পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজারের বাহার মার্কেট থেকে জব্দকৃত সিন্দুকের মালিক আবু আহমেদকে খুঁজছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, কসমেটিকস ব্যবসার আড়ালে চোরাই স্বর্ণ ও ডলারের ব্যবসা করে আসছিল সে। সে চোরাচালানি চক্রের মূলহোতা। সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে ডিবি। তবে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আবু আহমেদ ও তার সহযোগীদের পাকড়াও করা যায়নি।
নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজারের তামাকুমুন্ডি বাহার মার্কেটের আবু আহমেদের আস্তানা থেকে জব্দ করা সিন্দুক থেকে ২৫০টি স্বর্ণের বার ও নগদ ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করে ডিবি। এরমধ্যে একটি সিন্দুক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৫০ পিস স্বর্ণের বার। আরেকটিতে পাওয়া গেছে নগদ ৬০ লাখ টাকা। তবে, তৃতীয় সিন্দুকটিতে কিছু পাওয়া যায় নি। সোমবার মধ্যরাতে সিন্দুক তিনটি খোলা হয়। সন্ধ্যায় জব্দ করার পর নগরীর কোতোয়ালি থানায় পাঠানো হয় সিন্দুক তিনটি। একটি সিন্দুক খুলে তাতে ২৫০ পিস স্বর্ণের বার পাওয়া গেছে। এগুলোর প্রত্যেকটির মূল্য আনুমানিক তিন লাখ টাকা। সে হিসাবে এসব বারের মোট মূল্য সাড়ে ৭ কোটি টাকা। আরেকটিতে মিলেছে এক হাজার টাকার নোটের ১০০টি বান্ডিল, প্রত্যেক বান্ডিলে ছিল ৬০ হাজার করে। যাতে পুরো অংক দাঁড়ায় ৬০ লাখ টাকা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্ধ্যায় বাহার মার্কেটের ষষ্ঠ তলায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনটি সিন্দুক জব্দ করা হয়। এরমধ্যে দু’টি সিন্দুক পাওয়া যায় একটি জুতার গুদামে, আরেকটি সিন্দুক পাওয়া যায় পাশের একটি কক্ষে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহনী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমীনের উপস্থিতিতে চলে পুরো অভিযান। পরে সিন্দুক তিনটি কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মধ্যরাতে সিন্দুক খুলে টাকা ও স্বর্ণের বার উদ্ধার করে ডিবি।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার বাবুল আক্তার জানান, দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ চোরাচালান চক্র এসব স্বর্ণ ও অর্থ এনে এভাবে মজুদ করে রেখেছিল। এসব স্বর্ণ ও টাকার মালিক আবু আহমেদকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তাকে পাওয়া গেলে ঘটনার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে। স্বর্ণের বার ও টাকা উদ্ধারের ঘটনায় চোরাচালান আইনে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত চোরাচালানি চক্রের সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। পুলিশি অভিযানের পর থেকে আবু আহমেদের দুইটি কসমেটিকসের দোকান তালাবদ্ধ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, ফটিকছড়ির বাসিন্দা আবু আহমেদ কসমেটিকস ব্যবসার আড়ালে চোরাচালান করে আসছে। তামাকুমন্ডি লেইনে তার দুইটি কসমেটিকসের দোকান রয়েছে। তিন বছর আগে বাহার মার্কেটের ছয় তলার তিনটি কক্ষ জুতার গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলে ভাড়া নেয় সে। মার্কেটের মালিক রেয়াজুদ্দিন বাজার বণিক সমিতির নেতাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, বাজারের ব্যবসায়ীরা তাকে ‘মাফিয়া’ হিসেবে চেনে। জুতার গোডাউনের কথা বলে কক্ষ তিনটি ভাড়া নেওয়া হলেও সেখানে তিনটি লোহার সিন্দুক এনে রাখে সে। এসব সিন্দুকে স্বর্ণের বার মজুদ রাখা হতো। তিনটি কক্ষকে সার্বক্ষণিক মনিটর করার জন্য বসানো হয় সিসিটিভি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি কক্ষে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সে সময় সেখানে সিসিটিভি দেখতে পায় পুলিশ কর্মকর্তারা। ওই সিসিটিভির সূত্র ধরে আরও দুইটি কক্ষের সন্ধান মেলে। ডিবির পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সিসিটিভির ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে। ওই ফুটেজে ওই তিনটি কক্ষে যাদের যাতায়াত ছিল তাদের সবার ছবি পাওয়া গেছে। এ ছবি ধরে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে ডিবি পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি চক্রের মূলহোতা আবু আহমেদ। কসমেটিকসের আড়ালে চোরাইপথে স্বর্ণের বার এনে ব্যবসা করত সে। ডলার ব্যবসার সাথেও তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ২০১৩ সালে একবার অপহৃত হন আবু আহমেদ। ওই অপহরণের ঘটনার নেপথ্যে চোরাচালানের বিষয় জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর আগে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে ১২০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে পুলিশ। ওই চালানের সাথে আবু আহমেদের যোগসূত্র রয়েছে বলে জানান ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।