পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমিতে শ্রমিকের কাজের গতিই বলে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের পরিকল্পনা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। র্যাব-পুলিশ-ডিবির সমন্বয়ে এবারের মেলায় শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। মাঠে থাকবে আনসার, ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, এবারের বইমেলায় দর্শনার্থী, লেখক, প্রকাশকসহ দেশের বিশিষ্টজনদের নিরাপত্তা দিতে সর্বকালের সেরা নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় থাকবে বাংলা একাডেমির বইমেলা প্রাঙ্গণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বিভিন্ন পয়েন্টে থাকবে র্যাব ও পুলিশের চেকপোস্ট।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার সময় টিএসসির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। এরপর অভিজিতের প্রকাশকদের ওপর হামলা ও জাগৃতির প্রকাশক ফয়সল আরেফীন দীপনকে হত্যার পরে জঙ্গি হামলার আতঙ্ক রয়েছে প্রকাশকদের মধ্যেও। সম্প্রতি লেখক, প্রকাশক, ব্লগারসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যার হুমকি দিয়েছে বেশ কয়েকটি উগ্রপন্থী সংগঠন। এগুলো মাথায় রেখে নতুন করে চলছে নিরাপত্তা প্রস্তুতি।
জানা গেছে, বইমেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় বসানো হবে দুইশতাধিক ক্লোজ সার্কিড (সিসি) টেলিভিশন ক্যামেরা। এগুলো মনিটর করার জন্য থাকবে কন্ট্রোল রুম। থাকবে অতিরিক্ত লাইটিং। প্রয়োজনে যে কোন সড়কের যান চলাচল সীমিত কিংবা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে ডিএমপি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়। হাতেগোনা কয়েকটি দোকান নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। আর বাকি দোকানগুলোর প্রায় ৪০-৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রাত-দিন শ্রমিকরা ব্যস্ত স্টল তৈরির কাজে। মাথায় রয়েছে অনাকাক্সিক্ষত বৃষ্টির ক্ষতি এড়ানোর প্রস্তুতিও। গত বছর বৃষ্টিতে ভিজে যায় কয়েকটি প্রকাশনার স্টলের বই। তাই এবার বৃষ্টিতে ক্ষতির মোকাবেলায় বাড়তি প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, গতবারের মতো এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকছে মেলার অন্যতম আকর্ষণ। তাই এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণের বেশি জায়গা নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ২০১৫ সালে এখানে মেলার পরিসর ছিল দেড় লাখ বর্গফুট। আর এবার সেখানে মেলার পরিসর করা হয়েছে ৪ লাখ বর্গফুট। এখানে ১৫টি গুচ্ছ আকারে সাজানো হচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণ। প্রতিটি গুচ্ছে থাকবে একটি প্যাভিলিয়ন, ৪ ইউনিটের ১টি স্টল, ৩ ইউনিটের ২টি স্টল, ৩ ইউনিটের ৭টি স্টল এবং ১ ইউনিটের ৮টি স্টল। প্রতিটি গুচ্ছের প্রবেশমুখে থাকবে প্রকাশনা সংস্থাগুলোর নাম।
এছাড়া এবারের মেলায় ৪০০টি প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ৬৫০টি ইউনিটে বই বিক্রি করবে। মেলায় থাকবে ১৫টি প্যাভিলিয়ন, চার ইউনিটের ১৮টি স্টল, ৩ ইউনিটের ৩৮টি স্টল, ২ ইউনিটের ১২৭টি স্টল এবং ১ ইউনিটের ১৮০টি স্টল।
থাকছে দর্শনার্থীদের জন্য ডিজিটাল নির্দেশিকাও। বাংলা একাডেমিতে ১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫টি ডিজিটাল নির্দেশিকা তথ্য দিবে দর্শনার্থীদের। থাকছে চারটি প্রবেশদ্বার। একই সাথে মেলা থেকে বের হতেও চারটি পথ ব্যবহার করতে পারবেন দর্শনার্থী, ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
বাংলা একাডেমির মূল প্রাঙ্গণে থাকবে সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কেন্দ্র। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের স্টল। মেলার মূল প্রাঙ্গণে বাংলা একাডেমির ২টি বিক্রয় কেন্দ্র ও একটি প্যাভিলিয়নে একাডেমির বইসমূহ বিক্রি করবে। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও থাকবে বাংলা একাডেমির একটি প্যাভিলিয়ন।
বাংলা একাডেমি ছাড়াও একাডেমির মূল প্রাঙ্গণে থাকা সরকারী অন্য প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় গণগ্রন্থাগার, জাতীয় জাদুঘর, এশিয়াটিক সোসাইটি, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শিশু একাডেমিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
মেলার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান জানিয়েছেন, মেলায় স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। আমরা একটি সুন্দর মেলা উপহার দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি এ বছর মেলায় গতবারের তুলনায় দর্শনার্থী বাড়বে।
এ সময় মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, এবার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার মোকাবেলা করতে পর্যাপ্ত পুলিশ-র্যাব মেলার নিরাপত্তায় থাকবে। পুরো এলাকাকে সিসিটিভির আওতায় রাখা হবে। আশা করি এবারের বইমেলায় বইপ্রেমিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।