Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনের নামে তামাশার কোনো প্রয়োজন ছিল না : বিএনপি

২২১ আসনে অনিয়মের চিত্র তুলে ইসিতে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার কথাই এখন সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন। আলাল বলেন, এ নির্বাচনে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জাগরণ এসেছিল। কিন্তু যেদিন সিইসি নির্বাচনের দিন হাসপাতাল, ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্সকে স্ট্যান্ডবাই রাখার নির্দেশে দিলেন সেদিনই আমরা ভেবেছিলাম নির্বাচনটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। বিষয়টি সিইসি আগেই জেনেছিলেন বলে ভোটারদের সতর্ক করেছিলেন। আলাল বলেন, ব্যালট পেপারে আগেই সিল মারা হবে, কোথাও কোথাও আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হবে এই আশঙ্কা আমরা আগেই প্রকাশ করেছিলাম। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মেরে পিটিয়ে কেন্দ্রে থেকে দূরে রাখা হবে। বিভিন্ন আসনে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হচ্ছে বা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্বাচনে সেই চিত্রই আমরা দেখছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অতি উৎসাহী সদস্যদের সহযোগিতায় এগুলো করা হচ্ছে। যাতে প্রমাণিত, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে। সকালে নির্বাচন শুরু হওয়ার সময়ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা প্রত্যাশা ছিল বলে মনে করেন আলাল। তিনি বলেন, নির্বাচনের নামে এই অর্থহীন তামাশার কোনো প্রয়োজন ছিল না। প্রেসিডেন্টের কাছে থেকে বা অন্য কোনো কায়দায় একটা গেজেট জারি করে নিলেই হতো যে, নৌকা ২৯৯ আসন আসন পেয়ে গেছে। বহু প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনের সঙ্গে যারা তামাশা করে তারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করেছে। জনগণের একদিনের রাজা হওয়ার সুযোগটাকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হলো। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলাল বলেন, আমরা নিজস্ব সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত (দুপুর ২টা পর্যন্ত) যা জানি, তাতে ২২১ আসনে অনিয়মের চিত্র অভিন্ন। মাত্রার হেরফের থাকতে পারে। আরেক প্রশ্নের জবাবে আলাল বলেন, ভোট তো প্রায় শেষ। ভোটে না থাকার তো কোনো যৌক্তিকতা নেই। থাকতেই হবে। এমন পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত আপনারা কী করবেন জানতে চাইলে আলাল বলেন, শেষ পর্যন্ত কী করব সে বিষয়ে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ঢাকা-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুল মান্নান বলেন, আমি নিজেই সকাল থেকে ২০ কেন্দ্রে ঘুরে দেখেছি কেন্দ্রে আমার কোন পোলিং এজেন্ট নেই। এছাড়া বাকি ১১৫টি কেন্দ্রেও কোন এজেন্টকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেও কোন সহায়তা পাইনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে ইসিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণতন্ত্র উদ্ধারে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। যেটাই হোক না কেন আমি নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত লড়াই করবো।
এদিকে ঢাকা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের ব্যরিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি তার আসনে সকাল ১১টার মধ্যেই ভোট শেষ হযে গেছে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে সাংবাদিকদের বলেন, ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে পুলিশের সহায়তায় নৌকা প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন কোন কেন্দ্রেই ধানের শীষের পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে না দিয়ে আওয়ামীলী সন্ত্রাসীরা পুলিশের সাহায্যে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নৌকা প্রতীকে সাল মারছে। আমার এজেন্টদের অনেক কেন্দ্রে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুমিল্লা-৩ আসনের প্রার্থী কে এম মজিবুল হকের অভিযোগ গ্রহণ করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল দুপুরে ইসিতে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসলে সেটি গ্রহণ না করে ফেরত পাঠায় ইসি। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গতকাল শনিবার দুপুর থেকে ভোটের দিন সকাল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। ভোটের আগের রাত থেকে মুরাদগনরের ১৩৭টি কেন্দ্রের ৪০-৫০ শতাংশ ব্যালট পেপার নৌকার পক্ষে কেটে নেয়। সকালে আমার নিজের কেন্দ্র মুরাদনগর ডিআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে কতটা ব্যালট বই আছে দেখতে চাইলে প্রিজাইডিং অফিসার তা দেখাতে পারেননি।
ইসি জ্ঞানপাপীর ভূমিকা পালন করেছে : ইসলামী আন্দোলন
এদিকে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টার সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অভিযোগ করে বলেছেন, সারাদেশে নির্বাচনের নামে কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপারে সিল মারা, কারচুপি, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, পুলিশ দিয়ে ভোটার ও প্রার্থীর হামলার ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এমন অভিযোগ করেছে। এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে দলের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন জ্ঞানপাপীর ভূমিকা পালন করেছেন, তবে একজন কমিশনার ছাড়া। সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এবারের সংসদ নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ২৯৮ আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। কিন্ত সব আসনেই প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় হাতপাখা মার্কার প্রার্থীর ওপর হামলা, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া ও ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে নৌকা, লাঙ্গল ও সাইকেল মাকায় ভোট দেওয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Mohammed Ramjan ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৫ এএম says : 0
    খালেদা জিয়া কে স্যালুট । আমরা যেটা আজ জানলাম তিনি প্রায় দশ বছর আগে সেটা জানতেন সুতরাং তাই তিনি আপোষ করেনি।
    Total Reply(0) Reply
  • DM Sajid ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৫ এএম says : 0
    বিএনপির একমাত্র বুদ্ধিমান লিডার হচ্ছে আলাল সাহেব।তিনি যথারীতি একজন ভালো এবং দূরদর্শি রাজনৈতিক ব্যক্তি।
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৬ এএম says : 0
    সেনাবাহিনী প্রমাণ করল আওয়ামীলীগ শুধু মানুষের বয়স কিনতে পারে না। আওয়ামীলীগের পক্ষে আর সবই সম্ভব।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Muzammel Muzammel ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৭ এএম says : 0
    ধন্যবাদ বুঝতে অনেক দেরী হয়ে গেলেও।
    Total Reply(0) Reply
  • Iftekhar Kapil ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৭ এএম says : 0
    আগামী ৫ বছরে বিএনপি নামে যে একটা দল ছিল তা সবাই ভুলে যাবে। কারণ আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া যে অধিকার আদায় করা যায়না তা আজ আবার প্রমাণিত হলো। অধিকার কেউ কাউকে দেয়না অধিকার আদায় করে নিতে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Hin Shopno ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৮ এএম says : 0
    যেভাবে ভোট জালিয়াতি হয়েছে হয়তো জিতে যাবে আওয়ামীলীগ! কিন্তু অনেকদিনের গর্ব করা যে গনতন্ত্র ছিলো সেটাকে গলা টিপে একনায়কতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করলো। এই নির্বাচন দেশের জনগনের টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Kiraman Katibin ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩০ এএম says : 0
    জীবনের প্রথম ভোটটাও আজ দিতে পারলাম না, ভোট ডাকাতদের কারণে।
    Total Reply(0) Reply
  • Zahid Hassan ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩০ এএম says : 0
    Ekdom right kotha..ei drama golo kore desh er onek taka destroying korse r onek niriho manush k o hamla mamla dia ses kora hosse tader jibon
    Total Reply(0) Reply
  • yeasin ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:৪০ এএম says : 0
    ভোট কিভাবে শানি্ত পূন হয়েচে আমরা বূজবো।আয়মীলিগ কেনে্দর ভিতরে সাদারন মানুসকে ঢুকতে দেয় নাই।কেন্দের ভিতরে আয়মীলিগ পান্তি
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ