলায় ১৪ দলের গণসমাবেশ কর্মসূচিরও ঘোষণা দেন নাসিম।
নাসিম বলেন, দেশে বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বে জঙ্গীবাদী কর্মকা- হচ্ছে। তাই দেশবাসীকে সচেতন করতে আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গিয়ে জঙ্গীবাদবিরোধী মিছিল-মিটিং করবে। এরই অংশ হিসাবে আগামী ১৫ মে রাজশাহী মহানগরে গণসমাবেশ করা হবে। ২৪ মে সারাদেশের এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সকল অপশক্তি একত্রিত হয়ে দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি (খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় থাকতেও মানুষ মারেন, আর ক্ষমতায় না থাকলেও বোমা মেরে মানুষ মারেন। দেশবাসীর প্রতি আমার আহ্বান শান্তির পক্ষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ শক্তি প্রতিহত শুধু নয়, নির্মূল করি।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসমারকি বিমান-পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, জঙ্গিবাদের উত্থানের নাম করে বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন খেলা খেলতে দেয়া হবে না। এ দেশের মানুষই ঐক্যবদ্ধভাবে যথেষ্ট এ গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে দেশের মানুষই যথেষ্ট, বাহিরের কোন শক্তির দরকার নেই। আমাদের দুর্ভাগ্য দেশে যখন জঙ্গিবাদ কর্মকা- হচ্ছে তখনই বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকা- করছেন। তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।
সমাবেশে জাসদ (একাংশ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ফাঁসির দাবি করে বলেন, একাত্তরে গণহত্যার দায়ে যদি নিজামীর ফাঁসির রায় হতে পারে, তাহলে মানুষ পোড়ানোর দায়ে খালেদা জিয়ার বিচার ও ফাঁসি দাবি করছি। আগুন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে খালেদা জিয়া এখন গুপ্তহত্যার মত ন্যাক্করজনক কমকা-ে লিপ্ত হয়েছেন। সকল জঙ্গিবাদের আশ্রয়স্থল এখন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার ছাতার তলে এখন সকল গুপ্তহত্যার ষড়যন্ত্র চলছে। এ সময় বিএনপি এখন জামায়াতের মত সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে বলেও দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার জন্য আগুন সন্ত্রাস করেছিল। কিন্তু সেখানে তারা ব্যর্থ হয়েছিলো। তারা সেই ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে এখন দেশে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। গুপ্তহত্যা করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা। আমরা সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই, সকল দলীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের সকল ষড়যন্ত্র নসাৎ করে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ভোলা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, জাসদ (একাংশ) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, গণআজাদী লীগের এসকে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান প্রমুখ।
নেতাদের সামনে জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদি দাবড়ালেন কর্মীরা
এদিকে, দেশে গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এ গণসমাবেশে নেতাদের সামনেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদিতে সমাবেশ ‘মঞ্চে’র সামনে জুতা পায়ে দাবড়িয়ে বেড়ান ক্ষমতাসীন ১৪ দলের কর্মীরা। মাইক্রোফোনে নেতারা বক্তৃতা দিচ্ছেন। তাদের সামনে শহীদ মিনারের বেদিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অন্য নেতাকর্মীরা জুতা পায়ে সেøাগান তুলছেন বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে। মঞ্চে বসা নেতাদের পায়ে জুতা নেই বটে, কিন্তু অন্য নেতারা যে জুতা পায়ে বেদিতে জুতা পায়ে দাবড়ে বেড়াচ্ছেন, সেদিকে খেয়াল নেই কারও।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মো. নাসিমের সভাপতিত্বে দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের (একাংশ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাসদের (একাংশ) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ ছিলেন মূল বেদিতে করা মঞ্চে।
পবিত্রতা রক্ষার্থে দেশের সব শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠা নিষেধ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রবেশপথেই মূল বেদিতে ‘জুতা পায়ে প্রবেশ নিষেধ’ লেখাসংবলিত একটি সাইনবোর্ডও রয়েছে। কিন্তু তাতে কী, বেদিতে মঞ্চের খালি অংশে সবাই জুতা পায়ে ঘুরছেন। কেউ আবার নেতাদের বক্তব্য শুনছেন। সাইনবোর্ডের নির্দেশনার দিকে কারও নজর নেই। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সবাইকে খালি পায়ে মঞ্চে দেখা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়াকে প্রতিহত করার ঘোষণা ১৪ দলের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ