Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে প্রচারযুদ্ধে উত্তেজনা

হানাহানির বিরুদ্ধে জনমত প্রবল ধরপাকড়ে সতর্ক বিএনপি জোট

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভোটের প্রচারযুদ্ধে উত্তেজনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই বিএনপি জোটের প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, মিছিলে মহাজোটের সশস্ত্র হামলা, বাধা-বিপত্তি ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ আসছে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা থেকে। অন্যদিকে গায়েবি মামলা, হুলিয়ার নামে পুলিশের হয়রানি, ধরপাকড়, তল্লাশি ও গোয়েন্দা নজরদারির কারণে ভয়ভীতি ও তীব্র চাপের মধ্যে আছে বিএনপি জোটের মাঠের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা। ধরপাকড়ের ভীতিকর পরিবেশেও থেমে নেই ধানের শীষের প্রচার-প্রচারণা। সর্বত্র গণসংযোগে সতর্ক ও কৌশলী তৃণমূলের কর্মীরা। ভোটারদের বাড়িঘরে চলছে ধানের শীষের প্রচারণা ও গণসংযোগ। বড়সড় সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে খুব কম এলাকায়।
গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামের অর্ধেকেরও বেশি নির্বাচনী এলাকায় ধানের শীষ, ছাতা ও লাঙলের প্রার্থীদের সভা, গণসংযোগ ও প্রচারণা কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মী-ক্যাডারদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক নেতা-কর্মী। প্রথম দিকে ভোটের প্রচারণায় কিছুটা উৎসবের আমেজ, এরপর নির্বাচনী উত্তাপ এখন চরম উত্তেজনার দিকে গড়িয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ রাজনীতি সচেতন এবং শান্তিপ্রিয়। তারা চান না ভোটের ময়দানে সংঘাত, রক্তপাত। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ইতোমধ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের প্রতি আহŸান জানিয়েছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেই যাতে ভোটের প্রচার-প্রচারণা তারা চালিয়ে যান। হানাহানি, সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত দিন দিন প্রবল হচ্ছে।
মহানগরী ও জেলা চট্টগ্রামের অধিকাংশ স্থানে এবং পার্বত্য খাগড়াছড়ি নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি জোটের প্রচার ও গণসংযোগের পরক্ষণেই পুলিশ মাঠের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। থানায় তুলে নিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে নিত্যনতুন ও পুরনো হরেক মামলায়। ধানের শীষের প্রার্থীদের আত্মীয়-পরিজনরাও নানা উপায়ে পুলিশের হয়রানির শিকার। প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারির কারণে তাদের ভোটের কার্যক্রম এমনকি স্বাভাবিক জীবনযাপনও বিঘিœত হচ্ছে।
চট্টগ্রামের প্রায় প্রতিটি আসনেই ধানের শীষ, ছাতা ও লাঙল প্রতীকের প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচনী ক্যাম্প বসাতে গিয়ে সরকারি দলের কর্মী-ক্যাডারদের হামলার শিকার হচ্ছেন ধানের শীষের নেতা-কর্মীরা। পুলিশকে তাৎক্ষণিক জানিয়েও কোনো প্রতিকার মিলছে না। বরং উল্টো ঘটনাগুলোতে যারা ভিকটিম তাদের খুঁজে খুঁজে পুলিশ গ্রেফতার ও হয়রানি করছে। চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার সর্বত্র ছেয়ে গেছে নৌকার পোস্টার, ব্যানারে। অথচ ধানের শীষের ব্যানার, পোস্টার চোখে পড়ে কদাচিৎ।
পুলিশি হয়রানি ধরপাকড়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কিংবা অঙ্গ সংগঠনের কর্মী-ক্যাডারদের হামলা, প্রচার-গণসংযোগে বাধাদানের কারণে অসমতল ভোটের মাঠে লড়াইয়ে রয়েছে বিএনপি জোট। তা সত্তে¡ও থেমে নেই ভোটের প্রচারণা ও গণসংযোগ কার্যক্রম। প্রতিনিয়তই ভয়কে জয় করে দ্বিগুণ চ্যালেঞ্জে এগিয়ে চলেছেন ধানের শীষের প্রচারণা। মাঠের কর্মীরা বলছেন, বিভিন্নমুখী বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করা এটি সত্যিই এক চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা এই চ্যালেঞ্জে অনড়। কেননা আওয়ামী লীগের গত দশ বছরের চরম অত্যাচার-নিপীড়ন, হামলা-মামলা, হুলিয়ার শিকার হয়ে আজ আমাদের হারানোর আর কিছু বাকি নেই। এবার ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থান নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সময়।
তৃণমূল কর্মীরা আরও জানান, দশ বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসন ভোটারদের কাছে গিয়ে তুলে ধরছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি। জনগণ গণতন্ত্র ফিরে পেতে উদগ্রিব। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত হলে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট বিজয় অর্জন করবে এমনটি আশাবাদ তৃণমূলের। সেই সাথে তাদের প্রত্যাশা আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর সোমবার থেকে সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। ভোটারদের মাঝে এক ধরনের চাপা ভয়ভীতি কেটে গিয়ে স্বস্তি ফিরে আসবে। ভোটারদের স্বতঃস্ফ‚র্ত এবং ব্যাপকহারে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটদানের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হলেই বিএনপি জোটের পক্ষেই ভোটাররা রায় দেবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ