পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভোট রাজনীতির গরম হাওয়া বইছে সিলেটে। দল সমর্থিত প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা ভোটের নানা অংক কষলেও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যেকোন রাজনীতিক দলের সক্রিয় বা নিরব সমর্থকদের হাতে গুণে সংখ্যা বলতে পারেন সাধারণ ভোটাররা। কিন্তু ভোটারদের অন্তরের ভাষাই ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় ভোট রাজনীতির মাঠে। এই মুহূর্তে সিলেট বিভাগে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচনী যুদ্ধে লড়ছেন মহাজোট-ঐক্যফ্রন্টে। এদের মধ্যে সিলেট১-(সদর-সিটি করপোরেশন) আসনে আমলা হেভিওয়েট খ্যাত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, অপরজন মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) রাজনীতিক হেভিওয়েট খ্যাত সুলতান মুহাম্মদ মনসুর। বর্ণাঢ্য চাকরি জীবনের অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে ভোট রাজনীতির মধ্যে দিয়ে আ.লীগের অলংকার হয়ে তিনি প্রার্থী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে। মাঠ রাজনীতির কঠিন পথ-ঘাট মাড়াতে হয়নি তার। কর্মী-সমর্থক ও দলী রাজনীতিকদের বুঝা-পাড়ার সুযোগও হয়নি তার। সেকারণে স্যার সম্বোধনে তাকে নিয়ে ভোটের মাঠে ব্যস্ত রয়েছেন নেতাকর্মীরা। এই আসনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক মহানগর আ.লীগ সেক্রেটারী, এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা, মহানগর আ.লীগের সভাপতি, সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। তার ভাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের পছন্দে ড. মোমেনকে দলের নীতি নির্ধারক প্রার্থী হিসেবে সিলেট-১ আসনে চূড়ান্ত করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। দলীয় রাজনীতির সাথে খাপ খাইয়ে চলার চেয়ে নিজস্ব বলয় কেন্দ্রিক আস্থায় ড. মোমেন সক্রিয় রয়েছেন ভোটের মাঠে। তার পিছু নিয়ে দৌঁড়াচ্ছেন স্থানীয় রাজনীতিক নেতাকর্মীরা নৌকার স্বার্থে। নেতাদের জবাবদিহিতার মানসিকতা তাকে কর্মী সমর্থকের কাছে, সেই বাস্তবতার অনুপস্থিতি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে ভোট রাজনীতির মাঠে। বিদ্যমান একটা জড়তার মধ্যে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। নেতাকর্মীরা মনে করছে, মাঠে নৌকার পক্ষে কাজ করার চেয়ে মোমেনের আশেপাশে ঘুরে তার গুড বুকে থাকাটাই বেটার। তারা এও মনে করছে, মোমেনের নৌকা, বিজয়ী হবেই। এনিয়ে প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসীরা তারা।
সক্রিয় ¯্রােতের সাথে মিলিয়ে চলে নৌকার প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীরা নিজদের হাই-লাইটস করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের তৎপরতা তুলে ধরছেন মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। লাইক, পোস্ট, শেয়ার বাড়িয়ে ভাইরাল করেই জানান দিচ্ছেন তারা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন ড. মোমেনের। ভোট রাজনীতির মাঠে, বাধাহীন, ডেম কেয়ার ভাবে চলছেন নৌকার কর্মী-সমর্থকরা। উত্তেজনা-উৎসাহ- আগাম প্রস্তুতি এখন শুধু বিজয় বরণের। দলীয় নেতাকর্মীদের মনোভাব এমনতর হলেও এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন প্রচন্ড ব্যস্ত। ভোট রাজনীতির অতীত ধারায় ভোট প্রত্যাশা করে যাচ্ছেন, ভোটারদের নিকট। দলের নেতাকর্মীরাও ঘাম ঝরাচ্ছে ধানের বিজয় লক্ষ্যে। কিন্তু ধানের বিজয় সম্ভাবনায় সাধারণ ভোটারা যে বিরাট ফ্যাক্টর, সেই বিষয়টিও চিন্তায় রেখে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন তারা। তুলে ধরছে নিজদের উপর সরকারের অত্যাচার, সহ হামলা মামলার করুন কাহিনী। হুজুগে আর আবেগের সমিলে সচেতন সাধারণ ভোটারও তাদের বক্তব্য শুনে ব্যথিত হচ্ছেন।
এদিকে, মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ নিয়ে ভোট রাজনীতিতে তুমুল ব্যস্ত ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী সুলতান মুহাম্মদ মনসুর। তার সাথে লড়ছেন নৌকা প্রতীকে বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মহাজোটের প্রার্থী এম এম শাহীন। ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এখন ধানের শীষের শাহিন উঠেছেন নৌকায়, নৌকার সুলতান মনসুর হাতে নিয়েছে ধানের শীষ। অথচ ১৯৯৬ সালে মৌলভীবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন সুলতান মুহাম্মদ মনসুর। চলমান ভোট রাজনীতি কঠিন হয়ে উঠছে এই আসনে। প্রার্থীদের দলীয় ওদল-বদলে তাদের অনুসারীরাও চরম বিপাকে। মাঠ রাজনীতি পর্যালোচনায়, ধানের শীষ ও সুলতান মনসুরের ব্যক্তি ইমেজ অনেক উচুতে নৌকা ও শাহীনের তুলনায়। তার সাথে কাজ করছেন সাবেক এমপি ও জনপ্রিয় মুখ নবাব আলী আব্বাস খান, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা। একাট্টা সুর বইছে সুলতানের বিজয় নিশ্চিতে। তবে রাজনীতির লীলাখেলার প্রভাব ক্রীয়াশীল করে দেয়া হচ্ছে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে, এমন গুঞ্জণ ভেসে বেড়াচ্ছে কুলাউড়ার ভোট রাজনীতির বাতাসে। বিষয়টি আরো দৃঢ়তা পেয়েছে সিলেটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এম এম শাহীন মাজার জিয়ারতের সুযোগ ঘটনায়। মাঠ রাজনীতিতে ধানের শীষের প্রার্থী সুলতান মনসুর এখন সর্বোচ্চ টার্গেটে রয়েছেন বলে ধারনা করছেন সচেতন মহল। তার কর্মী-সমর্থকদের উপর মামলার ঘটনাও ঘটছে। ঘর-বাড়ি ছাড়া ধানের শীষের নেতাকর্মীরা। দলের নেতাকর্মীদের চরম চাপে ফেলে অসহায় করে দেয়ার পরিকল্পনা চলছে সুলতান মনসুরকে। হয়রানি ও চাপের নানামুখি ঘটনায়, মানুষের আবেগ-দরদ বাড়ছে সুলতান মনসুরের প্রতি। একাধিক স্থানীয় রাজনীতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনী নীল নকশায় মোমেনের জয়, সুলতান মনসুরের পরাজয় দেখতে পারেন জনগণ। স্থানীয় সাংবাদিক শাকের আহমদ বলেন, চরমভাবে কোনঠাসা করে দেয়া হচ্ছে ধানের শীষে নেতাকর্মীদের। ভোটের মাঠ থেকে দূরে রাখার সব প্রচেষ্টা চলছে, এ নিয়ে সমাজিক উত্তেজনা চরমে। পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল আলম বলেন, আ.লীগ নেতাকর্মীরা মনে করছে, তাদের বিজয় হবেই। ভোটে না হয়, জোরে-ই তারা বিজয় ঘরে তুলবে। সেকারণে বেপরোয়া তারা। এখন তারা অপেক্ষা করছে কিভাবে ফরমায়েসী নীল নকশা বাস্তবায়ন করবে। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ভোটে যেকোন নীল নকশা মোকাবেলায় তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।