Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে এক দলীয় প্রচারণা : এলাকা ছাড়া প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকায়ই বিরোধী দলীয় নির্বাচনী প্রচারণাসহ সব ধরনের কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে গেছে। মহাজোট ও তাদের আনুক‚ল্য প্রাপ্ত প্রার্থীদের সীমিত কিছু প্রচারণায় নির্বাচনকে অবাধ করার মহড়া অব্যাহত রয়েছে। তবে গতকালও নগরী দাপিয়ে নৌকা প্রতিকের প্রচারণা অব্যাহত ছিল। নৌকা প্রতীকের সমর্থনে রাতে বরিশাল মহানগরীতে বিশাল রিক্সা মিছিলও বের করা হয়। মহাজোট প্রার্থী জাহিদ ফারুখ শামিম মহানগরীসহ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন। গত দুদিন বরিশাল বিভাগীয় সদর আসনটিতে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে সব প্রচারণা বন্ধ রয়েছে। বরিশাল মহানগরীসহ সদর উপজেলার নির্বাচনী এলাকা জুড়ে ধানের শীষের পোস্টার পর্যন্ত এখন আর চোখে পড়ছে না। গত দুদিন বরিশাল মহানগরীতে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে কোন মাইকিং পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। ফলে গোটা নির্বাচনী এলাকার দখল নিয়েছে মহাজোটের প্রচারণা। তবে ইসলামী আন্দোলন ও মহাজোটের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির মর্তুজা আবেদিনের কিছু প্রচারণা লক্ষ্য করার গেছে। এবারে ভোটের শুরু থেকেই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’কে কৌশলগত ছাড় দেয়া হচ্ছে।
একই পরিস্থিতি পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠি জেলাতেও। এ অবস্থাতেই গতকাল বরিশাল বিভাগীয় সদর আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তার প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। এমনকি একের পর এক নেতা-কর্মী গ্রেফতারের ফলে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় মাঠে কোন কর্মীই থাকতে পারছেনা বলেও জানান তিনি। গণগ্রেফতারের আতংকে বিরোধী দলীয় কর্মীরা এখন এলাকা ছাড়া। এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোন ফল হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরওয়ার। গতকাল দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তিনি এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তার সমর্থন করায় স্থানীয় দৈনিক বিপ্লবী বাংলাদেশে পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদকে বরিশাল ছাড়া করেছে পুলিশ।
সরওয়ার বলেন, গত শুক্রবার সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন বাজারে ধানের শীষের উঠান বৈঠকের মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে পুলিশ প্রহরায় সন্ত্রাসীরা। এমনকি ঐ সভায় তাকে যোগ দিতে পর্যন্ত দেয়া হয়নি। নেহালগঞ্জ ফেরি আটকে রাখা হয়েছে। সব নৌকা ও ট্রলার পর্যন্ত আটকে রাখে সন্ত্রাসীরা। ফলে দু’ঘন্টা অপেক্ষা করেও তিনি চন্দ্রমোহনের উঠান বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করার পরেও কোন ফল হয়নি বলে জানান সরওয়ার। এ পর্যন্ত শুধুমাত্র বরিশাল সদর আসন এলাকার প্রায় ৭০ জন নেতাকর্মীকে নানা ধরনের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়ে সরওয়ার অভিযোগ করেন, মহাজোটের লোকেরা নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে মামলা দিচ্ছে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে। তিনি প্রশ্ন করেন যেখানে বিএনপি’র কর্মীরা গ্রেফতারের ভয়ে এলাকা ছাড়া, সেখানে তারা সরকারি দলের অফিস ভাঙবে কিভাবে ?
সংবাদ সম্মেলনে সরওয়ার বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কত ভাল ভাল কথা বলছেন, কিন্তু তিনি কি মাঠের খবর রাখেন? সরওয়ার বলেন, গত ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি নির্বাচনে যেসব সরকারি কর্মকর্তারা ভোট ডাকাতিতে সহায়তা করছে, তারাই এবার জাতীয় নির্বাচন পরিচলনা করছে। তাদের দিয়ে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। সরওয়ার অবিলম্বে মাঠ পর্যায়ে নেতা কর্মীদের গ্রেফতারসহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে সব প্রার্থীর জন্য প্রচারের সমান সুযোগের নিশ্চয়তাও দাবি করেন। তিনি বলেন, আমরা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে রাজী ছিলাম না। এ নিয়ে অনেক সমালোচনাও শুনেছি গত পাঁচ বছরে। যারা টিভির টকশোতে এসব কথা বলেছেন, তাদেরকে সরেজমিনে মাঠের খোঁজ খবর নেয়ারও আহবান জানান তিনি। নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে কিনা জানাতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কর্মীরাই বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না। সরওয়ার প্রশ্ন করেন দেশ নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে আছে। তাহলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারের ভয় কিসের? তিনি সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তনেরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন সাংবাদিকেদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনসমুহের প্রায় তিনশ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি সবই এলাকা ছাড়া বলেও জানান তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ