Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনগণ ফুঁসে উঠলে দায় ক্ষমতাসীনদের

ইসি ভবনে সাংবাদিকদের মাহমুদুর রাহমান মান্না

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জোর করে জেতার চেষ্টা করলে জনগণ যদি ফুঁসে ওঠে, সেই পরিণতির জন্য ক্ষমতাসীনরা দায়ী থাকবে। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সিইসিকে মান্না তার নিজ নির্বাচনী এলাকা বগুড়া-২ আসনে নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মামলা, নির্যাতনের বিষয়ে অবহিত করেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন পর্যন্ত বহু প্রার্থী গ্রেপ্তার হচ্ছে এবং নির্বাচনে প্রার্থীতা নিয়েও যে নাটক করা হচ্ছে। সমগ্র বিশ্ব আজ উদ্বিগ্ন। আজকে আমি পত্রিকায় দেখলাম জাতিসংঘ পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটা একটা নারকীয় পরিবেশ, এটা কোনো নির্বাচনী পরিবেশ নয়, এই ভাবে নির্বাচন যদি হয়! তাহলে এক পাক্ষিকভাবে জোড় করে জিতে নেওয়ার চেষ্টা করবে। তখন জনগণ যদি ফুঁসে ওঠে, সেই পরিণতির জন্য এরাই দায়ী থাকবে, যারা এখন ক্ষমতায় আছে।
তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে খবর পাচ্ছি- একেবারে উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত। সব জায়গাতেই মানুষের মধ্যে একটা স্বত:স্ফূর্ততা, এক ধরণের ঢল এবং আমি বলবো মানুষের মধ্যে একটা দৃঢ়তা। তারা এবার ভোট দিতে চায় এবং মানুষ যাতে ভোট দিতে না পারে, তার জন্য সব রকম সন্ত্রাস করে তারা ভোটটা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।
মান্না বলেন, আমরা আগে বলতাম নির্বাচনীযুদ্ধ। এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচনের নামে যুদ্ধই হচ্ছে। সরকারপক্ষ তাই করছে। আমার এলাকায় গভীর রাতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে নির্বাচনী এজেন্ট দলীয় নেতাকর্মীদের। সারাদেশে একই অবস্থা বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশনকে কিছু বলেই কাজ হয় না। ঠুটো জগন্নাথের মতো শুধু কথা শোনে আর বলে দেখছি। আজও যে অভিযোগ নিয়ে এসেছি। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন ডিসিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর আগেও অনেক অভিযোগ করা হয়েছে। ফলাফল পাইনি। কোনো অভিযোগের ব্যাপারে অ্যাকশন আমরা দেখিনি।
মান্না বলেন, আমি গত ৫/৬ দিন ধরে আমার নির্বাচনী এলাকায় বিভীষিকার রাজত্ব দেখছি। এর আগে এমন দেখিনি। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে এসব দেখছি। আমাকে হাইওয়েতে প্রচার করতে দেয়া হয়নি বিরোধীপক্ষের কারণে। পুলিশকে আগে জানালেও আমাকেই সরে যেতে অনুরোধ করে পুলিশ। এরপর থেকে যেখানেই যাচ্ছি সেখানে হয়রানি করা হচ্ছে, পোস্টার ছেড়া হচ্ছে, কর্মীদের মারধর, অফিসে হামলা করা হচ্ছে। নিরঙ্কুশ সমর্থন দেখে প্রতিপক্ষ এসব করছে। যেভাবে ককটেল ফাটিয়ে মামলা দিচ্ছে। আমার নির্বাচনী কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে ধরে ধরে মামলা দেয়া হচ্ছে। কেউ জামিন পাচ্ছে না। পুলিশ এদের খুঁজছে। গত রাত সাড়ে ৩টায় ৪৪ জনের নামে মামলা নেয়া হয়েছে। বাড়ির সামনে থেকে গ্রেফতার, ফসলিজমি থেকে গ্রেফতার, নির্বাচনী অফিস থেকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে যখন গেলাম সেখানে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে আমাদের আটকানোর চেষ্টা হলো, অনুমতি দেয়া হলেও আমাদের মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো। তবুও আমরা ট্রাকে দাঁড়িয়ে এক হাত মাইকেই সমাবেশ করেছি। মানুষের ঢল নেমেছিল সেখানে।
চিঠিতে মাহমুদুর রহমান মান্না গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি, নতুন মামলা না দেয়া ও গ্রেফতার বন্ধ, বিনা বাধায় প্রচার ও পোস্টার ছেড়া বন্ধ নিশ্চিত করা এবং পুলিশ-রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনসহ পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুল ইসলাম, প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহে আলম, শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রমুখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ