পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। অন্যদিকে ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে মাত্র ৭টিতে জয় পেয়ে ভরাডুবি হয়েছে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে মাত্র ৫টি আসনে। এই নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট চুরি করা হয়েছে অভিযোগ করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেছে দলটির। তাদের এই দাবি নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করায় এবার আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। এরই অংশ হিসেবে গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। এসব বৈঠকে পুনঃনির্বাচন আদায়ে করণীয় এবং কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দাবি আদায়ে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের পরামর্শ এসেছে বিএনপি ও জোট নেতাদের কাছ থেকে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, স্থায়ী কমিটি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে নেতারা নির্বাচনের সার্বিক মূল্যায়ন এবং পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। দেশের কোন কেন্দ্রেই যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি সেবিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। এজন্য এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের যে পরামর্শ এসেছে সেটিকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন নেতারা। তারা জানিয়েছেন, আইনি লড়াইয়ের মধ্যে নির্বাচন বাতিল চেয়ে রিট করা হবে। এই নির্বাচন কেন অবৈধ ঘোষণা করে নতুন নির্বাচন দেয়া হবে না সে বিষয়েও আদালতের স্মরণাপন্ন হবে।
আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা জানান, প্রাথমিকভাবে ৩ জানুয়ারি নির্বাচন বাতিল চেয়ে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সকল প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি প্রদান করবে। কোন কাজ হবেনা জেনেই তারা এই কর্মসূচির মাধ্যমে ধাপে ধাপে আন্দোলন এগিয়ে নেবে। অন্যান্য কর্মসূচি এখনো চূড়ান্ত না হলেও নির্বাচন কমিশন ঘেরাও, নির্বাচনের অনিয়ম-ভোটচুরি-জালিয়াতি ইত্যাদির যেসব তথ্য-ভিডিও চিত্র বিএনপির হাতে রয়েছে তা বিশ্ব গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরা হবে। জাতিসংঘ, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে এসব তথ্য-চিত্র তুলে ধরবে বিএনপি। পাশাপাশি বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জেলে থাকায় তাদেরকে মুক্ত করার বিষয়টিও সর্বাগ্রে চিন্তা করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। তাদের মুক্ত করেই পরবর্তীতে রাজপথের দৃশ্যমান আন্দোলনে নামবেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, বৈঠকে নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে মূল্যায়ন হয়েছে। এই নির্বাচন যে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হয়নি সেটি ইতোমধ্যে সরকার বুঝতে পেরেছে। কারণ এই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি, তাদের মতামতের প্রতিফলন হয়নি। তাই এই সরকার জনগণের সরকার নয়। তাই আমরা পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি। এই দাবি আদায়ে সকলে আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয়েছেন। একই সাথে আইনি লড়াইয়ের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এই নির্বাচন বাতিল চেয়ে রিট করবেন। একইসাথে এই নির্বাচন কেন অবৈধ ঘোষণা করে নতুন নির্বাচন দেয়া হবে না সে বিষয়েও আদালতের স্মরণাপন্ন হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এরপাশাপাশি চলবে আন্দোলনও।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই নির্বাচনে গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট চুরি করা হয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তথা গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে বিএনপিকে যুদ্ধ করতে হয়েছে। ভোট শুরুর আগেই জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এমনকি ভোটারদেরও ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমন অদ্ভুত নির্বাচন পৃথিবীর আর কোথাও হয়েছে কিনা তা নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। এজন্য আমরা আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন আদায় করে নেব।
স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না এবং আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেলে যে এই পরিস্থিতি হবে এটি আমি আগেই তুলে ধরেছি। তারপরও দল মনে করেছে জনগণকে বিষয়টি বোঝানো দরকার। এখন আমাদের যেমন ধারণা ছিল সেরকমই নির্বাচন হয়েছে। মানুষ তাদের ভোট দিতে পারেনি। তাদের সেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আন্দোলনের বিকল্প দেখছি না। খুব শীঘ্রই আমরা আলোচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন পরিবর্তিত পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। করণীয় নির্ধারণের প্রথম আলোচনা হলো, পরবর্তীতে আরও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।