Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মিরপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

গুলিবিদ্ধ ১৬ জনসহ আহত অর্ধশতাধিক : পুলিশ ছিল নীরব দর্শক

প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মিরপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শাহআলী থানা এলাকায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুবলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংঘর্ষ চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়লেও পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটকও করেনি।
গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আহতদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন Ñ মনোয়ার (৩০), শামীম (৩৩), মনির হোসেন (৩৫), কালাম (২০), কোরবান (২০), আলামিন (২০),  হাবিব (২২), শুভ (২০), ইমন (২০), জাকির হোসেন (২২), রাফি (২০), সবুর (২৫), ইব্রাহিম (২৮), সুজন (২২) এবং জাকির আহমেদ (২৫)। এরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। আহত অন্যদের নাম জানা যায়নি। অনেকেই তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিয়ে  চলে গেছেন আবার কেউ কেউ রাজধানীর বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, শাহআলী থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুর ১ নম্বর গোল চত্বরের সামনে জমায়েত হয়। এর আগে সকাল থেকেই ওই এলাকার নেতাকর্মীরা হরতালবিরোধী কর্মসূচি পালন করছিলেন। সেখানে অবস্থান কর্মসূচিও ছিল তাদের। হরতালবিরোধী মিছিল শুরু হলে মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে মোটরসাইকেলে আসা অপর একটি পক্ষ মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় গুলিবিনিময়। এসময় এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। উভয় পক্ষের গুলিতে গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ও পথচারী আহত হন।
স্থানীয়রা আরো জানান, সংঘর্ষ চলাকালে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে  রাত ৮টা পযন্ত কোনো মামলা হয়নি। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে হামলা ও গোলাগুলির সময় পুলিশ কাউকে আটক করেনি।
জানতে চাইলে শাহআলী থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে  রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ মামলাও করেনি। তবে পুলিশের একটি টিম ঢাকা মেডিকেলে গিয়েছে।
মিরপুর থানার পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, দুপুরের দিকে সংঘর্ষ হয়। প্রাথমিকভাবে তারা জেনেছেন, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দুটি পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তবে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো অবস্থান করছেন। হামলাকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দ- বহাল থাকার প্রতিবাদে জামায়াত হরতাল ডাকে। হরতাল কর্মসূচি চলাকালে গতকাল রোববার রাজধানীর মিরপুরে আওয়ামী লীগের হরতালবিরোধী মিছিলে দলটির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারও যেকোনো সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, জামায়াতের ডাকা হরতালের বিরুদ্ধে মিছিল ও সমাবেশ শেষে শাহআলী থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা মিরপুর ১ নম্বরের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় শাহআলী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাশেম মোল্লার নেতৃত্বে একটি গ্রুপ তাদের ওপর হামলা চালায়।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর যুবলীগের আশপাশ এলাকার নেতাকর্মীরা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে জড়ো হয়ে কাশেম মোল্লার গ্রুপের ওপর হামলা চালায়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসময় কাশেম গ্রুপের লোকজন মফিজ গ্রুপের নেতাকর্মীদের লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে বাংলা কলেজের ছাত্রলীগের মনির, আলামিন ও জাকিরসহ গুলিবিদ্ধ ১৬ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, শাহআলী মার্কেটসহ আশপাশের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
মিরপুরের সংসদ সদস্য আসলামুল হক আসলাম ও সাবিনা আক্তার তুহিনের ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।
উল্লে­খ্য, ঘটনার সময় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানা গেছে।



 

Show all comments
  • s hoque ৯ মে, ২০১৬, ১২:৪৬ এএম says : 0
    desh samner dike jaytece
    Total Reply(0) Reply
  • Robiul Hasan ৯ মে, ২০১৬, ১০:৪৯ এএম says : 0
    mone hoy Taka kom paice
    Total Reply(0) Reply
  • সোহেল ৯ মে, ২০১৬, ১০:৫৯ এএম says : 0
    পুলিশ তো শুধু বিরোধীদলের জন্য....
    Total Reply(0) Reply
  • তানিয়া ৯ মে, ২০১৬, ১১:০২ এএম says : 0
    প্রতিপক্ষ নাই তো তাই নিজেরা নিজেরাই প্রাকটিস করছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিরপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ