Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন

নিক্কি এশিয়ান রিভিউয়ের প্রতিবেদন

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রোববার বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সময় ঘনিয়ে আসায় প্রচারণায় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল দুই অংকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, যারা নির্বাচনে জিতে যেতে পারে বলে ধারণা করা হয়, তারা পাঁচ বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ১০ ভাগ অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফেরেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে তিনি যে অর্থনীতিতে তদারকি করেছেন, তা গড়ে শতকরা ৬ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০১৮ সালের জুনে যে অর্থবছর শেষ হলো তাতে অর্থনীতি শতকরা ৭.৮৬ ভাগ সম্প্রসারিত হয়েছে। একটি হোটেলে কাজ করেন এবং শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেন এমন একজন কর্মী বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি একই রকমভাবে অর্জিত হচ্ছে এবং কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এক ধাপ এগিয়ে গেছে প্রতিশ্রুতিতে। তারা পাঁচ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ১১ ভাগ লক্ষ্য স্থির করেছে।
বিভিন্ন ব্রান্ডের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ সুপরিচিত। কিন্তু অনেক বছর বাণিজ্যিক ঘাটতি আছে এখানে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা হলো আভ্যন্তরীণ চাহিদা, যা আসে ১৬ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে। এ দেশটি জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে অষ্টম বৃহৎ।
এ দেশটির জনসংখ্যার বড় অংশ যুব সমাজ। কর্মক্ষম বয়সী মানুষের সংখ্যা ১১ কোটি। প্রতি বছর তা শতকরা ২ ভাগ করে বাড়ছে। আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে রয়েছে দেশটি। শেখ হাসিনার সরকার বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং আভ্যন্তরীণ শিল্পের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বিশেষ ১০০ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করেছে। এ বছর আগস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ তামাক কারখানা আকিজ গ্রুপের সঙ্গে তামাক ব্যবসার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সরাসরি বিদেশী কোনো বিনিয়োগ।
বিরোধী শিবির বলছে, শুধু রাষ্ট্রীয় নীতি দিয়ে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সৃষ্টি করা যাবে না। এটা করতে জনগণের কঠোর শ্রম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ফলপ্রসূ। কর্মক্ষেত্রের বিচারে এখানে রয়েছে চমকপ্রদ রেকর্ড। কাজের জন্য প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী শ্রমিক অভিবাসী হয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ও অন্যান্য স্থানে। তারা যে অর্থ দেশে পাঠান তা মোট ব্যয়ের শতকরা প্রায় ১০ ভাগ।
২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। এবারের নির্বাচনের ওপরও বিতর্ক ছায়া ফেলেছে। এ বছরের শুরুতে শেখ হাসিনার কয়েক দশকের প্রতিদ্ব›দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির অভিযোগে জেল দিয়েছে আদালত। একজন নিত্যপণ্যের বিক্রেতার কণ্ঠে সাধারণ মানুষের মতামত প্রতিধ্বনি হলো। তিনি বললেন, খালেদা জিয়ার ওই জেল দৃশ্যত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে সুষ্ঠু নির্বাচনকে খর্ব করা হয়েছে।
মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের কথা তুলে ধরেন সমালোচকরা। একটি পত্রিকার একজন সিনিয়র সম্পাদক বললেন, শেখ হাসিনার সরকার যে কতৃত্ববাদী হয়ে উঠছে এটা হলো তার লক্ষণ।
(নিক্কি এশিয়ান রিভিউয়ের স্টাফ রাইটার ইউজি কুরোনুমারের লেখার সংক্ষিপ্ত অনুবাদ)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ