Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে একতরফা নির্বাচন করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৪ পিএম

পুলিশ প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থেই নির্বাচন একতরফা করতে সকল শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মরণকামড় দিচ্ছে। ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের চালুনি দিয়ে ছেঁকে তুলছে। সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয়া হচ্ছে তাদেরকে ধরার জন্য। নেতাকর্মীদেরকে না পেয়ে মহিলা সদস্যসহ পরিবারের লোকজনদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং কোথাও কোথাও বিএনপি নেতাকর্মীকে না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শনিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি-আজ থেকে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশনের মাত্রা বৃদ্ধি করা হবে। এক্ষেত্রে বিজিবি ও র‌্যাবকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লিস্ট সরবরাহ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সারাদেশের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ড থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা স্থানীয় থানায় ইতোমধ্যে জমা দেয়া হয়েছে, সেই তালিকাগুলোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন বিজিবি ও র‌্যাবের নিকট সরবরাহ করছে। সরবরাহকৃত তালিকা ধরে ধরে আজ রাত থেকেই নাকি নেতাকর্মীদের আটক করা হবে।
ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে যাদেরকে মনোনীত করা হবে তাদের নির্বাচনের দু’একদিন আগেই গ্রেফতার করা শুরু হবে।
সিল মারার জন্য পুলিশ সাক্ষাৎকার নিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ডিএমপি থানার ওসিরা সীল মারার জন্য প্রাপ্ত তালিকাভুক্ত আওয়ামী কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন। অপেক্ষাকৃত যুবক বয়সের কর্মীরা সীল মারার দায়িত্বে থাকবেন। ৫ জন করে কেন্দ্র ভিত্তিক সীল মারা গ্রুপ ঠিক করা হয়েছে। শুধুমাত্র দলনেতার কাছে মোবাইল থাকবে এবং ২৯ তারিখ রাতে নির্দিষ্ট নাম্বার ব্যতীত অন্য কোন কল রিসিভ করবে না। থানা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই-এর নেতৃত্বে থাকবে এবং রাতে ৩০% ভোট সীল মারা হলে তারা কেন্দ্র থেকে চলে যাবে। রাত ও দিনের বেলা কেন্দ্রের বাহিরে পাহারা দেয়ার জন্য কর্মীদের দ্বারা পৃথক টিম গঠন করে দিয়েছে পুলিশ। সীল মারার সময় বাহিরে সর্তক অবস্থায় থাকবে বিভিন্ন বাহিনী। দিনের বেলায় আওয়ামী অন্য কর্মীরা লাইনে থাকবে, বার বার বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আবার ঠিক করা হবে এবং ভোট প্রদানের গতি অনেক মন্থর করা হবে। পুলিশের মোবাইল টিম কর্তৃক বিরোধী দলের সমর্থিত এলাকার লোকদের আসার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করবে। ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা অধীনস্থ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে বলেন, যারা সরকারকে বিজয়ী করতে চান, তারা হাত তুলুন-এভাবে প্রতিশ্রুতি আদায় করা হচ্ছে অধ:স্তন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
রিজভী বলেন, সজিব ওয়াজেদ জয় যে বলেছিল আওয়ামী লীগ ২২০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করবে, সেটার বাস্তবায়নের জন্যেই মাস্টারপ্ল্যান করে বিএনপি'র প্রার্থিতা বাতিল ও স্বয়ং এমপি প্রার্থীদের কে গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং জামায়াতের নেতা বলে আরও ২২/২৩ টি আসনের প্রার্থিতা বাতিল করার পরিকল্পনা চলছে। ইসি কর্তৃক তালিকা চূড়ান্ত করার পর প্রার্থিতা বাতিল চরম প্রতারণামূলক। এর দায় ইসিকেই নিতে হবে। মোট কথা ২৭/২৮ তারিখের মধ্যে এ পদ্ধতিতে বেশ কিছু আসনের জয় তারা নিশ্চিত করতে চায়।
অথচ নৌকা মার্কার প্রার্থী চিত্রনায়ক ফারুক ঋণখেলাপী হয়েও প্রার্থী হয়েছেন, নির্বাচন কমিশন ও আদালত এক্ষেত্রে নির্বিকার। ফারুক নিজেই বলেছেন-তার ৩৬ কোটি টাকার লোন রিসিডিউলিং আবেদন কেন গ্রহণ করা হয়নি তা তিনি জানেন না, তাহলে তিনি বৈধ প্রার্থী হলেন কিভাবে। নৌকা মার্কার আরেক প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফী সরকারী বেতনভুক্ত, অথচ তিনিও বৈধ প্রার্থী। অসংখ্য দন্ডিত ও ঋণখেলাপীরা নৌকা মার্কার প্রার্থী। আসলে ক্ষমতা হাতে থাকলে পাহাড়েও নৌকা ভাসানো যায়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রার্থী চূড়ান্ত করে দেয়ার পর এখন আদালতকে চাপ দিয়ে প্রার্থীতা বাতিলের দায় ইসি’র উপরই পড়ে। মার্কা পাওয়ার পর নির্বাচনী মাঠ থেকে প্রার্থীদের সরিয়ে দেয়া সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। বাংলাদেশে এধরণের ঘটনা কখনো ঘটেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ