পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোট ডাকাতি করে বিএনপিকে হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচনে শুধু আওয়ামী লীগই নয়, পুরো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিএনপিকে লড়তে হয়েছে। রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনÑশৃঙ্খলাবাহিনী সকলের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। নজিরবিহীনভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচন করেছে সরকার। ভোটের মাধ্যমে এই নির্বাচনের ফলাফল হয়নি। পূর্ব নির্ধারিত ফলাফলের প্রতিফল হয়েছে এখানে। এই ফলাফল আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। ৩০ ডিসেম্বর শুধু তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাই আমরা এ নির্বাচনের ফলাফল সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, কাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগে থেকেই এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। নির্বাচনের আগেই আসন ধরে ধরে ভৌতিক মামলা হয়েছে। সেই মামলা ধরে ধরে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই মামলায় বিরোধী দলকে আটকানোর জন্য গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে। সারা দেশে সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস শুরু করে। এর মাধ্যমে গোটা দেশে ভীতির পরিবেশ তৈরি করে। এমন নির্বাচন অতীতে আর কখনো হয়নি এ দেশে। এমনকি সারা দেশে টার্গেট করে এজেন্টদের আটক করা হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যা থেকে জাল ভোট দিয়ে কারচুপি করা হয়েছে। এর সাথে র্যাব-পুলিশ সহায়তা করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভোটের আগের রাতে কেন্দ্রগুলোতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সহায়তায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের লোকজন সিল মেরেছে। যার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। যে কেউ চাইলে আমরা তা দেখাতে পারি। শুধু আগের রাতেই নয়, ভোটের দিন সকালেও কেন্দ্র দখল করেছে সরকার দলীয় লোকেরা। কোন কোন কেন্দ্রে ১১টা পর্যন্ত পরিবেশ ভাল থাকলেও ১১টার পর পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল সরকার দলীয়দের হাতে। সব কেন্দ্র থেকে বিএনপির প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়। ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। বরং তারা সব সময় বিরোধী দলকে তাড়ানোর কাজে নিয়োজিত ছিল। অনেক জায়গায় তারা আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া ২০১৪ সালে ভোটে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা সঠিক ছিল। এবার তা প্রমাণিত হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়না তা প্রমাণিত হয়ে গেল।
এজেন্টদের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, পরিকল্পিতভাবে এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। এজেন্টদের যে তালিকার কাগজ ছিল সেগুলো ছিঁড়ে ফেলেছে। সিইসি এজেন্টদের বিষয়ে যা বলেছেন তা সঠিক নয়। আমাদের এজেন্টদের না আসতে দিলে আমরা কী করব? তিনি আরো বলেন, এ নির্বাচনে আগেই পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে। এ নির্বাচনে ভোট কারচুপির বিষয়টি আগে থেকেই ছিল সুপরিকল্পিত। ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে ভোটের আগের রাতে। এ নির্বাচনে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এ নির্বাচনে ভীতি ছাড়া কিছু ছিল না।
নির্বাচনে কোন বিদেশী পর্যবেক্ষক ছিল না মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ নির্বাচনে কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকদের আসতে দেওয়া হয়নি। আর ইইউ তাদের কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। যারা এসেছে তারা সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ‘স্পন্সরড’। সরকার নিজের টাকায় তাদের নিয়ে এসেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি জুলুম নির্যাতন সত্ত্বেও। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে ৭জন বিজয়ী হয়েছেন তারা শপথ নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো এ নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করছি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা কিভাবে নির্বাচিত হলেন জানতে চাইলে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, এটা নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করুন, তারা কিভাবে এই কয়জনকে বিজয়ী করলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি করছি।’ তিনি আরো বলেন, আমরা দাবি আদায়ে আইনি ও আন্দোলনের দুটোই চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি থাকবে। দল ও জোটের সাথে আলোচনা করে সেটি জানিয়ে দেওয়া হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।