পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচনী প্রচারণায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। গতকাল রোববার দুপুরের দিকে তিনি নির্বাচনী গণসংযোগ করতে করতে মানিকনগর পুকুর পাড়ে এলে পিছন থেকে তার মিছিলের আক্রমণ চালানো হয়। এ সময় একজন ফটো সাংবাদিকসহ আফরোজা আব্বাসের প্রায় ৫০জন নেতাকর্মী আহত হন। তারপরও তিনি দমে যাননি। নেতাকর্মীদের সামনে থেকে হামলা প্রতিহত করে সেখান থেকে আবারও গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে মানিকনগর থেকে মিছিল নিয়ে শাহজাহানপুর তার নির্বাচনী ক্যাম্পে গিয়ে গণসংযোগের সমাপ্ত করেন আফরোজা আব্বাস।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। এরই মধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে জমজমাট হয়ে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। সময় বেশি নেই, তাই ভোটারদের মন জয়ে মাঠে ব্যস্ত প্রার্থীরা। এই প্রচারণায় পিছিয়ে নেই রাজধানীর অন্যতম ঢাকা-৯ আসনও। এখানে প্রতীক বরাদ্দের পর নৌকার একচেটিয়া প্রাচারণা থাকলেও এখন আর সেই চিত্র নেই। প্রতিদিনই নৌকা আর ধানের শীষের প্রচার এখন সমান তালে চলছে।
গতকাল রোববার সকালে প্রায় হাজার খানেক নেতাকর্মী নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস নিজ বাসা শাহজাহানপুর থেকে একটি মিছিল নিয়ে নির্বাচনী গণমসংযোগে বের হন। মিছিলটি খিলগাঁও হয়ে বাসাবো, বৌদ্ধমন্দির, মুগদা হয়ে মানিকনগরের পুকুর পাড়ে এলে হামলা শিকার হয়। সেখানে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে মিছিলের পেছন থেকে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় হায়দার আলী নামে একজন ফটো সাংবাদিক মারাত্মক আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে উপর্যুপরি লাথি মারতে থাকে। তারা লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় এই ফটো সাংবাদিককে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। সাংবাদিক ছাড়াও ৫০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- মহিলাদল নেত্রী আফরোজা আক্তার শোভা, নূরজাহান আক্তার ইভা, মনোয়ারা রহমান, জয়া, শারমিন আক্তার, মিজানুর রহমান, সোনিয়া আহমেদন। আহতরা সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন মহিলাদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
এর আগেও গত ১২ ও ১৮ ডিসেম্বর বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির ও মাদারটেক এলাকায় আফরোজা আব্বাসের ওপর তিন দফা হামলা চালানো হয়।
ঢাকা-৯ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস বলেন, আমি নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রম চালাতে গেলেই বারবার হামলার শিকার হচ্ছি। আমাকে টার্গেট করে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আহত হচ্ছেন, মারধর খাচ্ছেন, আবার পুলিশ তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করছে।
বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাস বলেন, এই নির্বাচনে কোনোভাবে অংশগ্রহণ করার মতো অবস্থা এখনো তৈরি হয়নি। রোববার থেকে সেনাবাহিনী নামলে যদি পরিবেশ তৈরি হয় নেতাকর্মীরা সেই আশায় আছে। কারণ আমরা মনে করছি একমাত্র সেনাবাহিনীই পারে এ দেশকে জাতিকে রক্ষা করতে এবং গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এবং সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে।
এ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান এমপি এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। তার প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সহধর্মিণী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-৯ আসনের প্রতিটি এলাকার রাস্তায় রাস্তায় নৌকার পোস্টার ঝুলছে। তবে কোথাও চোখে পড়েনি ধানের শীষের পোস্টার। এসব এলাকায় এতোদিন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নৌকার প্রার্থী থাকলেও বর্তমানে ধানের শীষের প্রর্থী অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে গণসংযোগ চালাচ্ছে। দুই প্রার্থীর নেতাকর্মীরাই করছেন গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় সভা। পাড়া-মহল্লা, অলি-গলিতে নৌকার মিছিল-মিটিং আর মাইকে বাজানো হচ্ছে নির্বাচনী গান।
বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজনৈতিক মামলা থাকায় গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপির বেশির ভাগ নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া। যারা এলাকায় রয়েছেন তারাও ভয়ে মাঠে নামতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাস বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে। গায়েবি মামলাসহ একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। হামলার পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। তাহলে কীভাবে কর্মীরা কাজ করবে?
হামলা হলেও মাঠ ছাড়বেন না বলে দৃঢ় প্রত্যয়ে আফরোজা আব্বাস বলেন, আমি ভয় পাই না। হামলা যতই হোক, আমি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাব। প্রতিদিনই প্রোগ্রাম করছি, আগামীতেও করব।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, টানা পাঁচবার এ আসন থেকে আমি নির্বাচন করছি। প্রতিটি মানুষ আমাকে চেনে। গত ১০ বছরে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। জনগণ এতে সন্তুষ্ট। তাই নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধা সবাই একসঙ্গে আমার প্রচারণায় মাঠে নেমেছে। আমাদের ক্যাম্পেইন ভালো হচ্ছে। আমার প্রত্যাশা, আগামী ৩০ ডিসেম্বর সবাই নৌকায় ভোট দেবে। আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকা-৯ আসনটি উপহার দিতে পারব।
তিনি আরও বলেন, আমার প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী বিএনপির আফরোজা আব্বাস। আমি তাকে সম্মান করি। আমাদের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থী বেশকয়েকটি অভিযোগ করেছেন । আমি পাল্টা কোনো অভিযোগ করব না। তবে আমি বলতে চাই, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। হামলা হয়ে থাকলে থানায় অভিযোগ করুন। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। সাবের হোসেন বলেন, আমি সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না, নির্বাচনে বেøইম গেম খেলতে চাই না। সহিংসতা হয়- প্রার্থীদের এমন কিছু করা ঠিক নয় বলেও জানান তিনি।
সিরাজুল ইসলাম কাজল নামের বিএনপির এক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের প্রকাশ্যে মাঠে নামতে দিচ্ছে না। তাই নির্বাচনী প্রচারের কৌশল পাল্টিয়েছি। আমরা এখন প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় নামছি। এ কারণে আগে থেকে কিছু জানানো হচ্ছে না। আগে জানালেই ঝামেলা হচ্ছে।
ঢাকা-৯ নির্বাচনী এই আসনটি রাজধানীর খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানাধীন নাসিরাবাদ, দক্ষিণগাঁও ও মান্ডা ইউনিয়ন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। যেখানে নারী-পুরুষ মিলে ভোটার রয়েছে প্রায় চার লাখ ২৫ হাজার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।