পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের ১৫টিতেই দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা। ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে। এখানে এখনও পর্যন্ত চতুর্মুখী লড়াইয়ের আভাস। এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টি এবং জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটের মাঠে। আর এ কারণেই ভোটের আগে হিসাব ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে। ভোটাররা বলছেন, চার প্রার্থী সমানতালে ভোটের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে এ চারজনের মধ্যেই। সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার মধ্যেও এ আসনটি ব্যতিক্রম বলছেন অনেকে।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। মহাজোটের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে লাঙ্গল নিয়ে লড়াইয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। চট্টগ্রামের সাবেক এ মেয়র ভোটের মাঠে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপির একক প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আসনটিতে বিএনপির শরিক জামায়াতের প্রার্থী দিতে চেষ্টা করে দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জোটের মনোনয়ন পায়নি তারা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে থেকে যায় জামায়াতের উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা জহিরুল ইসলাম। নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেই মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। প্রধান দুই জোটের মনোনয়ন বঞ্চিত দুই নেতা ভোটের মাঠে থেকে যাওয়ায় চিত্র দ্রুত পাল্টাতে থাকে। এ অঞ্চলের বাকি আসনগুলোতে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও এ আসনটিতে চতুর্মুখী লড়াইয়ের আভাস মিলছে।
নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান নিজেকে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান এমপি হওয়ায় প্রশাসনের দিক থেকে সর্বাত্মক সুবিধা পাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীও প্রচারণায় তৎপর রয়েছেন। তাকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছেন তার সমর্থকরা। পারিবারিক অবস্থান এবং রাজনৈতিক কারণে বাঁশখালীতে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত তিনি। তিনিও নিজেকে মহাজোটের বলে পরিচয় দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারে নৌকার সমর্থকদের সাথে সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে লাঙ্গলের সমর্থকদের। এ ঘটনায় পুলিশসহ দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। অন্যান্য এলাকায় বিরোধী প্রার্থীরা একতরফা মার খেলেও এখানে নৌকার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন লাঙ্গলের সমর্থকরা।
ধানের শীষের প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীও প্রচারণায় গিয়ে নৌকার সমর্থকদের হামলার মুখোমুখি হয়েছেন। তাকে অবরুদ্ধ করে ফাঁকা গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরপরও মাঠ ছাড়েননি তিনি। ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও মাঠে থাকবেন। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেই ঘরে ফিরবেন। নৌকার সাথে ধানের শীষ আর লাঙ্গলের সংঘাত হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে আপেল মার্কায় জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী জহিরুল ইসলাম। তিনি অনেকটা নিরবেই ভোটের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। মার্কা ও নিবন্ধন হারানো জামায়াতের এ নেতা ‘নাগরিক ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
প্রধান দুই জোটের দুই ‘বিদ্রোহী’ লড়াইয়ে থেকে যাওয়ায় ভোটাররা ভোটের হিসেব নিয়ে নানামুখী আলোচনা করছেন। তারা বলছেন, নৌকার জয়ের পথেই বাধা হবে লাঙ্গল। আবার ধানের শীষেরও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আপেল মার্কা। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও এ আসন থেকে নির্বাচিত হন জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। সারাদেশে ধানের শীষের ভরাডুবি হলেও তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থন পান তিনি। এবার জামায়াতের প্রার্থী থাকায় ওই ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। গেল উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হন জামায়াতের জহিরুল ইসলাম। তিনি বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করেন। আর এ কারণে জামায়াত আশাবাদী।
নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। এখানে আওয়ামী লীগের কোন্দল চরমে। গত ৫ বছরে থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর, সাংবাদিককে হত্যার হুমকিসহ নানা ঘটনায় সমালোচিত মোস্তাফিজ। অন্যদিকে লাঙ্গলের প্রার্থী এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় মহাজোটের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে মোস্তাফিজুর রহমান জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী ইতোমধ্যে বলে রেখেছেন ‘বাঁশখালীতে নৌকা ভাসবে না’। স্থানীয়দের অভিমত, এখানকার ভোটারেরা মার্কার চেয়ে ব্যক্তি ইমেজকে গুরুত্ব দেন। এবারের ভোটেও তার ব্যতিক্রম হবে না।
এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) এইচ এম ফরিদ আহম্মদ, বাংলাদেশ ন্যাপের (কুঁড়েঘর) আশীষ কুমার শীল, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের (মোমবাতি) মোহা. মনিরুল ইসলাম, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের (চেয়ার) মোহাম্মদ মহিউল আলম চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (বেঞ্চ) বজল আহমদ।
চট্টগ্রাম জেলার সর্বদক্ষিণের উপজেলা বাঁশখালীর ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌর সদর নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৬ আসনটি। এ আসনের মোট ভোটার তিন লাখ তিন হাজার ১২৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৩৭ জন এবং নারী এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৮৬ জন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১১০টি ভোট কেন্দ্রের ৫৯০টি ভোট কক্ষে ভোট দেবেন এখানকার ভোটাররা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।