পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719986692](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভোটের আগের দিন রাজধানী সুনশান নিরবতার এক স্তব্ধ শহর। কোথাও ছিল না আগের সেই চিরচেনা যানজট। ফুটপাতে নেই হকারদের হাক-ডাক। বন্ধ বেশিভাগ হোটেল-রেস্তুরা। আবাসিক হোটেলগুলোতেই বর্ডারদের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। মাঝে মধ্যে দু’একটি গণপরিবহন চললেও এগুলো প্রায় যাত্রীশূন্যই বলা চলে। রাজধানীজুড়ে যেন বইছে ছুটির আমেজ। তবে নগীরর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে র্যাব-পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়। ভোট দিতে বেশিভাগ মানুষ আগেভাগেই চলে গেছেন নিজ নিজ গ্রামে। এই যেন জনমানবহীন এক ভূতুড়ে নগরী।
গতকাল রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, কাকরাইল, ফার্মগেট, মহাখালি, ধানমন্ডি, মিরপুর, বনানী, কাকলী ও গুলশানসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এমনিই চিত্র দেখা যায়। যেখানে কয়েকদিন আগেও মানুষের পদচারণায় মুখর ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে এসব এলাকা এখন প্রায় জনশূন্য।
গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী স্বাভাবিক সময়ের প্রায় উল্টো। ফার্মগেটে দৌড়ে বাসে ওঠার তাগিদ নেই কোনো যাত্রীর, নেই দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের ভিড়। মহাখালীতে ট্রাফিক সিগন্যালে থেমে থাকা গাড়ি নেই, নেই মিরপুরের ১০ নম্বর গোল চত্বরে ঝুঁকি নিয়ে পথচারীর সড়ক পারাপারের চিত্র। তবে প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্তক অবস্থান নিয়েছেন। প্রয়োজনে পদচারীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কাকরাইল মোড়ে মোটরসাইকেল ও বাসের দেখা মেলেনি। তবে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনের সামনে দেখা যায়, রাস্তায় চলছে কেবল সিএনজি, প্রাইভেটকার। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি আছে সেখানে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের সড়ক ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে রাস্তা একেবারই ফাঁকা। সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কগুলোয় টাঙানো আছে প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টার। এ সড়কেও লোকজনের আনাগোনা কম। দুর্নীতি দমন কমিশনের সদর দপ্তরের সামনের সড়কের ফুটপাতের এক চা দোকানদার বলছিলেন, ঢাকা একেবার ফাঁকা হয়ে গেছে। মগবাজার মোড়েও দেখা গেল, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি।
এছাড়াও যাত্রাবাড়ী হয়ে মানিকনগর দেখা যায়, রাস্তার পাশে কয়েকটি মোটরসাইকেল রাখা। মোটরসাইকেল আরোহীদের গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাগণ। একই চিত্র খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, মালিবাগ ও মৌচাক মৌড়ে। মতিঝিল ও কারওয়ান বাজারের অফিস পাড়াগুলোতে অন্যান্যদিনের মতো ব্যস্ততা নেই।।
তবে কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন, সদরঘাট, সায়েদাবাদ, মহাখালী এবং গাবতলীর বাস স্টপেজ গুলোতে ঘরমুখী মানুষদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। রাজধানীতে যারা রয়ে গেছেন রাজপথে তাদের উপস্থিতি অনেকটাই কম। একান্ত প্রয়োজন, জীবিকার তাগিদ অথবা পেশাগত দায়িত্ব পালনে অফিসগামী মানুষের উপস্থিতিই অনেকটাই কম। ইতোমধ্যে কার্যকর হওয়া মোটরসাইকেলের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি গণপরিবহন এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অনেকটাই কম সড়কে। তবে এতে ভোগান্তিতে পোহাতে হয় না ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের। তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক কাওসার হোসেন বলেন, আজকের দিনটা অফিস বন্ধ দিলে ভালো হতো। সড়কে বাসের সংখ্যা অন্যান্য দিনের থেকে কম। তবুও যখন দেয়নি অফিসে তো যাওয়া লাগবেই। আর কিছু শিপমেন্টও আছে। তবে সমস্যা হচ্ছে না। যে দুই একটা বাস আসছে সেগুলোর বেশিরভাগই সিট ফাঁকাই আছে। এদিকে অন্যান্য সময়ের থেকে কাজের চাপ কম ট্রাফিক সার্জেন্টদের জন্যও। মিরপুর ১০ নম্বর চত্বরে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট ঝোটন সিকদার বলেন, সড়কে গাড়ির চাপ অনেক কম। অন্যান্য সময়ের মতো না। তবুও নির্বাচনের কারণে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। ফাঁকা ঢাকায় অনেকটা অলস সময় পার করছেন শপিং সেন্টার এবং বিপণি বিতানের ব্যবসায়ীরা। ফুটপাতে লোক নেই বলতে গেলে চলে।
মগবাজার রেলগেটের কাছের এক চা দোকানদার বলছিলেন, ছুটি পেয়ে ঢাকা শহর ছেড়ে অনেকেই গেছেন গ্রামে। আজ ছুটির দিন হওয়ায় ঢাকায় যারা আছেন তারাও প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না। এ কারণে আজ ঢাকার রাস্তায় লোকজন অনেক কম। হাতিরঝিল মোড়ে সড়কে দেখা গেল, স্থানীয় কয়েকজন কিশোর দল বেঁধে রাস্তায় সাইকেল চালাচ্ছে। অথচ ব্যস্ত এই সড়কে অন্যান্য দিন এখানে গাড়ির জট লেগেই থাকে। সাইকেল চালানোর সময় এক কিশোরকে বলতে শোনা যায়, এমন ফাঁকা ঢাকা দেখা যায় কেবল ঈদের সময়।
ভোটের আগের দিন মধ্যরাত থেকে ভোটের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ৩০ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ১০ ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যানবাহনগুলোর মধ্যে রয়েছে বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন যন্ত্রচালিত যানবাহন। এ ছাড়া ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ১ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী, তাঁদের নির্বাচনী এজেন্ট, পরিচয়পত্র থাকলে দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। পরিচয়পত্র থাকলে সংসদ নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি ও বিদেশি সাংবাদিকের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। এ ছাড়া নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনে বৈধ পরিদর্শক এবং জরুরি কাজ, যেমন: অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কাজে ব্যবহারের জন্য যান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।