Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

পর্দার আড়ালে চলছে ক‚টনৈতিক তৎপরতা

নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিকে। সবাই চায় জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন। জাতিসংঘও চায় এই নির্বাচনে জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক। ঢাকার গুলশনা-বনানী-বারীধারার কূটনৈতিক পাড়ায় বিদেশীদের মালিকানাধীন হোটেল-মোটেল, বাসা-অফিস সরগরম নির্বাচনী আলোচনায়। নানা ভাবে চেষ্টা চলছে নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের।
মূলত নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পর্দার আড়ালে চলছে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করেছেন্ তার আগে তিনি ঢাকায় কর্মরত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করেন। ঢাকায় কর্মরত বৃটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক নির্বাচনে প্রচারণার পরিবেশ দেখতে গতকাল সিলেটে যান। তিনি প্রচারণা সরেজমিন প্রতক্ষ করেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্ত্যোনিও গুতেরেস নির্বাচনে ভয়ভীতিহীন ও দমন-পীড়ন মুক্ত পরিবেশে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য হয় সে পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মহল চায় বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে জনগণ ভোটের অধিকার নিশ্চিত আবশ্যক। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর পাতানো নির্বাচনের মতো এবারও যেনতেন প্রকারে নির্বাচন করা হলে বাংলাদেশ মহাবিপর্যয় নেমে আসবে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক দেশের মর্যাদা হারালে আন্তর্জাতিক মহল মুখ ফিরিয়ে নেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের ওপর নানা বিধি নিষেধ আরোপ করা হতে পারে। জাতিসংঘসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন কেউ বাংলাদেশকে সে অবস্থানে দেখতে চান না। এ জন্যই শেষ মুহুর্তে কূটনীতিকদের দৌঁড়ঝাপ বেড়ে গেছে।
নির্বাচনী প্রচারণায় ‘লেভের প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরিতে ইসি ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকায় কর্মরত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লম বার্নিকাটকে সিইসি কে এম নুরুল হুদা নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন তফসিল ঘোষণার পর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠন করবেন। কিন্ত নির্বাচনী মাঠের অবস্থা দেখে মার্কিনীরা হতাশ। গত এক বছরে জাতিসংঘের মহাসচিবসহ যে সব বিদেশী সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী এবং দাতা সংস্থার প্রতিনিধি ঢাকা সফর করেছেন তাদের সকলকেই জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাঠ তৈরির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে সেটা করা হয়নি। ফলে দেশের মানুষের মতোই বিদেশীরাও সিইসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলছেন। প্রশাসন, আইন শৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা এবং প্রার্থীতা থাকা না থাকায় আদালতকে টেনে আনাকে স্বাভাবিক চিত্র মনে করছেন না। গতকাল কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সে বিষয়ে তিনি নিশ্চয়তা চান। এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠকের আগে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও তার কথা হয়েছে বলে সুত্রে দাবি।
কূটনৈতিক সুত্র জানায়, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ ভারত, চীন। প্রভাবশালী এই দুই দেশ চাচ্ছে না বাংলাদেশের যেনতেন নির্বাচন করে ভয়াবহ বিপদের সন্মুখীন হোক। সে জন্য পর্দার আড়ালে তারাও তৎপরতা চালাচ্ছেন। সুত্র আরো জানায়, কয়েকদিন আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। দুই বৈঠকে তাকে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে নিরপেক্ষ ভাবে ভোট হবে। সব দল সমানভাবে নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ পাবে। কিন্তু বাস্তবে মাঠে সেটা না দেখায় তিনি তৎপর হয়ে উঠেন।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভয়ভীতিহীন ও দমন-পীড়নহীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব পক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হয়, তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান। আজ বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিবের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান হয়। জাতিসংঘের মহাসচিবের পক্ষে তাঁর মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ বিবৃতি দেন।
নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় সংঘর্ষ, বলপ্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে বৃটিশ। ঢাকায় কর্মরত বৃটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক গতকাল সিলেট সফরে গিয়ে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বৃটেন উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করে। কিন্তু কিছু কিছু স্থানে সংঘর্ষ এই পরিবেশ নষ্ট করছে, যা নিন্দনীয়। ভোটের সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করতে তিনি সিলেট যান। সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী অর্থমন্ত্রীর ভাই ড. একে আবদুল মোমেন ও বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মোক্তাদীরের বাসায় গিয়ে পৃথ পৃথক বৈঠক করেন। যেখানে গিয়ে তিনি দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। তিনি জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য এবং উৎসবমুখর নির্বাচন প্রত্যাশা করে। প্রচারণায় অপ্রীতিকর ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। #



 

Show all comments
  • Ali Akbar ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫০ এএম says : 0
    ক্ষমতার মজা এমন পেয়েছে আওয়ামী লীগ , তাদের কাছে দেশের সম্মান কোন বিষয় নয় । চায় ক্ষমতা , চাই আরাম আয়েশ , চাই সম্পদের পাহাড় । এই সব কুটনৈতিক গোনার সময় তাদের নেই । সব মেরে হলেও ক্ষমতা চাই ..
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rahman ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫১ এএম says : 0
    যে কোনো কিছুর বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা চায়, প্রয়োজনের দেশ বিক্রি করেও হলে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mondol Md Azom ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫১ এএম says : 0
    ভোলো কিছু কি আশা করা যায়? নাকি শুধুই হুদাহুদি।
    Total Reply(0) Reply
  • Sumon BD ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫২ এএম says : 0
    নির্ভয়ে ভোট দিন, নিজের অধিকার প্রতিস্টা করুন।না হয় আজীবন প্রস্তাতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Sumon BD ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫৩ এএম says : 0
    কূটনৈতিকদের দিকে চেয়ে থাকলে হবে না। দিন শেষে দেখা যাবে ওরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিচ্ছে। তাই বিপ্লব দরকার, বিপ্লব।
    Total Reply(0) Reply
  • Sumon BD ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫৩ এএম says : 0
    আওয়ামী লীগ সবসময়ই পর্দার আড়ালের পাকা খেলোয়াড়, তাই দেশবাসীর জন্য আশার কিছু নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • বিপ্লব ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৫৫ এএম says : 0
    দেখা যাক শেষ পর্যন্ত আসলে কী হয়, যদিও আশা কম।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ