Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আনফ্রেলের

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:২২ এএম

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতি নির্বাচন কমিশনের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দ্য এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (আনফ্রেল)। এর প্রেক্ষিতে পর্যবেক্ষণ মিশন বাতিল করার পাশাপাশি আনফ্রেল আসন্ন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে, বিরোধী নেতাকর্মীদের ঢালাও গ্রেফতারের ঘটনায় আনফ্রেল উদ্বিগ্ন। সংগঠনটি বলেছে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন মূল্যায়নের পুরো দায়ভার সুশীল সমাজ ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের ওপর পড়েছে। কিন্তু তারা তীব্র দমনমূলক রাজনৈতিক পরিবেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই পরিবেশ পর্যবেক্ষকদের অবাধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সহায়ক না। রোববার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এসব কথা বলেছে।

নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে অ্যাক্রেডিটেশন (অনুমতিপত্র) প্রদান না করায় আনফ্রেল তাদের পর্যবেক্ষণ মিশন বাতিল করেছে। এ বিষয়ে সংগঠনটি বিবৃতিতে বলেছে, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অ্যাক্রেডিটেশন আবেদন নিয়ে কর্তৃপক্ষ যে আচরণ করেছে তাতে আনফ্রেল উদ্বিগ্ন। কয়েকটি স্থানীয় পর্যবেক্ষক দলসহ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের অ্যাক্রেডিটেশন প্রদানে দেরি করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে একেবারে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে। এদিকে, গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব ডোমেস্টিক ইলেকশন মনিটরস (জিএনডিইএম) এর অন্যান্য সদস্য সংস্থাগুলোকেও পক্ষপাতসহ মানবাধিকার সংস্থা ও অন্য স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্কগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে অ্যাক্রেডিটেশন দেয়নি নির্বাচন কমিশন। বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেছে আনফ্রেল। সংগঠনটি বলেছে, নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও এর প্রতি মানুষের আস্থা নির্ধারণের অন্যতম সূচক হলো পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি। পর্যবেক্ষকদের তথ্য জানার সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করা, তাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেয়া ও গণতান্ত্রিক চর্চায় বাধা দেয়ার ঘটনায় স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমরা এ ধরনের কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
গত ৪ নভেম্বর আনফ্রেল আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য আবেদন করে। ২৬ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ আবেদন অনুমোদন করতে বিলম্ব করে। একই সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ভিসা প্রদান করতেও অস্বাভাবিক দেরি করে। নির্বাচনের মাত্র ৯ দিন আগে ২১শে ডিসেম্বর আনফ্রেলের ১৩ পর্যবেক্ষককে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়। অথচ আবেদন করেছিলেন ৩২ জন পর্যবেক্ষক। বিবৃতিতে আনফ্রেল বলেছে, আমরা দুঃখিত যে, এই পরিস্থিতি আমাদেরকে বাংলাদেশের নির্বাচনী অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে দিচ্ছে না। পর্যবেক্ষণ মিশন বাতিল করার পাশাপাশি আনফ্রেল উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, স্থানীয় অনেক পর্যবেক্ষকদেরও পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়নি। প্রকাশিত খবর অনুসারে, ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৩৪ হাজার ৮৩৮ জন পর্যবেক্ষক আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এদের মধ্যে মাত্রা ২৬ হাজার পর্যবেক্ষককে অনুমতি দেয়া হবে।

ডিক্লেয়ারেশন অব প্রিন্সিপাল অ্যান্ড কোড অব কনডাক্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইলেকশন অবজার্ভার্স, সংক্ষেপে ডিওপি এর অনুমোদিত পর্যবেক্ষক আনফ্রেল। ডিওপি অনুমোদিত পর্যবেক্ষক সংগঠনগুলো সব ধরনের নির্বাচনে নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতের জন্য কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে তাদেরই অর্থায়নে আনফ্রেলের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার কথা ছিল। কিন্তু যথাসময়ে ভিসা ও পর্যবেক্ষণের অনুমতি না মেলায় আনফ্রেল তাদের পর্যবেক্ষণ মিশন বাতিল করার কারণে ডিওপিভুক্ত অন্য কোনো সংগঠন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না। আনফ্রেল এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করলেও স্থানীয় পর্যবেক্ষক ও সুশীল সমাজকে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি সহিংসতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আনফ্রেল।



 

Show all comments
  • মনি ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:৫৬ এএম says : 0
    ত্রমন নিরবাচন চাই না যে নিরবাচনের কারনে সকাল বেলা ঘর থেকে বাহির হলে বিকেলে ঘরে পিরে আসবে কি না বলা মুশকিল
    Total Reply(0) Reply
  • নজরুল ইসলাম ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৪০ পিএম says : 0
    সিইসি ওদের সেখানো কাজ ওরা করছে ওদের তো সাহস নাই নিজের বিভেক দিয়া কাজ করার মত সাহস নাই।।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ