Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিজার্ভ চুরির আগে সতর্কতা আমলে নেয়নি বাংলাদেশ : ফেড

প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি দশ লাখ ডলার চুরি হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্ক করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এদিকে, রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত পেতে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও সুইফট কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর আজ সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন। সেখানে আগামী মঙ্গলবার একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের রিজার্ভ অর্থ চুরির আগেই এ ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কা করেছিলেন নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের অনেকে। সেই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির আগের বছরগুলোতে কয়েকবার এমন সাইবার হামলার ঝুঁকি যাচাই করে দেখেছিলেন ফেডের নিরাপত্তাবিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তারা। তবে বারবারই অনুসন্ধানের পর হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা তারা নাকচ করে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফেডের ম্যানেজারদের দুশ্চিন্তা ছিল, অন্যান্য বেশ কিছু দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সেকেলে প্রযুক্তির সুযোগ নিতে পারে সাইবার অপরাধীরা। স্থানীয় কম্পিউটার হ্যাক করে যুক্তরাষ্ট্রের এই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা ওই সব দেশের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তখন তারা হানা দিতে পারে। নিউইয়র্ক ফেডের সাত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা এবং বিষয়টি সম্পর্কে অভিজ্ঞ এক সাবেক মার্কিন সরকারি কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার শেষে এসব তথ্য জানায় রয়টার্স।
সূত্র মতে, রিজার্ভের অর্থ চুরির মতো ঘটনার আশঙ্কা করা হয়েছিল বেশ আগেই। বাংলাদেশের মতো কয়েকটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তায় ঝুঁকির বিষয়টি নিয়ে, কয়েক বছর ধরেই আলোচনা করে আসছিল, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ও এফবিআই। তারা বিদেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সেকেলে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বেশ কিছু দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। যার মধ্যে সুইফট ব্যবস্থা একটি। যদিও এ বিষয়টিকে সবচেয়ে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়।
গেল সপ্তাহে সুইফট কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটারে তাদের সফটওয়্যার পরিবর্তন করে রিজার্ভের অর্থ চুরি করে হ্যাকাররা। এর আগেও বেশ কয়েকবার এ ধরনের আক্রমণের শিকার হয় তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি, এ রকম হামলার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্কবার্তা দেয়নি, সুইফট। তাই রিজার্ভ চুরির দায় এড়াতে পারে না তারা। কিন্তু সুইফট বলছে, এ ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার কারণে। আর সিস্টেম হ্যাকের কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, দাবি ফেড কর্তৃপক্ষের।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ফেড ও সুইফট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের নেতৃত্বাধীন এ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন-ব্যাংকের আইটি অপারেশন্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক কাজী নাছির আহমেদ, অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক বদরুল হক খান ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের উপ-পরিচালক আবদুল রব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, ফেড ও সুইফটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে গভর্নরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন। সেখানে ১০ মে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে মোট ১০১ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজার্ভ চুরির আগে সতর্কতা আমলে নেয়নি বাংলাদেশ : ফেড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ